Tandra Majumder Nath

Abstract Tragedy Crime

3  

Tandra Majumder Nath

Abstract Tragedy Crime

মুখোশের আড়ালে

মুখোশের আড়ালে

8 mins
411



কাট!কাট!কাট!- হোয়াট হ্যাপেন্ড তিয়াসা। কি করছো কি।-সরি স্যার। তিয়াসা মাথা নত করে।-হোয়াট সরি! এই নিয়ে দশ বার হোলো তিয়াসা। আর কতো বার শ্যুট করবো বলতে পারো।ডিসগাস্টিং। কর্কশ কন্ঠে ঝাঁঝিয়ে ওঠে কৌশিক চক্রবর্তী।শ্যুটিং এ যখন মন নেই তখন কেনো আসো। বাড়িতে বসে থাকলেই তো পারো।পেপারে সাইন করার আগে তো খুব খুব বড় কথা বলেছিলে, এই সিনেমাটায় তুমি নিজের সবথেকে ভালো পারফরমেন্স দেবে,প্রয়োজনে নিজের রক্তের শেষ বিন্দুও। আর এই তার নমুনা।-সরি স্যার। আসলে আমার শরীর টা...... কৌশিক বাবু বাধা দিয়ে বলে,-দেখো তিয়াসা বাহানা দিও না। শরীর থাকলে খারাপ করবেই। তার মানে এই নয় তুমি আমার সিনেমাটার বারো টা বাজিয়ে দেবে। আমি কিন্তু নিজের নাম খারাপ করতে পারবো না। প্রয়োজন হলে অন্য কোন অভিনেত্রী কে নিয়ে আসবো। শুধু রূপ দিয়ে এই কৌশিক চক্রবর্তী কে ভোলানো যায়না বুঝেছো। তিয়াসা কৌশিক বাবুর পা ধরে নীচে বসে পরে, কাঁদো কাঁদো গলায় বলে ওঠে এমনটি করবেন না স্যার। দয়া করুন স্যার। আমি আপনার কথা মত সব করেছি। নিজেকে আপনার হাতে তুলে পর্যন্ত দিয়েছি। আসলে কয়েকদিন ধরেই আমার সারা শরীরে প্রচন্ড ব্যথা


তাই....কৌশিক ঝট করে তার পা তিয়াসার হাতের থেকে ছাড়িয়ে নেয়, আর তিয়াসার দিকে কটমট দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে ওঠে,-মুখ বন্ধ রাখো। তোমাকে বলেছি আমি বেশী কথা বলবে না। নইলে ফল ভালো হবে না।-স্যার আমি আর একবার চেষ্টা করছি।-থাক! তোমাকে দিয়ে বোধ হয় এই সিনেমাটা করানো যাবেনা। নতুন কেউ কে দেখতে হবে।কান্না জড়ানো গলায় তিয়াসা বলে ওঠে, স্যার আমি কথা দিচ্ছি এরপর আপনাকে আর অভিযোগ করার কোন অবকাশ রাখবো না।কৌশিক চুপ করে থাকে।-স্যার প্লিজ স্যার, আজকের দিনটা আমায় সময় দিন আমি কাল থেকে আপনাকে.... ঠিক আছে, তবে এই শেষ সুযোগ তোমার কাছে নিজেকে প্রমাণ করার। নয়তো তুমি রিজেক্টেড মাল হয়ে যাবে বুঝেছো। কথাগুলো কৌশিক তিয়াসার কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো। আর বাইরের কারো কাছে মুখ খুলেছো তো... চোখ বড় বড় করে হুশিয়ারি ইঙ্গিত দিয়ে শ্যুটিং স্পট ছেড়ে গটগট করে হেটে বেড়িয়ে যায় কৌশিক। তিয়াসা ধপ করে সেটে রাখা চেয়ারে বসে পড়ে আর কৌশিকের চলে যাওয়া পথে দিকে নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ভাবতে থাকে, এই কি সেই মানুষ যার সাথে ঠিক একমাস আগে দেখা হয়েছিলো। ***-হাই,সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথম ম্যাসেজ আসে তিয়াসার মোবাইলে।এরকম প্রায়ই তিয়াসার মোবাইলে অনেক অচেনা ছেলেরই ম্যাসেজ আসে কিন্তু তিয়াসা ওসব পাত্তা দেয় না।


কিন্তু কৌশিক চক্রবর্তী নামের অ্যাকাউন্ট থেকে কিছুদিন ধরেই প্রায়ই ম্যাসেজ আসে।তিয়াসা সেই অ্যাকাউন্ট সার্চ করে দেখে সেটা কৌশিক চক্রবর্তীর। মানে বর্তমানে টলিউড বলিউড কাঁপানো সেরা ফিল্ম ডিরেক্টর ও রাইটার। গত একবছরের মধ্যে এই মানুষটির ঝুলিতে সেরার সেরা বহু পুরষ্কার এসেছে। প্রচুর সুখ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে ইতিমধ্যে।তাই তিয়াসা প্রথমটায় বিশ্বাস করেনি যে তার মতো সাধারণ মেয়েকে ওতো বড় একজন সেলিব্রিটি ম্যাসেজ করবে।-হাই-কে আপনি?-আমার প্রোফাইলে ছবি দেওয়া আছে দেখোনি? - হুম দেখেছি। সে তো কৌশিক চক্রবর্তী। আপনি কে?ওদিক থেকে একটা হাসির ইমোজি আসে।-আরে আমিই তো কৌশিক চক্রবর্তী। -মিথ্যে কথা। বিশ্বাস করিনা।-কি করলে বিশ্বাস করবে। আচ্ছা দাঁড়াও আমি ভিডিও কল করছি। ফোন নম্বর দাও।তিয়াসা সাতপাঁচ ভেবে ফোন নম্বর টা দিয়ে দিলো।যথারীতি কৌশিক তিয়াসা কে ভিডিও কল করে,তিয়াসা ভূত দেখার মত চমকে যায়, ও বিশ্বাসই করতে পারে না সত্যি সত্যি ওর সবথেকে প্রিয় ফিল্ম ডিরেক্টর এর সাথে কথা বলছে। দুজনের মধ্যে কিছুক্ষণ আলাপ চলে। তারপর কৌশিক বলে যে,একটা নতুন সিনেমা করছি। তার জন্য নতুন মুখ দরকার তাই অডিশন নিচ্ছি। তুমি চাইলে লুক টেস্টের জন্য আমার অফিসে আসতে পারো।তারপর বলবো আমি হঠাৎ তোমায় ম্য্যাসেজ করলাম কেনো।-ঠিক আছে।


****-মে আই কাম ইন স্যার। -আরে তিয়াসা যে, কাম কাম কাম। -থ্যাঙ্ক ইউ স্যার।-সিট ডাউন।তিয়াসা বেশ স্মার্টলি চেয়ারে বসলো, সুন্দর একটি ওয়ান পিস পড়ে এসেছে, লম্বা চুল হোস্টেল করে বাধা,রীতিমত যেকোন পুরুষের হৃদয় কেড়ে নেবার মতো শারিরীক ছন্দ রয়েছে তিয়াসার।-স্যার আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না যে আমি আপনার সামনে দাঁড়িয়ে আছি।ও..ও... আই অ্যাম সো এক্সাইটেড। -আরে ঠিক আছে ঠিক আছে। শান্ত হয়ে বোস। -স্যার এই যে আমার বায়োডাটা, বলেই তিয়াসা তার হাতের ফাইল টা দিতে যাচ্ছিলো।-লাগবে না। -কেনো স্যার?-কারণ আমি তোমার সম্বন্ধে জানি।-মানে? তিয়াসা অবাক হয়।কৌশিক চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলতে থাকে।তোমার নাম তিয়াসা ব্যানার্জি। বাড়ি জলপাইগুড়িতে। কলকাতায় পড়াশোনার সূত্রেই আসা।এখন স্নাতকোত্তর করছো। আর মডেলিং করতে খুব ভালোবাসো। আর সেই মডেলিং টা কেই তুমি প্রফেশন হিসেবে রাখতে চাও কিন্তু সুযোগ হয়ে উঠছে না। এখন তুমি কলকাতাতেই পেয়িং গেস্টে একাই আছো।তিয়াসা অবাক হয়ে শুনতে থাকে। -এত্ত কি করে জানলেন স্যার। তোমার বাবা একটি হোটেলের কর্মচারী। তোমার ভাই আর মা কে নিয়ে মোট চারজনের পরিবার। -হ্যাঁ স্যার, তিয়াসা অবাক হতেই থাকে।কৌশিক তিয়াসাকে চিন্তিত দেখে ফিক করে হেসেই উচ্চস্বরে হাসতে থাকে।-আরে ভয় পেলে নাকি।আরে ভয় পেও না। বলছি বলছি কৌশিক হাসতে হাসতেই বলে।"নতুন মুখ" বলে একটা প্রতিযোগিতার কথা মনে পড়ে? যেটা RK জুয়েলারি অর্গানাইজ করেছিলো।


কিছুক্ষণ ভেবে তিয়াসা বলে ওঠে, -ও হ্যাঁ , দু বছর আগের কথা। মনে পড়েছে, নতুন মুখ বলে একটি প্রতিযোগিতা হয়েছিল কলকাতায়। তখন আমি সেখানে অংশগ্রহণ করি আর চতুর্থ স্থান অধিকার করেছিলাম।সেতো অনেক দিনের কথা। আপনি কি করে...-আসলে আমার নতুন সিনেমার জন্য নতুন কোন অভিনেত্রী চাই যে সুন্দরী হওয়ার সাথে সাথে অভিনয় টাও ভালো করে। তাই ওই "নতুন মুখ" প্রতিযোগিতাটার কথা মনে পড়ে। আর তখন RK জুয়েলারির কর্ণধার কুন্তল কর্মকারের সাথে দেখা করি আর তাকে জানাই যে সেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ কারী সবার জমা করার বায়োডাটা গুলি দিতে। সেখান থেকে তোমার সম্পর্কে জানতে পারলাম।তিয়াসা এতক্ষণ মন দিয়ে কৌশিকের কথা গুলি শুনছিলো। -আমার কি ভাগ্য। সত্যি স্যার বলে বোঝাতে পারছি না আমি কত্ত খুশি।-মিস তিয়াসা, তুমি অভিনয় জানো তো?-হ্যাঁ স্যার, কলেজে আমি নাটক করতাম তো।-বাহ! খুব ভালো।-আর মডেলিং টা করছো তো নাকি?-না স্যার। মডেলিং টা হচ্ছে না। আসলে পড়াশোনাতেও খুব একটা খারাপ নই তাই বাবা বললেন পড়াশোনা টা মন দিয়ে করতে। আর বাবাও দুটোর খরচ টানতে পারছিলেন না। -ওপস! ঠিক আছে আগে তোমার লুক টেস্ট হোক।-ওকে স্যার।তিয়াসার লুক টেস্ট , ফোটো শ্যুট সব কিছুই হয়। বেশ ভালো মতোই সব কিছু মিটে গেলো।-তাহলে তিয়াসা, কনগ্রেচুলেশন!


তুমি আমার আগামী ছবির হিরোইন হতে চলেছো।-কি বলছেন স্যার সত্যি! ও মাই গড, আনবিলিয়েবল। থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ স্যার। আমাকে এইরকম একটি অপরচুনিটি দেওয়ার জন্য।-আরে না না এটা তুমি তোমার যোগ্যতায় পেয়েছো। আমি শুধু তোমাকে খুজে বের করেছি।-তাহলে স্যার কবে থেকে শ্যুটিং শুরু হবে।-আমি তোমাকে ফোন করে জানিয়ে দেবো। তবে তোমাকে কিছু বলার আছে আমার।-হ্যাঁ বলুন না স্যার।-দ্যাখো তিয়াসা, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি তে টিকে থাকতে হলে আর বিশেষ করে আমার সাথে কাজ করতে হলে কম্প্রোমাইজ করতে হবে সে যে কোন বিষয়েই হোক।-মানে? বুঝলাম না স্যার।-আমি তোমাকে যখন যেখানে ডাকবো আসতে হবে। যা বলবো তাই করতে হবে। আর "না" কথাটি আমি পছন্দ করি না। সো... তুমি ভেবে দেখতে পারো এখনো, কি করবে।-না স্যার, আপনার মতো একজন ভালো মানুষ আর এতো সফল সিনেমার পরিচালক আপনি, আমার ভাববার কিছু নেই। আমার স্বপ্ন যে মরতে বসেছিলো, আপনি সেই স্বপ্নে প্রাণ দিলেন। -আর অভিনয় টা তোমাকে....-আমি কথা দিচ্ছি আপনাকে, আমি আপনাকে নিরাশ করবো না।-তাই বুঝি! দেখা যাবে কতটা খুশি করতে পারো। স্মিত হাসলেন কৌশিক।তিয়াসা সেই হাসির অর্থ বুঝতে পারে না।



***কয়েকদিন পর....



সন্ধ্যা ছয়টা বাজে, শীতকালে ছটা বাজতে বাজতেই চারিদিক অন্ধকার হয়ে যায়।এমন সময় তিয়াসার ফোন টা বেজে ওঠে।তিয়াসা পড়ছিলো।-হ্যালো-হ্যাঁ,তিয়াসা আমি কৌশিক বলছি।-ওহ হ্যাঁ, বলুন স্যার।-তুমি এখনি চলে আসতে পারবে।-স্যার এখন? -হ্যাঁ এখনি।-কোথায় স্যার?-এইতো তোমার PG থেকে কাছেই, টিউলিপ নামে যে হোটেল টা আছে সেখানে।-কিন্তু.... স্যার আমি... এখন...তিয়াসা আমতা আমতা করতে থাকে।-এই যে শুরু হয়ে গেলো তো না না করা...-না না স্যার আমি আসছি। -ভেরি গুড গার্ল, এসো, ফাস্ট ফাস্ট। আমি ৪১৯ নম্বর রুমে আছি।তিয়াসার কেমন যেন ঠেকছিলো তবুও নিজেকে তৈরী করে নিয়ে বেড়িয়ে গেলো।


হোটেলে পৌছে ৪১৯ নম্বর রুমের দরজা নক করতেই কৌশিক বেড়িয়ে এলেন।-তিয়াসা চলে এসেছো। কাম কাম।রুমে ঢুকেই তিয়াসা দেখলো আরো কয়েক জন অচেনা লোক বসে রয়েছেন।কৌশিক তিয়াসার সাথে সবার পরিচয় করিয়ে দিলেন, -তিয়াসা, ওনারা বিভিন্ন কোম্পানী থেকে আসছেন যারা সিনেমাটা তে বিভিন্ন ভাবে হেল্প করবেন। -ওহ নমষ্কার, তিয়াসা সবার উদ্দেশ্যে নমষ্কার জানায়।-আর ইনি হচ্ছেন তিয়াসা আমার আগামী সিনেমার হিরোইন।সবাই তিয়াসা কনগ্রেচুলেশন জানালো।তাহলে আপনারা এখন আসুন। আমি মিস তিয়াসা কে সিনেমার কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করে নেই।সবাই নিমেষের মধ্যে ঘর ফাঁকা করে দেয়।


-স্যার আপনি এসময় ডাকলেন, কোন জরুরী ব্যপার কি।-হ্যাঁ সিনেমার শ্যুটিং এর দিন ঠিক হয়ে গেছে। -ও! কবে থেকে স্যার। আমি খুব এক্সাইটেড। -আগামী মাস থেকে।-দারুণ ব্যপার। জানেন স্যার আমি তো বাড়িতে জানিয়ে দিয়েছি যে আমি সিনেমা করছি।-বাহ ভালো। কিন্তু...-কিন্তু কি স্যারকিন্তু তার আগে আমার তো তোমাকে টেস্ট করতে হবে তিয়াসা, বলেই কৌশিক তিয়াসার কপাল থেকে আঙুল দিয়ে টেনে ঠোঁট অব্দি নিয়ে এসে ঘাড় হয়ে ছেড়ে দিলো।তিয়াসা হাত ছাড়িয়ে দুবপা পিছিয়ে যায়, -কিসের টেস্ট স্যার। আমি তো সব টেস্ট সেদিন দিলাম। -হ্যাঁ দিয়েছো তো। আরো দিতে হবে। বলেই টেবিলে রাখা গ্লাসে ওয়াইন ঢেলে চুমুক দিতে থাকে।-তবে যে স্যার। আমি তো সেদিনই পেপারে সাইন করে দিয়েছি। তবে আজ।কৌশিক পরনের ব্লেজার খানা খুলে ফেলে। -একি করছেন স্যার? পরনের পোশাক খুলছেন যে।-কৌশিক এবার তিয়াসার কাছে এসে তিয়াসার কোমড় খানি জাপটে ধরে বলে আগে আমাকে তো খুশি করো।-ছাড়ুন স্যার কি করছেন। ছেড়ে দিন বলছি। তিয়াসার শরীরে ঝাপিয়ে পড়ে কৌশিক।কৌশিকের শারীরিক বলের কাছে তিয়াসার জোর কিছুই না। পুরো তিনঘন্টা ধরে চলে তিয়াসার ওপর শারীরিক অত্যাচার। তিন ঘন্টা পর শান্ত হয় কৌশিক।তিয়াসা চোখ খুলতেই নিজেকে বিবস্ত্র দেখতে পায়, মূর্তিমান হয়ে বসে থাকে।-ওহ কাম অন তিয়াসা। এইসব ছোট খাটো ব্যপার নিয়ে মাথা ঘামিও না। ফোকাস রাখো নিজের চরিত্রের প্রতি। আগামী মাস থেকে শ্যুটিং শুরু হবে। -কেনো করলেন এমন আমার সাথে।


দীর্ঘক্ষণ চুপ থাকার পর তিয়াসা আধবোজা গলায় বলে ওঠে।আপনি যেমন মেয়ে ভাবছেন আমি তেমন মেয়ে নই।-তুমি ভুলে যাচ্ছো তিয়াসা তুমি পেপারে সাইন করেছো, আর সেখানে স্পষ্ট ভাবে লেখা আছে সিনেমার প্রয়োজনে তুমি সব করবে আর না করলেই হাজতবাস করতে হবে।-কিন্তু আপনার এই লালসা মেটানোর কথাও নিশ্চই লেখা নেই।-আরে তুমি জানো না তিয়াসা আমি কি করতে পারি। কোথাকার জল কতদূর নিয়ে যেতে পারি সে ধারণাও তোমার নেই।-কেনো করছেন স্যার আমার সাথে এমন। আমি যে শুধু মাত্র স্বপ্ন দেখেছিলাম।-সে দেখো না। কে বারণ করেছে।আমি যা বলছি তেমনটি করো ব্যস! তাহলেই তো হয়।ঠিক আছে। আমার এতো বাহানা একদম পছন্দ হয়না। কি করবে দ্যাখো। যদি মনে হয় নিজের স্বপ্ন কে পূরণ করবে মা বাবার চিন্তা দূর করবে, ভাই এর পড়াশোনায় বাধা আসতে দেবে না, তবে আমার কথা শুনবে।আর যদি মনে করো নিজের সাথে সাথে নিজের পরিবারেরও ভবিষ্যৎ অন্ধকার করতে চাও তবে দরজা খুলে বেড়িয়ে যেতে পারো।



তিয়াসা নিজের গাঁয়ে কামিজ টা চাপিয়ে চলে এলো নিজের ঘরে।



কয়েক দিন পর আবারো ফোন করে কৌশিক। তিয়াসা যেতে রাজি না হলেই সেদিনের রাতের ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখায়।এরপর দিনের পর দিন নিরুপায় তিয়াসার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ভালো মানুষের মুখোশ পরা কৌশিক তিয়াসার শরীর নিয়ে খেলে গেছে, ভোগ করেছে নিজের খেয়াল খুশি মত।পুরো একমাস ভোগ করার পর সবে কয়েকদিন হোলো সিনেমার শ্যুটিং শুরু হয়েছে। কিন্তু তিয়াসার শরীরের ওপর যে পাশবিক অত্যাচার হয়েছিলো তা নিয়ে তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিলো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর।****চোখ গড়িয়ে জল নেমে আসে।কারণ তার যে আর এখন কিছু করার নেই।তিয়াসা সম্বিত ফিরে পায় শর্মিষ্ঠার স্পর্শে।শর্মিষ্ঠা একজন মেকাপ আর্টিস্ট।-আমি বুঝতে পারছি তিয়াসা তোমার ওপর দিয়ে কি ঝড় বয়ে যাচ্ছে।


তিয়াসা চমকে ওঠে, শর্মিষ্ঠার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে।-হ্যাঁ তিয়াসা, আমি জানি তোমার সাথে কি ঘটে চলেছে। কারণ অমানুষ টার শিকার যে আমিও হয়েছি। আমার শরীর নিয়েও যে সে খেলেছে। না জানি আর কত অসহায় মেয়ের শরীর নিয়ে খেলেছে।-কি বলছো এসব।-ঠিকই বলছি। কৌশিক চক্রবর্তী এখন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে খুব নাম ডাক। ওনার সাথে যেই কাজ করছে সেই বিখ্যাত হয়ে যাচ্ছে। তাই আর কেউ ওনার বিরুদ্ধে মুখ খোলেনা।আমাকেই দেখো আমি এখন যথেষ্ট পপুলার।প্রথমে আমারো খুব কষ্ট হয়েছে। কিন্তু এখন আর ওসব ভাবিনা। কথায় আছে না "কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়"।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract