কল্পনা এবং বাস্তব
কল্পনা এবং বাস্তব
মেয়েটি এখন কলেজ ছাত্রী। নাম তার পারমিতা। যদিও রাজকুমারী নামে বন্ধুমহলে প্রসিদ্ধ। রাজকুমারী একজন বাস্তববাদী মেয়ে। তার দুই বন্ধু রঞ্জনা আর প্রিয়ার মধ্যে একদিন ঝগড়া হয়। তারপর তারা দুজন কথা বলা বন্ধ করে দেয়। এই ঘটনাটি রাজকুমারী বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করে। একদিন রাজকুমারী পুরো ব্যাপারটা জানতে পেরে দুই বন্ধুকে বলে,"তোরা কত বোকা! তোদের বন্ধুত্ব অনেক দিনের আর তোরা সাধারণ কারণে বন্ধুত্ব নষ্ট করে দিচ্ছিস?" এখন রঞ্জনা ও প্রিয়া একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকে। কিন্তু রাজকুমারী বলে ওঠে,"তোরা সম্পর্কের মর্মই বুঝিসনি। একটা সম্পর্ক গড়ে তোলা আর তাকে টিকিয়ে রাখা বড়ো কঠিন কাজ আর সম্পর্ক ভেঙে ফেলতে এক সেকেন্ড। কিন্তু তোরা এতদিন সেই কঠিন কাজটি করে এসেছিস।" তারপর দুজনকে রাজকুমারী প্রশ্ন করে,"দুজনে কথা না বলে ভালো আছিস? এসব রাগ, অভিমান বন্
ধুদের মধ্যে হয়, কিন্তু সেগুলি নিজেদেরকেই মিটিয়ে নিতে হয়। তাতেই বন্ধুত্বের জয় হয়।" এই কথাগুলি শুনে রঞ্জনা আর প্রিয়া কেঁদে ফেলে আর দুজনেই পূর্বের মতো বন্ধু হয়ে ওঠে। রাজকুমারীর এই বাস্তববাদী চিন্তা-ধারা অসাধারণ। আবার এই রাজকুমারীই কখনো কখনো কল্পনার জগতে বিরাজ করে। সে ভাবে তার এক সুন্দর জীবনসঙ্গী হবে। যার সাথে নিজের জীবনটা উপভোগ করবে এবং সমাজের মানুষদের জীবনের কথাও ভাববে। শুধু তাই নয়, তার কল্পনার জগতে ভেসে ওঠে এমন একটি সমাজ যেখানে প্রত্যেক নারীরা তার মতো সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচবে। সেই সমাজ, যে সমাজে নেই কোন নারী-পুরুষের দ্বন্দ্ব, আছে শুধু শান্তি, প্রেম ও ভালোবাসা। রাজকুমারীর এই ভাবনাতে কল্পনা ও বাস্তবের অসাধারণ মেলবন্ধন ঘটে। মানুষ প্রথম কোনো কাজ করার জন্য কল্পনা করে, তারপর তা বাস্তবে রূপায়িত করে। রাজকুমারীও তার ব্যতিক্রমী নয়।