দুই মেরু
দুই মেরু


আকাশে ভীষণ মেঘ করেছে। বৃষ্টি হবেই আজকে। দোলন ছাদে উঠে গেল। বৃষ্টি এলে আজকে ভিজবে। অনেকদিন বৃষ্টিতে ভেজা হয়না ওর। তাই মনটা আনন্দে ভরে উঠেছে। মেঘের গুরুগুরু ডাক শোনা যাচ্ছে। পাখিরা সব তাদের বাসায় ফিরছে। বৃষ্টির ফোঁটা পড়তে শুরু করেছে। দুই হাত দুদিকে মেলে দিয়ে দাঁড়ালো দোলন। মুখটা উপরে তুলল। বৃষ্টির ফোঁটা পড়লো ওর চোখেমুখে। চোখ দুটো বন্ধ করল ও। ধীরে ধীরে বাড়তে লাগলো বৃষ্টি। আর তাতে পুরো ভিজে গেল দোলন। আনন্দে নাচতে লাগলো ও। যেন বৃষ্টিতে ভেজা ময়ূরের আনন্দ প্রকাশ পাচ্ছে।
দোলনদের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরত্বে জবার বাড়ি। খুব গরীব ওরা। থাকার মত কোন রকম একটা ভাঙা ঘর। উপরের চালটা ত্রিপলের। তাও শতচ্ছিন্ন। পয়সার অভাবে সেটা ঠিক করতে পার
েনি ওর বাবা-মা। তাই বর্ষার সময় কষ্টে কাটাতে হবে।
আজ হঠাৎ বৃষ্টি এসে যাওয়ায় ওপর থেকে ঘরের মধ্যে টুপটাপ করে বৃষ্টির জল পড়ছে। ঘরে যা বাসনপত্র ছিল যেখানে যেখানে জল পড়ছে তার নিচে রেখে দিয়েছে। জল যাতে সারা মেঝেতে ছড়িয়ে না পড়ে তাই এই ব্যবস্থা। তাহলে রাতে শোবার অবস্থা থাকবে না। বাসনগুলো জল ভর্তি হয়ে গেলে জলটা বাইরে ফেলে দিতে হচ্ছে। নইলে উপচে পড়ে আবার মেঝে ভিজে যাবে।
জলে ভিজে গেলে কষ্টের শেষ থাকবে না। ঠান্ডা সর্দি লেগে শরীর খারাপ হবে। তখন ডাক্তারের খরচ জোগাড় করতে আবার কারো কাছে হাত পাততে হবে। তাই জলে ভেজা থেকে দূরে থাকছে জবা আর ওর পরিবারের সবাই।
জবার চোখদুটো বাসনপত্রের দিকে যার মধ্যে টুপটাপ করে জল পড়েই চলেছে।