স্বপ্নজয়া
স্বপ্নজয়া


আমার নামের জায়গাটা না হয় এখন শূন্যস্থানই থাক। জীবনের শুরুর কিছু কিছু কথা আছে যেগুলো প্রথমে বলে ফেললে পরের বাকি কথার কোন সার্থকতা থাকে না।
জন্মটা আমার এক রাজপ্রাসাদে হয়েছিলো। আমার বাড়ি থুড়ি আমার বাবার বাড়ি সেটা কে আপনারা রাজপ্রাসাদও বলতে পারেন।
বিশাল বড় মাপের ব্যবসায়ী আমার বাপ ঠাকুরদা। নিজের দেশ ছাড়াও চীন জাপান রাশিয়া কানাডা সব জায়গায় আমার বাবার ব্যবসা সুবিস্তৃত।
কিন্তু সেই রাজপ্রাসাদে আমার ঠাঁই হয়নি। ঠাঁই হয়নি বাবা ঠাকুরদা ঠাকুমার কোলে,সুযোগ হয়নি পালঙ্কে ঘুমোনোর, ভাগ্য হয়নি দামী জামা বা কামিজ পরার, শিক্ষার নূন্যতম সু্যোগটাও করে দেওয়া হয়নি আমার জন্য।
কিন্তু কেনো? তার উত্তর আমাকে কেউ দেয়নি, কেই বা দেবে কারণ আমি তো সবার থেকে দূরে থাকতাম সেই রাজপ্রাসাদের সমস্ত চাকরেরা যেখানে থাকতো তার থেকে একটু দূরে একটা খুপড়িতে। সেই খুপড়ির দরজা সবসময় বাইরে থেকে তালা দেওয়া থাকতো। আমি জানতাম না কি আমার অপরাধ ছিলো যার জন্য আমাকে ছোট্ট শিশু অবস্থা থেকে কারাবাস দেওয়া হয়েছিলো।
আমি সেই খুপড়ির জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে রাজপ্রাসাদটা কে দেখতাম। খুব ইচ্ছে হোতো সেখানে ঢোকার কিন্তু বাস্তবে তা অসম্ভব ছিলো।
তবে হ্যাঁ আমার ওই অভিশপ্ত জীবনে এক দেবীর আশীর্বাদ ছিলো, তিনি হলেন আমার মা। মায়ের কাছে শুনেছি আমার নাকি ছোট ভাই আছে আর একটা বোনও আছে। কিন্তু তারা সবসময় সেই প্রাসাদেই থাকে। তাদের কেনো আমার মতো কারাবাস দেওয়া হয়নি জানি না। আমার এই অবুঝ মনটায় অনেক প্রশ্ন ঘোরাফেরা করতো কিন্তু তার উত্তর দেওয়ার মতো কেউ ছিলো না।
মা দিনে একবার আসতেন স্নান করিয়ে খাইয়ে আবার চলে যেতেন।
সেই রাজপ্রাসাদের সামনে একটি বড় খেলার মাঠ ছিলো। সেখানে প্রতিদিন বিকেলে আমার মতই ছোটদের খেলতে দেখতাম। পাড়ার আরো সবাই ছোটরাও খেলতে আসতো সেখানে। কিন্তু আমার ইচ্ছে সত্ত্বেও যেতে পারতাম না।
আমি শুনতে পেতাম আমার ভাই বোনদের বড় করে জন্মদিন পালন করা হোত কিন্তু আমার জন্মদিন?
পূজোয় নতুন জামা?
সেগুলো কখনই হয়নি আমার সাথে।
এক চাকরের বউ এর কাছে শুনেছি, সে বলেছিল যে, আমার জন্মের আগে পর্যন্ত নাকি বাড়ির সবাই খুব খুশি ছিলো, চারিদিকে আলো দিয়ে সাজানো হয়েছিল, কিন্তু আমার জন্ম হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ঢুকতেই চারিদিক অন্ধকার করে দেওয়া হয় পরিবারের কেউ আমায় চায়নি, বলেছিল আমাকে কোন অনাথ আশ্রমে দিয়ে আসতে বা আমার মতন শিশুদের যারা নিতে চায় তাদের কাছে দিয়ে আসতে, কিন্তু মা অনেক অনুরোধ করে অপমান সহ্য করে আমাকে রেখে দেয় তবে বাড়ির সকলের কড়া নির্দেশ ছিল আমি যেন বাড়ির বাইরে বেড়োতে না পারি, পৃথিবীর সমস্ত মানুষের কাছে যেন আমার কোন অস্তিত্ব না থাকে, কেউ যেন জানতেও না পারে আমি ওই বংশের সন্তান।
আমি ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠছিলাম, আমার মনের মধ্যে কৌতূহল আর নানান প্রশ্নের জমাট বাধছিল কিন্তু মায়ের কাছে কোন উত্তর পাইনি।
আমাকে বাইরের জগৎ হাতছানি দিয়ে ডাকতো, আকাশ বাতাস গাছপালা সব কিছু। আমি ঠিক করি এই কারাগার থেকে আমাকে বেড় হতেই হবে।
আমি বুঝতে পারছিলাম আমার শারিরীক গঠন টা অন্যরকম। আমার গলার স্বর টাও যেন কেমন।শ্যামল চাকরের মেয়ে তিতলি একরকম দেখতে আবার কৈলাশ চাকরের ছেলে গনেশ আর এক রকম দেখতে কিন্তু আমি বুঝতাম আমি বোধহয় ওদের থেকে অন্য রকম। যাই হোক অনেক চেষ্টা করে একদিন জানালার গ্রিল টা খুলে ফেলি, প্রতিদিন রাতে চুপি চুপি আমি সারা বাড়ির চারপাশ টা ঘুরে দেখতাম।
এমনি একদিন সন্ধ্যায় জানালা দিয়ে বেড়িয়ে দেওয়াল টপকে বেড়িয়ে পরি। হাঁটতে থাকি আর দেখতে থাকি মানুষজন রাস্তাঘাট, একমনে হাটতে হাটতে হঠাৎ লক্ষ্য করলাম সবাই কেমন যেন আমার দিকে তাকিয়ে আছে, নিজেকে কেমন যেন লাগছিল। নিজের মুখটা কখনো আয়নায় দেখার সুযোগ হয়নি, তাই রাস্তায় হাটতে হাটতে হঠাৎ একটা জুয়েলারির দোকান নজরে আসে সেখানে চারিদিকে আয়না লাগানো, আমি দোকানে যেতেই সবাই নিজের কাজ ফেলে আমার দিকেই তাকিয়ে থাকে। দোকানের একজন কর্মচারী এসে আমার হাতে একশো টাকা গুজে দিয়ে চলে গেলো, আমি বোকার মতন দাঁড়িয়ে রইলাম। আয়নার নিজের সম্পূর্ণ শরীরের প্রতিচ্ছবি দেখে চমকে উঠলাম আমি।
কত আর বয়স হবে তখন ১২ বছর। দেখলাম আমার মুখশ্রীটা কেমন ছেলেদের মতো বুকটা মেয়েদের মতো সুডৌল, আবার হাত পা গুলোও পুরুষের মত, আমি তো ছেলে নই, নাহ আমি তো মেয়েও নই, #তবে_আমি_কে? কে আমি? নিজেকে আমি তখন আবিষ্কার করলাম যে আমি সমাজের আর পাঁচটা মানুষের মতো নই আলাদা। একটা ছোট্ট মেয়ে তার মায়ের সাথে হেঁটে যাচ্ছিলো হঠাৎ সে আমাকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে তার মা কে বললো, -মা দেখো হিজড়া।
সেই শিশুটির মা তৎক্ষণাৎ তার মেয়েটি কে নিয়ে আমার কাছে এসে হাতে পাঁচশো টাকা গুজে দিয়ে বললো আমার মেয়েটা কে আশীর্বাদ করো না। আমি ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইলাম সেই মহিলার দিকে।
লক্ষ্য করলাম দোকানে নিমেষের মধ্যেই ভিড় জমে গেছে শুধুমাত্র আমাকে দেখার জন্য। নিজেকে কেমন যেন জোকার বলে মনে হচ্ছিলো। আমি সেখান থেকে ছুট্টে চলে আসি আর আবার কারাগারে ঢুকে যাই।
পরদিন আমার ঘরে মা আসলে আমি মা কে জিজ্ঞেস করি,
মা হিজড়া মানে কি?
-আমার প্রশ্নে মা কে চমকে উঠতে দেখি।
ছিঃ ওসব প্রশ্ন কেনো?
-মা বলো না হিজড়া মানে কি?
-তোমাকে এসব কথা কে বলেছে শুনি?
মা কে সেদিন সন্ধ্যার কথা বলিনি কারণ তাহলে হয়তো আর বাড়ি থেকেই বের হতে পারতাম না।
-বলো না মা।
-হিজড়া মানে হোলো, ভগবানের দান।
মা আর কোন কথা না বলে চলে যায়।
দুদিন মা আমার ঘরে আসেনি, মা কে দেখার জন্য মন কেমন করছিলো,
তাই মা কে দেখবার জন্য আমি আবার জানালা দিয়ে রাতের বেলা চুপি চুপি বেড়িয়ে পড়ি।
রাজপ্রাসাদে মানে সেই বিশালাকায় বাড়িতে প্রবেশ করি।
অনেক খোজা খুঁজির পর মায়ের ঘরটা অবশেষে পেয়ে যাই। মা বলে ডাকবো এমন সময় দেখি বাবা সেই ঘরে ঢুকলেন। বাবা কে আমি কখনো দেখিনি, আর এবারো দেখা হোলনা কারণ আমি আড়াল থেকে মা আর বাবার কথা শুনছিলাম।
মা বিছানায় শুয়ে অনবরত কেঁদেই যাচ্ছিলো, আর বাবা বলছিলো
-তোমাকে অনেক বার বলেছিলাম অরুণিমা ওই বাচ্চা কে এ বাড়িতে রেখো না।
জন্মের সাথে সাথে কোন আশ্রমে দিয়ে দাও কিন্তু তুমি শুনলে না আমার কথা।
-ও যে আমার সন্তান
-তোমার তো আরো দুটো সন্তান আছে। তাদের মানুষ করো।
ওই হিজড়া টার জন্য ওতো দরদ কেনো শুনি।
-ওগো ওমন কথা বোলো না ও আমার প্রথম সন্তান। নয় মাস গর্ভে ধারণ করেছি ওকে কি করে ফেলে দিতাম।
-তোমার কাছে দেখছি আমার চেয়ে ওই হিজড়াটার দাম বেশী হোলো।
-কি বলছো তুমি এসব, তোমরা কি কোন বস্তু নাকি যার দাম হবে।
-তুমি প্রতিদিন ওদিক টায় যাও বাড়ির চাকরেরা ওদিকে থাকে, নানারকম কথা শোনা যায়।
- ও যে অবুঝ, কোথায় যাবে ও।
-আমি জানি না অরুণিমা, ওর এখানে থাকা চলবে না। কেউ যদি জানতে পারে যে এত্ত বড় ব্যবসায়ীর সন্তান এক হিজড়া তাহলে সমাজে আমাদের রেপুটেশন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বলো তো।
কথাগুলো আড়াল থেকে শুনে আমার বুক ফেটে কান্না বেড়িয়ে আসছিলো। তখন বুঝতে পারলাম কেনো আমাকে এতো দিন সবার থেকে আলাদা করে রাখা হয়েছে।
কিন্তু মুখ বুজে আমি সেখান থেকে চলে আসি। ঠিক করলাম আর থাকবো না সেখানে। হতে পারে সেটা এক প্রাসাদ কিন্তু আমার কাছে সেটা এক কারাবাস ছিলো।
তিতলি কে বলে এলাম -মা এলে বলিস, আমি এ বাড়ি ছেড়ে চিরদিনের মতো চলে গেলাম। কারণ আমি চাই না আমার কারণে আমার মা অপমান সহ্য করুক।
সেই বাড়ি ছেড়ে দিনের পর দিন আমি অভুক্ত অবস্থায় পথে ঘাটে রাত কাটিয়েছি। রাস্তায় শুয়ে থাকলে অনেকেই পয়সা ছুড়তো নিজেকে তখন বাঁচিয়ে রাখতে ইচ্ছে করতো না। কোথাও আমাকে কাজেও নিতে চাইতো না। এমন দিনও গেছে যখন অনেক ছেলেপেলেরা আমায় পাগলি ভেবে মারতে আসতো। একদিন রাস্তায় শুয়ে আছি হঠাৎ শুনতে পাই বাজারের মধ্যে হাতে তালি দিয়ে দিয়ে কারা যেন তোলা তুলছে। কিছুক্ষণ পর বুঝতে অসুবিধা হোলো না তারা আমারই মতো। তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই সেই দল আমায় তাদের সাথে নিয়ে নিলো।
তাদের সাথে গিয়ে তাদের মহল্লায় গিয়ে থাকতে শুরু করলাম।
শুরু হোলো জীবনের এক নতুন অধ্যায়।
তারা নাচতো গাইতো আমাকে দিয়েও করাতে চাইতো কিন্তু আমার কেনো যেন ওসব ভালো লাগতো না।
আমার বই পড়তে ইচ্ছে করতো, স্কুল যেতে ইচ্ছে করতো।
মহল্লার সব হিজড়ারা একসাথে যখন বাজারে তোলা তুলতে যেতো বা কোন বাড়ির অনুষ্ঠানে যেত আমাকেও নিয়ে যেত কিন্তু আমার ওসব কেনো যেন ভালো লাগতো না। প্রথম দিকটায় আমি ছোট বলে আমাকে জোর করতো না কিন্তু কয়েক মাস পর এই নিয়ে একদিন সবাই বলাবলি করতো আমি কেনো কিছু করিনা।
আমি তখন আমার ইচ্ছের কথা জানালাম সবার কাছে।
আমি পড়তে চাই, শিক্ষিত হচ্ছে। সমাজে যারা আমাদের অবজ্ঞা অবহেলা করে তাদের বুঝিয়ে দিতে চাই আমরাও ফেলনা নই আমরাও পারি।
আমার এই ইচ্ছের কথা শুনে কেউ খুশি হোলো কেউ হোলো না। কেউ কেউ হেসেই উড়িয়ে দিলো। কিন্তু কয়েকজন আমার পড়াশোনার দায়িত্ব নিলো, তারা আমায় শিক্ষিত করতে চাইলো।
স্কুলে ভর্তি হতেও অনেক বাধার সন্মুখীন হতে হয় অনেক স্কুল হন্যে হয়ে ঘুড়তে হয় তারপর এক স্কুলে ভর্তি হই, স্কুলের ছেলে মেয়েরা আমার সাথে খুব একটা মিশতো না। এক জোট হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতো, আমার ব্রেঞ্চে কেউ বসতো না।
খুব ভালো নম্বর নিয়ে স্কুল কলেজের গন্ডি টা পাড় করি। স্বপ্ন ছিলো ডাক্তার হবো, কিন্তু সেটা পূরণ হবে কি না তা ধন্ধই ছিলো। কারন হিজড়া দের এতো টা উপার্জন হয়না যা দিয়ে কেউ কে ডাক্তারি পড়ানো যায়।
আমি হার্টের ডাক্তার হতে চাইতাম, কারণ আমি দেখতে চাইতাম যে মানুষের হৃদয় কি করে এতোটা নির্মম হতে পারে।
আমার স্বপ্ন অধরাই হয়ে যেতে বসেছিল। কিন্তু তা হতে দেয়নি এই মহল্লার দুজন হিজড়া। তারা দুজন তাদের দুটো কিডনি এক বড় হাসপাতালে এক সংস্থার মাধ্যমে ডোনেট করেন এবং তার মূল্য স্বরূপ বলা হয় আমার ডাক্তারি পড়ার সমস্ত খরচ যেন দেওয়া হয়। জানি না কারা সেই কিডনি নিয়েছিল যেই সমাজে হিজড়াদের কোন দাম নেই সেই সমাজে তাদের কিডনির দাম আছে কি না।
যাই হোক, সেই দুজন হিজড়ার নাম বলতেই হয় ফুলমনি আর মঞ্জুলিকা। তারা আমার দু হাত ধরে কেঁদে কেঁদে বলেছিলো,
স্বপ্ন দেখা বন্ধ করিস না বেটি।
তোর স্বপ্নই আমাদের স্বপ্ন, তুই এক মস্ত বড় ডাক্তার হলে আমাদের সবার পরিশ্রম সার্থক রে বেটি। তুই প্রমাণ করিস আমাদেরও সমাজে অধিকার আছে।
তারপর আমি লন্ডন যাই আর ডাক্তারি পড়া শেষ করে দেশে ফিরেছি। আজ আমি সবার সামনে দাঁড়িয়ে আছি একজন সফল ডাক্তার। হ্যাঁ আমি প্রথম হিজড়া যে আজ ডাক্তার হয়েছি।
আর এখন সময় এসেছে সেই শূন্যস্থান পূরন করবার। আমার নাম স্বপ্নজয়া।
স্বপ্ন দেখেছিলাম ডাক্তার হওয়ার, স্বপ্ন দেখতাম আকাশে ওড়ার, স্বপ্ন দেখতাম সমাজে হিজড়াদের যেন অবজ্ঞার চোখে না দেখে স্বপ্ন দেখতাম সমাজে এক যোগ্য উদাহরণ হওয়ার তাই আমার নাম আমি নিজেই দিয়েছি স্বপ্ন কারণ আমার পরিবারের কেউ আমার নামকরণ টাই যে করেনি। আর জয়া আমার মায়ের নাম। শুনেছি দাদু দিদিমারা আদর করে রেখেছিলো কিন্তু ওই বিত্তশালী পরিবারে বিয়ে হওয়ার পর মায়ের নাম পালটে রাখা হয় অরুণিমা। জয়া নাম টা হারিয়ে গিয়েছিলো তাই আমি আমার নিজের নাম রেখেছি স্বপ্নজয়া।
এতক্ষণ ধরে দীর্ঘ বক্তৃতা রাখার পর চোখের জল মুছে স্মিত হাসলো স্বপ্নজয়া।
-আর আপনার পদবী। পিতৃপরিচয়। একজন সাংবাদিক দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো।
-এখনো কি পিতৃপরিচয়ের দরকার আছে বলে আপনার মনে হয়। আর পদবী?
আমি চাই না সেই বংশের পদবী আমার নামের শেষে জুড়ুক।
-আপনার এখন পরবর্তী পদক্ষেপ কি?
অন্য এক সাংবাদিক জিজ্ঞেস করলেন।
-সমাজে যেন অসহায় হিজড়াদের জন্য কিছু করতে পারি।
সমাজে অনেক সমাজসেবক আছে যারা অনেক সমাজ সেবার কাজ করে থাকেন কিন্তু হিজড়া দের জন্য কেউ ভাবেনা। হিজড়ারা শুধুই অবজ্ঞার বস্তু।
আর সেই ভাবনা টা আমি ভাববো।
-হিজড়া বলতে নিজেকে কেমন বোধ হয় আপনার? অন্য এক সাংবাদিক জিজ্ঞেস করলেন।
-একটু কষ্ট হয়। আমি আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো নই। কিন্তু আমি নিজের এই অভিশপ্ত জীবনকে সুন্দর ভাবে সাজাতে পেরে আমি নিজেকে নিয়ে গর্বিত বোধ করি।আমি হিজড়া এতে আমার কোন দোষ নেই। ভগবান আমায় যেমন জীবন দিয়েছেন আমি এতে খুশি। আর আমি স্বপ্নজয়া,
আরো অনেক অনেক স্বপ্নজয়া কে তৈরী করবো এই আমার প্রতিজ্ঞা, ধ্যান জ্ঞান।
স্টেজ থেকে নেমে স্বপ্নজয়া ঘর ছেড়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত সকলেই জোড়ে হাততালি দিয়ে উঠলো।