ভালোবাসা
ভালোবাসা
"খাসা করেছেন বাগানখানা, মিসেস সেন। যেমন রঙ, তেমনি সাইজ ফুলগুলোর। আর সুগন্ধের কথা তো ছেড়েই দিলাম। মনে হচ্ছে স্বর্গের পারিজাত বনে রয়েছি।"
প্রতিমাদেবী তাঁর অফিস কলিস মিস্টার দাসকে সঙ্গে নিয়ে নিজের বাগান ঘোরাতে এসেছেন। বাগান আলোকিত করে শোভাবর্ষণ করছে সূর্যমুখী, চন্দ্রমল্লিকা, গোলাপ, ডালিয়ারা। আর বাগানের এককোণে আড়ষ্টভাবে দাঁড়িয়েছিল মালি শশীভূষণ।
"চলুন মিঃ দাস, এবার রুমে যাওয়া যাক, কালকের মিটিংটার বিষয়ে আপনার সাথে কিছু আলোচনা করার আছে।"
ওরা চলে যেতে উদ্যত হলেন। একপাশে অনেকগুলো নয়নতারা ফুল ফুটে ছিল, ওরা সেদিকে খেয়াল করলেন না। মিসেস সেনের পায়ের চাপা পড়ে একটা নয়নতারা গাছের একদিকের পাতাগুলো দুমড়ে গেল, ফুলটা নুইয়ে পড়ল মাটির দিকে। সেদিকে ভ্রূক্ষেপ না করেই চলে গেলেন ওরা দুজনে।
এককোণে দাঁড়িয়ে শিহরিত হয়ে উঠেছিল মালি শশিভূষণের হৃদয়। ওনারা দুজনে ভিতরে চলে যেতেই বিদ্যুতবেগে ছুটে এসে শশীভূষণ পরম স্নেহে হাতে তুলে নিলেন আঘাতপ্রাপ্ত নয়নতারাটিকে। নিঃশব্দে চোখ ফেটে দুফোটা জল বেরিয়ে আসে তাঁর।
এই বাগানের সমস্ত ফুলগুলোই তো তাঁর বড্ড আপন। নিজের সন্তানের মতন একেকটিকে যত্ন, পরিচর্যা করে গড়ে তুলেছেন তিনি। বিলাসিতার কোন স্থান সেখানে নেই।