Unveiling the Enchanting Journey of a 14-Year-Old & Discover Life's Secrets Through 'My Slice of Life'. Grab it NOW!!
Unveiling the Enchanting Journey of a 14-Year-Old & Discover Life's Secrets Through 'My Slice of Life'. Grab it NOW!!

নন্দা মুখার্জী

Abstract

3  

নন্দা মুখার্জী

Abstract

পাপ চাপা থাকেনা

পাপ চাপা থাকেনা

9 mins
596


      

রাতের শেষ ট্রেনটা ধরে অনল যখন স্টেশনে পৌঁছালো তখন তার শরীরে বিন্দুমাত্র হাঁটার আর ক্ষমতা ছিলোনা । সারাদিনের পরিশ্রম ,অনাহার -কোনোরকমে নিজেকে টেনে নিয়ে যেয়ে একটা বেঞ্চির উপরে বসে । সেখানে আরও এক ভদ্রলোক আগে থাকতেই বসে ছিলেন । ক্লান্তিতে অনলের চোখ দু'টি তখন ঘুমে জড়িয়ে আসছে । হঠাৎ পাশের ভদ্রলোকের দিকে নজর যেতেই দেখেন ভদ্রলোক ঠকঠক করে কাঁপছেন । সে এগিয়ে যেয়ে ভদ্রলোকের গায়ে হাত দিয়ে বলে ,"আপনি এত কাপছেন কেন ?" কিন্তু গায়ে হাত দিয়েই বুঝতে পারে ভদ্রলোকের প্রচন্ড জ্বর । ভদ্রলোক করকমে তাকে বলেন ,"বাবা একটা ট্যাক্সি ডেকে দেবে ? আমার বাড়ি পলাশপুর গ্রামে । মিটারে ট্যাক্সি যাবেনা এত রাতে ,ভাড়া যা চাইবে তুমি রাজী হয়ে যাবে । পারবে বাবা ডেকে দিতে?"                     

 ট্যাক্সি নিয়ে এসে অনল ভদ্রলোককে তুলে দিয়ে নিজেও উঠে বসলো । ভদ্রলোক তার কাছে জানতে চাইলেন এত রাতে বাড়িতে না ফিরলে বাড়ির লোক তো তারজন্য চিন্তা করবে ! অনল জানালো তার বাড়ি বলে কিছু নেই , একটা দোকানের ভিতর সে ঘুমায় - বলা ভালো দোকানদারের দোকানে পাহারাদারের জন্য আলাদা করে কোনো টাকা খরচ করতে হয়না ।    

দশ বছর পরের ঘটনা ;----               

ওই রাতের পর অনলের জীবনটা পাল্টে গেলো । এখন তার বিশাল ব্যবসা ,বড় বাড়ি ,তিনটে গাড়ি । যেন 'আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ' । যে অনল দু'বেলা দু'মুঠো অন্ন জোঠাতে হিমশিম খেত তার এখন বাড়িতে দু'তিনজন কাজের লোক । বিয়েও করেছে নিজে পছন্দ করে একটি গরীবের মেয়েকে । শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে নিজের বাড়িতেই তুলে এনেছে ; কারণ তারা এতটাই গরীব এবং তাছাড়া তার একার পক্ষে লোকজন রেখেও ব্যবসার সবদিক সে নজর রাখতে পারছিলোনা । এখন শালা ,শ্বশুর ,শ্বাশুড়ি সকলেই তার ব্যবসা দেখে । কিন্তু ঠাঁই হয়নি তার বৃদ্ধা বিধবা মা ও ভায়ের ।            দারিদ্রের সাথে লড়াই করতে করতে অনল যখন পর্যুদস্ত ; তখনই সে সীদ্ধান্ত নেয় গ্রাম ছেড়ে শহর কোলকাতায় আসার । বাড়িতে মাকে ও ভাইকে রেখে কলকাতায় আসে কাজের সন্ধানে । কিন্তু কোথায় কাজ ? কখনো স্টেশনে ছোট ছোট চায়ের দোকানে কাপ ,প্লেট ধুয়ে দেয় আবার কখনোবা কুলি হয়ে অন্যের ভারী জিনিস গাড়িতে তুলে দিয়ে সামান্য পয়সায় কিছু খেয়ে বেঁচে থাকা । বেশ কিছুদিন এইভাবে চলতে চলতে পি ডিভিশনে মাধ্যমিক পাশ করা অনল একটা বেসরকারি স্কুলে দাড়োয়ানের কাজ পায় সামান্য মাইনের বিনিময়ে । কিন্তু অনল ছিলো খুব সৎ ও পরিশ্রমী ।              সেদিন রাতে ওই ভদ্রলোক অথাৎ রবীন পালকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিতে যেয়ে অনল দেখে -তার বাসস্থানকে বাড়ি না বলে গ্রামের ভিতর ওটাকে রাজপ্রাসাদই বলা ভালো । রবীনবাবুর স্ত্রী তাকে সেই রাতে খেতে দিয়ে তার কাছ থেকে সেই রাতের সমস্ত ঘটনা জেনে নেন । রবীনবাবুর বাড়িতেই একটি প্রকান্ড ঘরের মধ্যে সোনার গহনা তৈরী করার একটি কারখানা ছিলো । নেই নেই করেও পাঁচ থেকে সাতজন কর্মচারী কাজ করতেন ঠিকই কিন্তু শেষ তুলির টানটা তিনিই দিতেন । কলকাতার অধিকাংশ বড় বড় সোনার দোকানের অর্ডার তিনি পেতেন তার নিখুঁত কাজের জন্য । যা ছিলো খরিদ্দারদের প্রচন্ড চাহিদা । অনেকবারই ঐসব দোকানের মালিকেরা তাকে মোটা মাইনে দিয়ে রাখতে চেয়েছেন । কিন্তু তিনি কোনোদিনও রাজী হননি । সেদিন তিনি অর্ডারের গহনা দিয়ে আসার সময় হঠাৎই অসুস্থ্য হয়ে পড়েন ।          অনলের কথা ,বার্তা ,ব্যবহার তার খুবই ভালো লাগে । হাতে ধরে তিনি অনলকে সুক্ষ সুক্ষ গহনা তৈরির কাজে পারদর্শী করে তোলেন । বুদ্ধিমান অনল অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই বেশ ভালোই কাজ শিখে নেয় । রবীনবাবুর সাথে সে কলকাতার দোকানগুলোতেও যাতায়াত শুরু করে । ওই সব দোকানেও রবীনবাবুর অনলের প্রশংসার কারণে খুব বিশ্বস্ত হয়ে ওঠে । বৃদ্ধ রবীনবাবু ও তার স্ত্রী আশাদেবী অনলকে কাছে পেয়ে ছেলে কাছে না থাকার যন্ত্রনাটা কিছুটা হলেও ভুলে যান । তাদের একমাত্র ছেলে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার । সেই যে দশ বছর আগে লন্ডন পাড়ি দেয় ; আর কোনো খবর সে মা ,বাবার রাখেনি । প্রথম প্রথম কিছুদিন ফোনে কথা বললেও এখন আর কোনো যোগাযোগ নেই । ফোন নম্বর ও তার পাল্টে গেছে । অসহায়ের মতো বৃদ্ধ ,বৃদ্ধা দু'জনেই এটাকে তাদের দুর্ভাগ্য বলে মেনে নিয়েছেন ।             বছর সাতেক আগে রবীনবাবু একদিন অনলকে সাথে নিয়েই কলকাতা আসেন অর্ডার দেওয়া গহনাগুলি তৈরী করে দোকানগুলিতে দিতে । সেগুলি দিয়ে তার প্রাপ্য টাকা ও নুতন গহনার জন্য বেশ কিছু সোনা যা তাকে ওই দোকানগুলি থেকেই দেওয়া হয়ে থাকে ; এগুলি গুছিয়ে ছোট একটি ব্যাগ ভর্তি করে তিনি পুত্রসম অনলের হাতে দিয়ে বাড়ির উর্দেশ্যে রওনা দেন | নির্দিষ্ট স্টেশনে এসে যখন তিনি নামতে যাবেন অনল উঠে রবীনবাবুর একটা হাত ধরেন । এটা সে প্রথম থেকেই করে যেহেতু তিনি বয়স্ক মানুষ । কিন্তু সেদিন যে কি হয় অনলের যার উত্তর সে আজও পায়নি । তার ভিতরের পশুটা হঠাৎ করেই যেন মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে । এক ঝটকায় সেই পশুটা রবীনবাবুর ধরে থাকা হাতটি অনলের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেয় । অনল একটা ধাক্কা মারে রবীনবাবুর পিছনে । বৃদ্ধ রবীনবাবু উপুড় হয়ে পরে যান । নিথর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে সে । জনতার কোলাহলে সম্বিৎ ফিরে পায় অনল । সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে হাসপাতাল ছোটে । কিন্তু রবীনবাবু আর জ্ঞান ফিরে পান না । সকলের অগোচরেই থেকে যায় তার মৃত্যু রহস্য ।এই শোক কাটিয়ে উঠতে পারেন না আশাদেবী । ছ'মাসের মাথায় তিনিও মারা যান । একচ্ছত্র সাম্রাজ্যের রাজা হয়ে যায় অনল । কিন্তু শুধুমাত্র লোভের কারনে এই খুন হলেও সে নিজেকে নিজে ক্ষমা করতে পারেনা । যদিও কেবলমাত্র নিজেকে দোষী ভাবার অবস্থান তার অন্তরেই ।        রবীনবাবুদের আর কোনো আত্মীয়স্বজন না থাকায় নিজ নামে সম্মত্তি কোরতে অনলকে কোনোই বেগ পেতে হয়না । মালিকানাস্বর্ত পেয়েই সে গ্রামের ওই রাজপ্রাসাদসম বাড়ি আসবাবপত্র সমেত বিক্রি করে দিয়ে কলকাতার একটু নিরিবিলি এলাকায় প্রচুর জমি সমেত পুরানো আমলের এক বাড়ি কিনে উঠে আসে। আর রবীনবাবুর নিজ হাতে করে শিখিয়ে দেওয়া ব্যবসাটি নিজের ব্যবসা হিসাবে দাঁড় করায় ।       

কোনো একদিন গ্রামের পরিচিত এক ব্যক্তির সাথে দেখা হয়ে যায় হঠাৎ করেই রাস্তাতে । বলাবাহুল্য কলকাতা আসার পরে সে তার মা ,ভায়ের সাথে কোনো যোগাযোগ রাখেনি। ওই ভদ্রলোক গ্রামে ফিরে যখন তার মা, ভায়ের কাছে তার বিশাল গাড়ি চড়ে ঘুরে বেড়ানোর গল্প করেন তখন তারাও অবাক হয়ে যায়। অবাক হয়ে যায় এই ভেবে -অনল যে এত টাকা ,গাড়ি,বাড়ি করেছে তাদেরও বিন্দু বিসর্গ কেনো জানায়নি ? তারা যে অভাবের মধ্যে রয়েছে সেটা তো অনলের অজানা নয় ! মা,ছেলে খোঁজ করতে করতে অনলের বাড়ি এসে উপস্থিত হন । অনল তাদের দেখে ভুত দেখার মত চমকে ওঠে ! কিন্তু মুখে কিছু বলেনা । সেদিন খাওয়া ,থাকার পর পরদিন সকালে মায়ের হাতে বেশ কিছু টাকা গুজে দিয়ে বলতে গেলে একপ্রকার বাড়ি থেকে বেড়-ই করে দেয় । তার ভয় হয় ,পিছে করা কৃতকর্মের কথা যদি সে আবেগতাড়িত হয়ে অতি আপনজনের কাছে বলে ফেলে !            


এই ঘটনার বছর খানেকের মধ্যে তার মা মারা যান । ভাই ধড়া গলায় যখন তার কাছে এসে মায়ের মৃত্যু সংবাদটি দেয় তখন সে প্রথম অবস্থায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে । ভাই এর সাথে নিজেও গলায় ধড়া পরে । শ্রাদ্ধের পূর্বপর্যন্ত ভাইকে সমাদরেই রাখে । বেশ ঘটা করে পুরোহিত মশাইকে প্রচুর দান সামগ্রী দিয়ে হাজার লোক নিমন্তন করে মায়ের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান পালন করে । কিন্তু শ্রাদ্ধের পরদিন ভাইয়ের শত অনুরোধ শর্তেও সে তার ভাইকে আর একটা দিনের জন্যওথাকতে দেয়না । সে আগের মতই বেশ কিছু টাকা ভায়ের হাতে দিয়ে তাকে ফিরে যেতে বলে । অভিমানী ভাই সেই টাকা নেয় না ।দাদাকে একটা প্রনাম করে বলে ,"জীবনে আর কোনোদিন তোর বাড়ি আসবো না । এটাই তোর আর আমার শেষ দেখা । আমার কি মনেহয় জানিস দাদা ?তুই অসৎপথে এই সব করেছিস ! তাই তোর মনে একটা ভয় যদি আমি সবকিছু জেনে যাই ! তুই ভালো থাকিস।"        

মায়ের মৃত্যুর এক বছর পর সে মাতৃমন্দির নামে বাড়িতেই কালিমায়ের এক বিশাল মন্দির স্থাপন করে যেখানে নিজের মায়ের বড় করে এক ছবি বাধিঁয়ে নিত্যদিন স্নানের পর বেশ মোটা এক সাদা ফুলের মালা মায়ের ছবিতে পড়ায় ।             

এখানেই যদি অনলের কাহিনী শেষ হতো তাহলে হয়তো অনলের বাকি জীবনটা অনেক সুখী ও সুন্দর হতো । কেউই জানতে পারতোনা তার জীবনে করা একটি খুনের কাহিনী । কিন্তু বিধাতা পুরুষ যে তার অলক্ষেই তার কৃতকর্মের সাজা লিখে রেখেছিলেন । পুত্র সন্তানের আশায় পরপর তিনটি মেয়ে হয় অনলের । বড় ও মেজকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে বিয়েও দিয়ে দেন বেশ অবস্থাপন্ন ঘরেই । ছোট মেয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য যখন বাইরে যায় তখন তার সাথে পরিচয় হয় বিশিষ্ঠ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর রথীন মজুমদারের সঙ্গে । পরিচয় থেকে ঘনিষ্ঠতা, প্রেম এবং বিয়ে । বারবার বাবা এ বিয়েতে আপত্তি করা শর্তেও মেয়ে ঈশিতা তার কোনো কথায় শোনেনা । অনল মারত্মকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন । ডক্টর বাড়ির লোককে জানিয়ে দেন , অনতিবিলম্বে তার বুকে প্রেসমেকার বসাতে হবে । খবর যায় ঈশানীর কাছে । সে তার স্বামীর কাছে বাবার প্রাণভিক্ষা চায় । রথীন ও ঈশানী কলকাতায় এসে উপস্থিত হয় । নামকরা নার্সিংহোমে ডাক্তার রথীনের তত্ত্বাবধানে অনলের অপারেশান খুব ভালোভাবেই হয়ে যায় । তখনও অনলের ভালোভাবে জ্ঞান আসেনি । ডাক্তার রথীন অনল অথাৎ তার শ্বশুরমশাইকে দেখতে তার শিয়রের কাছে যেয়ে তার চিকিৎসার কাগজপত্রে চোখ বুলাচ্ছিলেন । "বিধাতার লিখন না যায় খণ্ডন"- অনল বেহুস অবস্থায় বলতে থাকে ,"আমায় ক্ষমা করে দাও মেসোমশাই ,আমি তোমাকে মারতে চাইনি । হঠাৎ কেন যে ঐসময় আমি তোমার হাতটা ছেড়ে দিয়েছিলাম ,তা আমি আজও কোনো উত্তর পায়নি । আমার ভিতরের পশুটা তোমার টাকা আর সম্পত্তির লোভে তোমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিলো । তোমার পলাশপুরের বাড়ি আমি বিক্রি করে দিয়েছি । কোনোদিন যদি তোমার ছেলে রমেন ফিরে আসে আমি তাকে সবকিছু দিয়ে দেবো । এই পাপের বোঝা আমি আর টেনে বেড়াতে পারছিনা ।" রথীনের বুঝতে একটুও অসুবিধা হয়না তার শ্বশুর তার দাদুর খুনি ! ছেলেবেলা থেকেই সে তার বাবার কাছে কলকাতার বাড়ি ,ব্যবসা সম্পর্কে অনেকবার গল্প শুনেছে । রথীন পুরো কথাগুলি সকলের কাছে এমনকি ঈশানীর কাছেও চেপে যায় ।                       

পরদিন খুব ভোরে উঠে সে তার বাবার কাছ থেকে শোনা গল্পের কথা মনে রেখে পলাশপুর গ্রামে যায় । পিতৃ ভিটার কাছে দাঁড়িয়ে বুক ভরে নিঃশ্বাস নেয় । কিছু বয়স্ক মানুষের কাছ থেকে সে অনল সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারে । একটা পথের মানুষকে বাড়িতে তুলে এনে কিভাবে তাকে সন্তান স্নেহে রেখে নিজ সন্তানের দুঃখ ভুলতে চেয়েছিলেন । তার খুব রাগ হয় নিজের বাবা ,মায়ের প্রতি । মা কিছুতেই চাইতেন না বাবা তার কলকাতার বাড়ির সাথে কোনো সম্পর্ক রাখুক । প্রচন্ড অশান্তি করতেন এই নিয়ে তার বাবার সাথে তার বিদেশিনী মা । বাবা সংসারে শান্তি বজায় রাখতে মায়ের ইচ্ছাকেই মেনে নিয়েছিলেন । বিনিময়ে কষ্ট দিয়েছিলেন তার নিজের মা ,বাবাকে । আর তার শাস্তি মনেহয় ভগবান আমায় দিলেন আমার কাছ থেকে দু'জনকে গাড়ি এ্যাকসিডেন্ট একসাথে কেড়ে নিয়ে ।


          দিন পনের বাদে অনল বাড়িতে আসেন । একদিন রথীনকে ডেকে অনল বলেন ,"তোমার সাথে তো সেভাবে আলাপই হলোনা বাবা । তোমার বাবার নাম কি , এদেশে কোথায় তোমাদের বাড়ি ছিলো ?" রথীন চুপ করে বসে আছে দেখে তিনি আবারও একই প্রশ্ন করেন । এবার রথীন আস্তে আস্তে বলে ," আমার বাবার নাম রমেশ পাল ,ঠাকুরদা রবীন পাল ,এদেশে আমাদের বাড়ি ছিলো হাওড়া জেলার পলাশপুর গ্রামে ।"

              অনল এক হাতে বাঁদিকের বুকটা চেঁপে ধরে বলে ওঠেন ,"কি ,কি বললে তুমি ?" "আপনি উত্তেজিত হবেননা । যে কথা এতদিন কেউ জানেনি সে কথাগুলি হাসপাতালে বেঘোরে আমার সামনেই বলে ফেলেছেন । একেই বলে মনেহয় - পাপ করলে তার জীবদ্বশায় পাপের প্রকাশ হবেই । এ কথা কেউ কোনোদিন এমনকি ঈশানীও জানবে না । আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন । তবে আমি আর এখানে থাকবোনা । আমাদের টিকিট কাটা হয়ে গেছে ।আমরা কালই চলে যাবো ।" অনল যেভাবে শুয়ে ছিলেন সেই ভাবেই শুয়ে থাকেন । দু'চোখের কোল বেয়ে অবিরাম জল পড়তে লাগে । রথীন ঘর থেকে বেরিয়ে যান ।


        পরদিন যাবার সময় রথীন আর সে ঘরে ঢোকেননা । দরজার কাছ থেকেই 'আসছি'- বলে ঈশানীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ।


        প্লেন থেকে নেমেই ভাইরার ফোন পান ,"বাবা শেষ সময় তোমার কাছে ক্ষমা চেয়ে গেছেন । কিন্তু কেন ?"


Rate this content
Log in

More bengali story from নন্দা মুখার্জী

Similar bengali story from Abstract