Unmask a web of secrets & mystery with our new release, "The Heel" which stands at 7th place on Amazon's Hot new Releases! Grab your copy NOW!
Unmask a web of secrets & mystery with our new release, "The Heel" which stands at 7th place on Amazon's Hot new Releases! Grab your copy NOW!

arijit bhattacharya

Horror Classics

3  

arijit bhattacharya

Horror Classics

কালরাত্রি

কালরাত্রি

3 mins
755


বহু দিন পরে নিজের দেশের বাড়িতে ঘুরতে এসেছে রক্তিম। দেশের বাড়ি মানেই দিগন্তবিস্তৃত চোখ জুড়ানো ধানের ক্ষেত, অতিপ্রাচীন বট,অশ্বত্থ গাছ, বাড়ির সংলগ্নই বড়ো দীঘি ,গ্রামের এককোণায় থাকা চণ্ডীমন্ডপ । প্রত্যেক বাড়িতেই নিমগাছ,তুলসীবেদী, মাঝে মাঝে পথের দুপাশে শেওড়া ও বাবলা গাছ, ঘন অন্ধকার বাঁশবাগান ও গ্রামসংলগ্ন এক মহাশ্মশান।আছে গ্রামের ধার দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতী নদী,আর আছে গ্রামের এক পাশে গভীর বাঁশবাগান সংলগ্ন অঞ্চলে মা কালরাত্রির মন্দির। মা কালরাত্রি নবদুর্গারই এক রূপ,প্রকারান্তরে সৃষ্টিকল্পে এনার আবির্ভাব হয়। ইনিই আদিপরাশক্তি। যাই হোক,দেশের বাড়িতে রক্তিম বহুদিন পরে আসায় পরিবারের ও আত্মীয় স্বজনদের আনন্দ আর ধরে না। কোনো দিন দীঘি থেকে ছিপে ধরা তাজা রুই,কোনো দিন দেশী মুরগী কি হাঁসের মাংস -ভালো খাওয়া দাওয়া একটা না একটা লেগেই আছে।


এসময় হঠাৎই রক্তিমকে নিমন্ত্রণ করে বসল তার প্রাণের বন্ধু কৃষাণু। কৃষাণুদের বাড়িতে আজ জোর খাওয়া দাওয়া। রাতের বেলায় নিমন্ত্রণ,অনেক দিন পরে কৃষাণুদের বাড়ি যাবে রক্তিম। রক্তিমের মা রক্তিমকে বারণ করতেও পারছেন না,বাধাও দিতে পাচ্ছেন না। যেতে পড়বে চৌধুরীদের বাঁশবাগান,বাবলাতলা। জায়গাগুলো ভালো নয়,প্রচুর ভয়ের গল্প শোনা যায় ঐ জায়গাগুলি নিয়ে। ওখানেই আছে এক পরিত্যক্ত কবরস্থান। যাই হোক,ছেলে অনেকদিন পরে বন্ধুর বাড়িতে যাচ্ছে। ভগবানের ভরসায় রক্তিমকে ছাড়লেন মা। যাই হোক,কৃষাণুদের বাড়িতে প্রচুর খাওয়া দাওয়া ও হৈহুল্লোড়ের পর ফিরে আসছে রক্তিম। আজকের রাত আবার পূর্ণিমার রাত। পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় বাঁশবাগানকে কেমন যেন রোম্যান্টিক বলে মনে হচ্ছে।


"বাঁশবাগানের মাথার ওপর চাঁদ উঠেছে ঐ/মাগো আমার শোলক বলা কাজলা দিদি কই!" ছোটবেলায় কবিতার লাইন মনে পড়ে গেল রক্তিমের। গাঁয়ের স্কুলে সন্তোষবাবু পড়াতেন। কিন্তু ,রক্তিমের এই রোম্যান্টিক ভাব বেশিক্ষণ ঠিকল না,কারণ কিছুক্ষণ পরেই বাঁশবাগান থেকে ভেসে এল এক অপার্থিব পাশব গোঙানি। বুকের রক্ত জল হয়ে গেল,কিন্তু বাঘ তো এদিকে নেই। এটা কোন্ জন্তুর গর্জনের শব্দ সেটা জানার জন্য বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল রক্তিম। আর কিছুক্ষণ পরেই দেখতে পেল সেই গর্জনের মালিককে। না মানুষ ,না জানোয়ার। দীর্ঘকায় দুপেয়ে মানুষের মতোই,সামান্য ঝুঁকে আছে। কিন্তু কদাকার মুখটা ভাল্লুক বা নেকড়ের মতো,লাল চোখে আদিম জিঘাংসা,কুকুরের মতো লম্বাটে কান,রোমশ শরীর। ষষ্ঠেন্দ্রিয় বলে উঠল রক্তিমকে পালাতে হবে।


দিগবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পালাতে লাগল রক্তিম,বেশ বুঝতে পারছে পথভ্রষ্ট হয়েছে। পিছনে শুকনো পাতার ওপর ভারী পায়ের মচমচ শব্দে বুঝতে পারছে শিকারী ছুটে আসছে। এই তো সামনেই এক ভগ্নপ্রায় মন্দির । এই মন্দিরের ভেতর আশ্রয় নিলে কেমন হয়! জোরে হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ঐ দিকে নরপিশাচ তার কাছাকাছিই চলে এসেছে। রক্তিম আর না ভেবে মন্দিরের চাতালে উঠে পড়ল। হঠাৎই ঘটল সেই আধিদৈবিক ঘটনা। মন্দিরে অপূর্ব ঘন্টাধ্বনি শুরু হল। এক দিব্যজ্যোতিতে ভরে গেল চারদিক। ঐ তো এক দেবীমূর্তি,উন্মুক্তকেশা চতুর্ভুজা,শ্যামবর্ণা ,অনেকটা মা কালীর মতোই । ইনিই মহাকালী,কালরাত্রি। দেবীর বাহন শৃগাল। এদিকে চাঁদের দিকে তাকিয়ে অদ্ভুত স্বরে ডেকে উঠল সেই পিশাচ। তারপর অনেকটা চতুষ্পদ প্রাণীর মতোই লাফ দিল রক্তিমকে লক্ষ্য করে ,কিন্তু তার আগেই ছিটকে গেল মায়ের হাতের দিব্য খড়্গ।মুহূর্তেই সেই ঘূর্ণায়মান খড়্গ পিশাচের শিরশ্ছেদ করে আবার ফিরে এল দেবীর হাতে। ঘটনার ঘনঘটায় স্তম্ভিত রক্তিম। কিন্তু ,মৃত জানোয়ারটার দেহ একটু একটু করে বদলে যাচ্ছে কেন! এ যে পরিণত হচ্ছে মানুষে। আরে,এ যে তারই প্রিয় স্যার সন্তোষবাবু। বাড়ি ফিরে সব কথা মাকে জানাল রক্তিম। কথা ছড়িয়ে পড়ল সারা গ্রামে। গ্রামের মানুষ অবাক,চায়ের দোকানে শুরু হল আলোচনা। সন্তোষস্যার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সত্য,কিন্তু তিনি পিশাচে পরিণত হয়েছিলেন


! তাহলে এর আগে চৌধুরীদের বাঁশবাগান থেকে পূর্ণিমার রাতে যে জানোয়ারের অপার্থিব হিংস্র রক্ত জল করা গর্জন শোনা যেত,সেটা তাদের প্রিয় সন্তোষস্যারেরই! আগের খুনটা তাদের গর্ব সন্তোষস্যারই করেছিলেন! রক্তিমের মা একটাই জিনিস বুঝতে পেরেছেন,খুনী পিশাচের হাত থেকে তার ছেলের প্রাণরক্ষা মা কালরাত্রিই করেছেন। এজন্য পরের দিন তিনি পূজা দিতে গিয়েছিলেন রক্তিমকে নিয়ে,দেবী কালরাত্রির মন্দিরে!


Rate this content
Log in

More bengali story from arijit bhattacharya

Similar bengali story from Horror