লকডাউন ( ১৬ )
লকডাউন ( ১৬ )
আবার একটা নতুন দিন, নতুন সকাল। মেয়ের স্কুল থেকে অনলাইন ক্লাস চলছে। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে কখনো বসে, কখনো আধ শোয়া হয়ে আবার কখনো হাঁটাহাঁটি করতে করতে আবার কখনো খেতে খেতে চলছে অনলাইন ক্লাস। আজ থেকে আবার তার অনলাইনে ক্যারাটে ক্লাস হবে। ভাবা যায় মাঠ নেই ক্লাস আছে। যে যার ঘরে বসে করবে – ইচ,নি,সান, সি,গো, রুক, সিচি, হাচি,খো,জো । উফ জাপানি ভাষা শুনে আমার ঘরের দেওয়ালগুলো ঝুরঝুর করে না ভেঙে পড়ে। ডাউনের আগে ক্যারাটে ক্লাস মানে বিশাল ভারি সাদা জোব্বা পড়ে কোমরে বেল্ট বেঁধে বিশাল ভারি ব্যাগ টানতে টানতে মাঠে ছোটা। একটু দেরী হলে আর রক্ষে নেই রাজেন সেন্সি পুরো মাঠ ফ্রগ জাম্প দেওয়াবে। ভুল হলেই পটাপট পিঠে বেল্টের বারি। সেই আওয়াজ শুনে বংশ পরম্পরায় বাস করা মশারা যারা ওডোমস কে পাত্তা দেয়না তারাও বেল্টের আওয়াজকে না পাত্তা দিয়ে পারে না।তারা খনিকটা দূরে উড়ে গিয়ে কোনো সুন্দরী বৌদির হাতে গিয়ে বসবে। তার দূর্দশা দেখে মাঠের কোনো দিদি হয়ত ধূপ হাতে দেশলাই খুঁজবে। এটাতো মাঠ না একটা গোটা ভারতবর্ষ যেখানে নান- চাকুতে বৃষ্টির মাথা ফুলে গেলে নাসুদা বরফ নিয়ে ছুটে আসেন আবার মিরাজের ব্যাথা লাগলে কেয়াদি অথবা সুজাতাদি কিংবা ইতুদিরা ছুটে আসে। তাই দেশলাই কোনও না কোনো দাদা দিদিদের হাতে তুলেই দেবে। ভাবতে ভাবতে হেসেই ফেললাম । আজ ক্যারাটের অভিনব অন লাইন ক্লাস। যেখানে স্যার নিজের বাড়িতে শেখাবে আর ছাত্র- ছাত্রীরা নিজের বাড়িতে। ছাত্র ছাত্রীরা যত ভুল করুক আর স্যার যতই রাগে দাঁত কিড়মিড় করুক মনের আনন্দে পেটাতে তো পারবে না। দেখতে দেখতে বিকেল হয়ে আসে। মেয়ে সেজে গুজে ক্যারাটে ক্লাসের জন্য রেডি। ঘরের রাতে শুয়ে জিগ্যেস করি ক্যারাটে ক্লাস কেমন হল? মেয়ে হেসে বলে -কেউ ভিডিও অফ করে রাখায় সেন্সি দেখতে পাচ্ছিল না ক্লাস ভালো হয়েছে । অনেক দিন পর ব্যায়াম করায় হাতে পায়ে ব্যথা হয়েছে। দেখি মেয়ে শুয়ে শুয়ে গাইছে- ‘সেন্সি সেহত ক্যা লিয়ে তু তোঁ হানিকারক হ্যায় '।