লাইব্রেরীর অদ্ভুত বইটা
লাইব্রেরীর অদ্ভুত বইটা


দীপক লাইব্রেরীর দিকে যাচ্ছে। রোজ এই সময়টা বই পড়ে কাটায়। এখানে বিভিন্ন ধরনের বই পাওয়া যায়। তাই যখন যে ধরনের বই ইচ্ছা পড়া যায়। কাঁধে ব্যাগটা ঝুলিয়ে নিয়ে লাইব্রেরির সিঁড়িতে পা রাখল দীপক। ধীরে ধীরে উঠে গেল ভেতরে।
ভেতরে ঢুকতেই লাইব্রেরিয়ান ওকে দেখে মুচকি হাসি দিল। দীপক যেহেতু রোজ আসে তাই একটা পরিচিত মুখ। অন্য অনেকেই তার কাছে পরিচিত। কারণ তারা রোজ না আসলেও মাঝে মাঝে আসে। তবে দীপকের মত কেউ আসেনা।
আজকে একটু বেশি ফাঁকাই মনে হলো লাইব্রেরীটা। তেমন কোনো অনুষ্ঠান আজকে নেই। তাই কি কারণে ফাঁকা সেটা দীপকের মাথায় এলো না। ও গিয়ে একটা টেবিলে বসলো। বেশিরভাগ দিনই এখানে বসে। তবে যেদিন এখানে জায়গা না পায় সেদিন অন্য জায়গায় বসতে হয়।
আজ আর কেউ আসবে বলে মনে হয় না। আসার হলে এতক্ষণ এসে যেত। দীপক একটা বই তাক থেকে নামিয়ে নিয়ে টেবিলে বসলো। কিছুক্ষণ পড়ার পর সেটি আবার জায়গায় রেখে দিল। তারপর ভাবল এদিকে তো রোজই বসে। আজ একটু অন্য দিকে বসা যাক। তাই ও লাইব্রেরীর শেষ দিকটায় চলে গেল। এদিকটা একটু বেশি নিরিবিলি। আর আলোটাও কম।
ব্যাগটা রেখে তার থেকে একটা বই নামালো। বইটার উপরের মলাট সাদা কোন নাম লেখা নেই। এখানে সব বই এরকম কিনা দেখার জন্য পাশ থেকে আরো কয়েকটা বই নামালো। কিন্তু বাকি বই গুলো সব ঠিকঠাকই আছে। এর মধ্যে এরকম একটা বই কিভাবে ঢুকলো ওর মাথায় এলো না।
দীপক বাকি বই গুলো তুলে রেখে ওই বইটা টেবিলে নিয়ে পড়তে শুরু করল। বইটার বিষয়বস্তু ঠিক বুঝতে পারছে না। বিভিন্ন রকমের বিষয় নিয়ে বইটা লেখা। পড়তে পড়তে হঠাৎ মনে হল বইয়ের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছে দীপক। সচেতন মস্তিষ্কটা হঠাৎ অচেতন পৃথিবীতে হারিয়ে যাচ্ছে।
লাইব্রেরী বন্ধ হওয়ার সময় হয়ে গেছে। লাইব্রেরিয়ান ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বন্ধ করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। তার আগে চারদিকে একবার ঘুরে দেখবে কেউ আছে কিনা। সবাই চলে গেছে। কিন্তু যে টেবিলটায় দীপক বসেছিলে সেখানে একটা সাদা রঙের বই পড়ে রয়েছে। পাশে একটা চেয়ারে ব্যাগ পড়ে আছে। ব্যাগটা দেখে চিনতে পারল লাইব্রেরিয়ান। ব্যাপারটা কি কিছুক্ষণ ভাবতে লাগলো সে।
এই বইটা কোথা থেকে এলো সেও বুঝতে পারছেনা। উল্টেপাল্টে দেখে বইটা আবার তাকে তুলে রাখলো। তারপর ব্যাগটা নিয়ে চলে গেল তার কাউন্টারে। কাল যখন দীপক আসবে তখন আবার তাকে দিয়ে দেবে।
কিন্তু দীপক কি আদৌ আসবে? নাকি হারিয়ে গেল কোথাও?