চিঠি লেখার অভিজ্ঞতা
চিঠি লেখার অভিজ্ঞতা


বেলায় একটা তীব্র অনুভূতি হতো চিঠি লিখতে বসলে। মনের মধ্যে বেড়ে ওঠা হাজার স্বপ্ন, সন্ধানী চোখে অনিঃশেষ প্রশ্ন দানা বাঁধতে শুরু করত। কোনটা ছেড়ে কোনটা লিখি বুঝে উঠতে পারতাম না! কাঁচা হাতে কী এত কথা লেখা যায়?
ভাষা খুঁজে পাওয়া তো দুষ্কর তখন। আর কী লিখব, এটাই বুঝতে পারতাম না! প্রথম চিঠি লেখার অভিজ্ঞতা আজও উজ্জ্বল হ'য়ে আছে হৃদয় মণিকোঠায়। বাবা এমনিতেই খুব রাশভারি ছিলেন। আমাদের সাথে বাবার থেকে মায়ের সখ্যতা অনেক বেশি ছিল। মায়ের সান্নিধ্যে যে কোনও হতাশা কেটে যেত নিমেষেই। আর সবকিছুর মুশকিল আসান ছিল মা।
মায়ের হাত ধরে শিক্ষার আঙিনায় প্রবেশ। আর মায়ের হাত ধরে প্রথম চিঠি লিখতে বসা।
তখন বিজয়া দশমীর পর চিঠি লেখার খুব হিড়িক পড়ত। তাই আমারও খুব ইচ্ছা, গুরুজনদের শুভ বিজয়ার প্রণাম জানিয়ে চিঠি লিখি। যথারীতি মায়ের কাছে হাজির এবং মনোবাঞ্ছা প্রকাশ।
সেই গোটা গোটা অক্ষরে 'শ্রীচরণেষু' লেখার কথা আজীবন মনে থাকবে। আর শেষে 'ইতি' লেখার অভিজ্ঞতা! কতবার মাকে জিজ্ঞেস করেছি যে 'ইতি' কেন লিখতে হয়? অসীম ধৈর্য্য নিয়ে মা বুঝিয়েছিলেন ইতির তাৎপর্য।
পরবর্তীতে অজস্র চিঠি লিখেছি নানান ধরনের। কিন্তু সেই প্রথম চিঠি লেখার স্বাদই আলাদা।