ল ক ডা উ নে র প রে র প র্ব
ল ক ডা উ নে র প রে র প র্ব


আরেকটা সকাল চুপিসারে এসে আমার জীবনের সদর দরজায় পর্দা সরিয়ে উঁকি দিয়ে জানান দিলো আরেকটা নতুন দিন এসে গেছে। বৈচিত্রহীন,লক্ষহীন, গতিহীন একটা জীবন। আকাশে –বাতাসে এক অদ্ভুত ভয়। কাল কী হবে কেউ জানেনা! এক অনিশ্চিত জীবন নাকি সব ঠিক হয়ে যাবে। স্বাভাবিক হয়ে যাবে। সাময়িক মৃত্যুর ভয় কাটিয়ে মানুষ আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে। মৃত্যু ভয়ে মানুষ আপাতত চার দেওয়ালের মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ করে রেখেছে কিন্তু ব্যতিক্রম আছে। যারা লগডাউনের মধ্যে বেশ একটা ছুটি ছুটি গন্ধ পাচ্ছে। কেউ ছুটির আমেজে গুচ্ছের বাজার করার জন্য বাজারে ভিড় বাড়াচ্ছে। নিজের সঙ্গে অন্যান্য মানুষেরো বিপদ বাড়াচ্ছে। তবে জীবন ধারনের জন্য যেটুকু প্রয়োজন সেটুকু কিনতেই হবে। যে সব মানুষ দিন আনে দিন খায় তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। প্রশাসন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও যাদের পেশায় নিশ্চয়তা নেই তাদের পাগল পাগল অবস্থা। সাত পাঁচ চিন্তা করতে করতে উঠে পড়ি বিছানা ছেড়ে।
বাইরে বেড়িয়ে আসতেই সুন্দর হাওয়া মনের চিন্তাগুলোকে চুটকি মেরে উড়িয়ে দিল। দূরে কোকিল ডাকছে। এই আবাসনের আবাসিকারা দূরত্ব বজায় রেখে গেট থেকে প্যাকেটের দুধ ও খবরের কাগজ সংগ্রহ করছেন। বাড়ি ফিরে দৈনন্দিন কাজে মন দিলাম। চুপিসারে সকালের পর দুপুর এবং দুপুরের পর বিকেল উঁকি দিল । টিভিতে বাড়ির সবাই সিনেমা দেখতে ব্যস্ত। আমিও কাজের ফাঁকে ফাঁকে টিভির পর্দায় চোখ বোলাই। আবার কখনো কখনো খবর দেখে মনের ভিতরের ভয় বাড়তে থাকে। দিন শেষে রাত্রি আসে । আমি এখন ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে। মানুষজন দেখা যাচ্ছে না বললেই চলে। তবুও দাঁড়িয়ে আছি। সারদিন ঘরের ভিতর গুমোট পরিবেশে দমবদ্ধ লাগে। বাইরের মুক্তো হাওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছি। দূরে বিড়াল কাঁদছে। মনে কু -ডাকল। যদিও এই সব কুসংস্কারে বিশ্বাস করিনা তবে আমাদের আবসনের এক আবাসিকা বহু বছর অসুস্থ।পাঁচ বছর বোধ হয় স্বামী মারা গেছেনও। দুই বিবাহিত মেয়ে আছেন। তারা আয়ার মাধ্যমে দেখাশুনো করেন। মেয়েরা যথা সাধ্য চেষ্টা করেছেন। সম্প্রতি কিছুদিন নার্সিহোমে ভর্তি ছিলেন। লগডাউনের আগেই নার্সিহোম থেকে ফিরে আসেন। আজকেই শুনলাম ভালো নেই। কী হবে কে জানে। ভাবতে ভাবতে ঘরে ফিরে আসি। অতিরিক্ত চিন্রাএ ভারে দু চোখের পাতায় ঘুম চলে আসে।