জুতো
জুতো
অলি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে বাবাকে। জুতো পরছে, একটু বাদেই ডিউটি। অলির বাবা ডাক্তার। যাওয়ার সময় হামিও দেয়না আজকাল। গালও টেপে না। তিনদিন হলো গেস্টরুমে শোয়, অ্যাটাচড্ টয়লেটে যায়। মা এসে খাবার রেখে যায়। বাবা খেয়ে প্লেট ধুয়ে বাইরেই রাখে। আজ একটু হেসে বললো, "টাটা বেবি!"
স্কুলও ছুটি; কবে যে খুলবে? ভালো লাগে না এই লকডাউন!
অলির মাও ডাক্তার, প্র্যাকটিস এখন বন্ধ। ওর আয়া টুনিমাসি, রান্নার রূপামাসি, কেউ আসছে না। বাড়িজুড়ে এখন মায়েরই রাজত্ব! ঠাম্মাও এখন এখানে; ওল্ডএজ হোম বন্ধ।
"জানো, তোমার বাবা ছোটবেলায় খুব দুত্তু ছিল!"
"আমার থেকেও?"
"তুমি লক্ষ্মী মেয়ে! তোমার বাবা ওর দাদাইকে খুব ভালোবাসত..."
"ওই দাদাই?"
দেওয়ালে টাঙানো একটা ছবির দিকে আঙুল দেখায় ও।
"না না, ওটাতো তোমার দাদাই। বাবার দাদাইয়ের ছবি এই স্টিলের আলমারিতে রাখা। দেখাবো।"
অলি এসে ঠাম্মার কোলে বসে।
"রোববার বিকেলে হলেই বন্ধুর বাড়ি যেতেন। বাবা তখন তোমার মতন ছোট্ট। কিছুতেই ছাড়বে না। একদিন জুতোগুলো লুকিয়ে রাখলো কোথায়, উনি আর যেতেই পারলেন না!"
"আমিও বাবার জুতো লুকিয়ে রাখব।"
"না অলি, বাবার কোনো জিনিসে হাত দিও না।"
"ভাইরাস?"
"হ্যাঁ।"
সাতসকালে কলিংবেল। অলির মা দরজা খুললো সাফাইওলাকে।
“আপনাদের পিছনের বারান্দার নীচে, ময়লার ভ্যাটে একটা জুতো দেখলাম। মনে হয় দাদাবাবুর! তার পাশে একটা নতুন ঝুলঝাড়ু।“