মৃত্যুপথযাত্রী
মৃত্যুপথযাত্রী
বাসের জন্য অপেক্ষা করছে শুভময়। বাসস্টপ টা শহরের বাইরে,রাস্তার দুপাশে ঘন জঙ্গল। এই বাসটার এমনিতেই বদনাম আছে,ফরেস্টের সামনে চায়ের দোকানের জয়দা আগেই সাবধান করে দিয়েছিল বাসটার সম্পর্কে, বাসটায় নাকি কোনো সাধারণ মানুষ চড়ে না। জঙ্গলের মধ্যে পিকনিক করতে এসেছিল শুভময় ও তার সঙ্গী বন্ধুবান্ধবীরা।
জয়দা বলেছে, বাসটা নাকি যাত্রীকে তার মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। এই রাত 10-30 র বাস কোথা থেকে আসে,কোথায় যায় কেউ জানে না! এই বাস নাকি সবাইকে দেখাও দেয় না,একমাত্র যেইসব হতভাগ্যদের নিয়তিতে মৃত্যু লেখা থাকে,তাদেরকেই দেখা দেয় । বন্ধুরা আগেই ভয় পেয়ে গেছে,তারা সবাই কাল সকালের বাসে শহরে যাবে। শুভময় এসব গাঁজাখুরি কথায় বিশ্বাস করে না। তার কাল সকালের মধ্যে বাড়ি পৌঁছানো প্রয়োজন।
বিশ্বচরাচর মায়াবী জ্যোৎস্নায় আচ্ছন্ন। অবাক হল শুভময়,রজতশুভ্র চাঁদকে কেমন যেন রক্তাভ বলে মনে হচ্ছে। ডেকে উঠল এক রাত জাগা পাখি। ঠাণ্ডা হাওয়া শরীরে সূঁচ ফুটিয়ে দিচ্ছে। অবশেষে এসে থামল বাস। বাসে উঠল শুভময়। শুধু পেছনে একটা সিটই ফাঁকা আছে, সেখানে বসল সে। যাত্রীরা কেউ কারোর সাথে কথা বলছে না,সবাই মাথা নিচু করে বসে আছে,কেমন যেন এক রহস্যময় পরিবেশ। ভাড়া দিতে গিয়ে কণ্ডাকটারের হাত দেখে চমকে উঠল শুভময়, বরফের মতো ঠাণ্ডা হাতে মাংস বলে কিছুই নেই ,শুধু হাড়।
বাস তীব্র বেগে ছুটে চলেছে,এতো জোরে কোনো বাস ছোটে! পাশ থেকে ফ্যাসফেসে গলায় বলে উঠল শুভময়ের বন্ধু তপন,যে মারা গেছে তিন বছর আগে ।"জানিস তো ভাই,এই বাস আমাদের সবার জীবনেই আসে। যেমন তিন বছর আগে এসেছিল আমার জীবনে,আর এখন এসেছে তোর জীবনে!"