নিয়তি
নিয়তি


“আরে ছাড়ো তো, ঐসব নিয়ম মেনে কিছু লাভ আছে?” দু বছরের বুলিকে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে বলল প্রভাস।
“ভাবতে অবাক লাগে, তোমার মতন শিক্ষিত মানুষরাও যখন এমন কথা বলে।“ তীব্র গলায় বলল নীহারিকা, প্রভাসের স্ত্রী। “যখন তোমার একটা ভুলে গোটা সমাজটা উজাড় হয়ে যেতে বসবে, তখন তুমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে তো? কেন তুমি এত প্রচারের পরেও চায়ের দোকান বা পাড়ার রকে আড্ডা জমাও?”
“তাতে কী? আমাদের কারো করোনা আছে নাকি যে আমরা মানব?” প্রভাসও ছাড়ার পাত্র নয়,”যাদের সত্যিকারের সাবধানতা অবলম্বনের দরকার ছিল, তারা তো দিব্যি বিলেতফেরত বাবু হয়ে এখানে ওখানে ফুর্তি করে বেরিয়েছে, যত দোষ আমাদেরই?”
নীহারিকা বলল,” তুমি যখন কথা শুনবেই না, তখন অন্তত আমাদের বিপদের মুখে ঠেলো না। কোন আক্কেলে বাইরে থেকে এসে হাত পা না ধুয়ে বুলিকে কোলে নিয়েছ? ওকে আমার কাছে দিয়ে দাও।“
অবজ্ঞাভরে প্রভাস বলল,” বুলিও জানে এসব অহেতুক ভয় দেখানো ছাড়া কিছু নয়। তাই না রে বুলি?” বলে বুলির গালে একটা চুমো এঁকে দিল প্রভাস।
***
হসপিটালের বেডে আইসোলেশনে শুয়ে ছিল প্রভাস। খানিকক্ষণ আগেই কনফার্ম হয়েছে তার করোনা পজিটিভ।
স্থির ভাবে সিলিঙয়ের দিকে তাকিয়ে ছিল সে। এক এক করে চোখের সামনে ভাসছিল মা, নীহারিকা, বুলি...
বুলির কথা মাথায় আসতেই শিরদাঁড়া বেয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত নেমে গেল প্রভাসের।