চিকেনপক্স সম্পর্কিত কিছু কথা
চিকেনপক্স সম্পর্কিত কিছু কথা
চিকেন পক্সের সিজিন শুরু হয়ে গিয়েছে।যদিও এটি ভাইরাস ঘটিত রোগ তবু বসন্তকালের শুরুতে চিকেনপক্স এর সংক্রমণ বেশি হয়। চিকেনপক্স রোগের কারণ-Varicella zoster virus. চিকেনপক্স হলে চিকিৎসার সাথে সাথে স্নান করা বারণ(কারণ এক্ষেত্রে একটু ঠাণ্ডাতেই গ্লান্ড ফুলে যায়,কানে রস হয়,পক্সের গুঁটিতে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভবনা থাকে ),ঘরের ভেতর মশারি টাঙিয়ে সোয়ার ব্যবস্থা (যাতে রোগটি সহজে না ছড়াতে পারে)করতে হবে, তেল-মশলা কমযুক্ত নিরামিষ খাবার(আমিষ খাবার রোগের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়)খাওয়াই ভালো।রুগী যতদিন না সুস্থ হয়ে উঠছে ততদিন ঘর থেকে বেরোনো বারণ কারন এ ছোঁয়াচে রোগ সহজেই একজনের কাছ থেকে অন্যজনের কাছে ছড়িয়ে যেতে পারে।অনেক সময় বাড়ির লোকজন চিকেনপক্স এ জলঢুলি শুকিয়ে গেলেই রুগীকে একটা দেশলাই বক্স দিয়ে দেয়, তাতে শুকনো আঁশের মতো অংশগুলো রাখার জন্য,এই আঁশের অংশগুলোই অন্যের গায়ে লেগে সংক্রমণ ছড়ায়,পরে দেশলাই বক্সটি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া উচিত। যদিও এখন রোগীদের অসাবধানতার জন্য ও বাড়ির মধ্যে কয়েকদিন আলাদা ভাবে না থাকার জন্য, ছোঁয়াছুঁয়ির কারনে সারাবছর কম-বেশি চিকেন পক্সের সংক্রমণ লেগেই থাকে।এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সঠিক চিকিৎসার খুব প্রয়োজন।সহজে যাতে চিকেনপক্সের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির করা যায় তার জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।প্রথমত আমাদের বংশপরম্পরায় অর্জিত জ্ঞান থেকে কিছু খাবার খাওয়া ভালো বিশেষ করে যেগুলো এই সময় হয় যেমন কচি নিমপাতা,সজনে ফুল,সজনে ডাঁটা।
সেই সঙ্গে Malandrinum 200 নামক হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনটি সপ্তাহে দুদিন করে তিন সপ্তাহ খেলে ৮০% চিকেনপক্স প্রতিরোধ করা যায়।চিকেনপক্সের ইনকিউবেশন পিরিয়ড ১০-২৩ দিন(গড় ১৪-১৬ দিন)মানে একজন চিকেনপক্স রোগীর সংসর্গে আসার ১০-২৩ দিন পর চিকেনপক্সের লক্ষণ বা জলঢুলি গুলো বেরোয়।এর চরিত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে ম্যাকিউল, প্যাপিউল, ভেসিক্য
াল ও পাসটিউল এর রূপ নেয়।প্রথমে জলঢুলি গুলো মুখমন্ডলে ও বুক,পেট,পিঠে দেখা দেয় ধীরে ধীরে সারা শরীরে দেখা দেয়।চিকেনপক্স বেরোনোর ১-২ দিন আগে থেকে হালকা জ্বরজ্বর ভাব,সারা শরীরে লাল লাল ছোপ দেখা দেয়,সঙ্গে সারা শরীরে হালকা জন্ত্রনা,মাথা জন্ত্রনা, দুর্বলতা দেখা দেয়।চিকেনপক্সের ভাইরাসের সংক্রমন হয়ে গেলে কোন প্রতিষেধক কাজ করে না প্রতিষেধক নিলে কষ্ট কিছুটা কম হয়। ডোজের জন্য পরিচিত কোন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নিন।ডোজ হিসেবে কোন চিকিৎসকের কাছ থেকে নিলে আরও ভালো হয়।
তবু ডোজ সম্পর্কে কিছু আলোচনা করলাম।
১ ডোজ = তরল ১ ফোঁটা প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য।৫-১৮ বছর পর্যন্ত হাফ ফোঁটা, ৫ বছরের নিচে ১/৪ ফোঁটা।সিল ফাইল থেকে র মেডিসিন না খাওয়াই ভালো পরিস্কার জলে মিশিয়ে ভাগ করে খাওয়া উচিত ।এই উল্লিখিত নির্দিষ্ট পরিমানে ভাগ করে মেডিসিন ডিস্টিল ওয়াটার ও গ্লোবিইলস এ মিশিয়ে ভাগ করে খাওয়া যেতে পারে।একজন রেজিস্ট্রার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ডোজ হিসেবে মেডিসিনটি নিলে আরও ভালো হয়।
সংক্রমন হয়ে গেলে একজন পরিচিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া উচিত। সরকার স্বীকৃত যেকোন সিস্টেমের চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নেওয়া উচিত।কিছু হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন খুব ভালো কাজ দেয় যেমন বেলেডোনা,রাসটক্স, সালফার ইত্যাদি।হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন প্রয়োগের পর ১-৩ দিনের মধ্যে সব জলঢুলি গুলো বেরিয়ে যায়।সব বেরিয়ে গেলে রোগ পরবর্তী জটিলতা বা কমপ্লিকেশন অনেক কম হয় বলে দেখেছি।
৫ দিনের পর থেকে সব জলঢুলিগুলো শুকোতে শুরু করে।১০ দিনের মধ্যে প্রায় সব জলঢুলি শুকিয়ে যায়।১০ দিন পর পরপর কয়েকদিন স্নান করার পর ডাবের জল মাখলে চিকেনপক্সের দাগগুলো অনেক কমে হয়।