লকডাউন (২০)
লকডাউন (২০)


মৃত্যুর গন্ধ মাখা একটা সময়। চারপাশে শত সহস্র ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাইরাস আমরা ভীত সন্ত্রস্ত। কত মানুষ বাড়ি ফিরতে পারেনি, বিভিন্ন জায়গায় আটকে আছে। আবার অনেক মানুষের কোনোদিন ফেরা হবেনা বাড়ি, প্রিয়জনের সঙ্গে শেষ দেখাটুকুও হবেনা। হাসপাতালে না পৌঁছনোর জন্য কতজনের জীবন থেমে যাবে। আবার হাসপাতালে থাকার জন্য ভাইরাসের সংক্রমণে কত জনের জীবনে যবনিকা নেমে আসবে কে জানে ! কত সন্তান শেষবারের মত দেখতে পাবেনা তাঁর মাকে অথবা বাবাকে। হাতে হাত রাখতে পারবে না, থাকতে পারবে না পাশে জীবনতরী পেরিয়ে যিনি চলে গেলেন তিনি তো গেলেন কিন্তু যিনি অথবা যে রয়ে গেল, শেষবারের মত পৌঁছতে পারলো না লগডাউনের জন্য ,সেই না পৌঁছতে পারার যন্ত্রণা সারা জীবন সেই মানুষটি বয়ে বেড়াবে। শুধু সময় পারবে একটু একটু করে কষ্টের উপর প্রলেপ লাগাতে।
কত ডাক্তার ,কত স্বাস্থ্য কর্মী নিজের কর্তব্য করতে গিয়ে সংক্রমিত হয়েছেন বা প্রতিনিয়ত হচ্ছেন। সেই সব মানুষেরা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে। তাদের পরিবার দিশেহারা। পরিবারের সদস্যরা সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আশায় হোম কোয়ারেন্টাইন। একটা অশুভ সময় বাতাসে শুধু কান্না। প্রিয়জন হারানোর কান্না, জীবিকা হারানোর কান্না, শেষ সময়ে প্রিয়জনের কাছে পৌঁছাতে না পারার কান্না। মানুষের মধ্যে ভয়ের সংক্রমণ ঘটছে। অসুস্থ মানুষের পাশে সংক্রমণের ভয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষ দাঁড়াতে ভয় পাচ্ছে । সব সময়, সব দেশে, সব কালে ব্যতিক্রমী মানুষ অথবা মানুষেরা নিশ্চই আছেন। তবে তাঁরা হাতে গোনা। মানুষ ভয়ে মানবিকতা হারচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকুক কিন্তু মানসিক দূরত্ব কমে গেলে মানুষ তাঁর মানবিকতা থেকে বিচ্যুত হবে।