পরিবর্তন
পরিবর্তন
কমলেশ গ্রামে থাকে। লেখাপড়ায় ভালো থাকায় পড়াশোনা শেষ করে চাকরি পরীক্ষা দিয়ে বাইরে চাকরি পেয়ে গেছে। এখন তাকে সেখানে যেতে হবে। তারই প্রস্তুতি চলছে। যেখানে বড় হয়েছে এখন সেই গ্রাম ছেড়ে দিতে হবে। কিছু করার নেই। বড় কিছু হতে গেলে ছোটো ছোটো খাটো আবেগ বিসর্জন করতে হয়।
গ্রামের সবুজ মাঠ আর ধানক্ষেত পাশে রেখে হেঁটে চলেছে সে রাস্তায়। সবুজ ঘাসে ঢাকা মাটির রাস্তা। পায়ের চাপে সেই সবুজেরা মাথা নুইয়ে দিচ্ছে কিন্তু পরক্ষনেই আবার মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। এভাবেই গ্রামের সবকিছুকে সব স্মৃতিকে পায়ে মাড়িয়ে দিয়ে এগিয়ে চলেছে সে শহরের দিকে।
বাস যখন শহরের রাস্তায় ঢুকলো তখন চারপাশে শুধু কৃত্রিমতা ছাড়া কোন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জিনিস নেই। সবই কেমন যেন মানুষের নিজের হাতে তৈরি নিজেকে মনোরঞ্জনের জন্য। প্রকৃতির নিজস্ব কোন ছোঁয়া তাতে নেই। আশেপাশে যে পাহাড় সেগুলো কেটেও রাস্তা বানিয়ে ফেলেছে মানুষ। তার উপর দিয়ে তৈরি করেছে পিচের কালো রাস্তা। প্রকৃতির সবখানেই থাবা বসিয়েছে মানুষের হাত।
গন্তব্য স্থানে পৌঁছালে কমলেশ। বাস থামতেই সে নেমে পড়ল সেখান থেকে। যে সবুজ ঘাস মাড়িয়ে সে এখানে এসেছে এখানে নামার পর পায়ের নিচে কোমলতা টের পেল না। শক্ত কঠিন কালো এক পিচের রাস্তা থাকলে তার পায়ে।
অন্য এক জগতে প্রবেশ করল কমলেশ যেখানে সবুজকে বাদ দিয়ে এক অন্য জগৎ গড়ে তুলেছে মানুষ। যে জগৎ ছেড়ে সে এসেছে এখানে তার পরিপূরক কি হতে পারে এই জগৎ? নিজের মনকে প্রশ্ন করে কমলের।