STORYMIRROR

arijit bhattacharya

Horror

2  

arijit bhattacharya

Horror

ছলনাময়

ছলনাময়

2 mins
460


সমিত যখন বিষ্ণুপুর স্টেশনে নামল তখন রাত দশ টা বেজে দশ। হেমন্তের শেষ,শীতের শুরু। চারপাশে সূচীভেদ্য অন্ধকারে কুয়াশার চাদরকে কেমন যেন অপার্থিব রহস্যময় বলে মনে হচ্ছে। শুধু স্টেশনের কয়েকটি লাইট টিমটিম করে একরাশ নিঃসঙ্গতা নিয়ে জ্বলছে। গেস্টরুমে কয়েকজন দেহাতী প্যাসেঞ্জার অপেক্ষা করছে রাতের বোকারো প্যাসেঞ্জারের জন্য। সত্যি যে শিরোমণি প্যাসেঞ্জার এত লেট করিয়ে দেবে স্বপ্নেও ভাবে নি সমিত। তেমন হলে সকালের লোকালে লোকালে চলে আসত। কিন্তু বাঙালীর ল্যাদ বলে একটা কথা আছে না। যাই হোক,আর কি করা যাবে! হয়তো স্টেশনের গেস্টরুমেই রাত কাটাতে হবে। এখান থেকে সমিতদের ডাঙরপাড়া গ্রাম পাঁচ-ছ মাইল দূরে। বাইরে রিক্সা কেন,এই শীতের রাত্রে কোনো জনপ্রাণীও নেই। হঠাৎই বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল সমিতের কোনো এক অজানা কারণে। আজ অমাবস্যার নিশুতি রাত,আকাশের চাঁদও অদৃশ্য। চারদিক নিঃশব্দ। ছোটবেলা থেকে সমিত শুনে আসছে এরকম নিশুতি রাতে তাদের গ্রামের কাছেই চক্রবর্তীদের পুকুরের আশেপাশে ঘুরে বেড়ায় স্বয়ং ছলনাময়। তার ছলনাতে পা দিয়েছ কি সাক্ষাৎ মৃত্যু! কখনো সে উপস্থিত হয় ক্লান্ত পথিকের কাছে পথ চলার সঙ্গীর রূপ ধরে,কখনো কারোর কাছে স্নেহময়ী মা বা পরিবারের কেউ খুব আপনজন,কারোর কাছে স্বল্পবসনা সুস্তনী মোহময়ী নারী বা ভোজনপ্রিয় ব্যক্তির কাছে তার প্রাণের আহার। প্রতি অমাবস্যার রাতেই নিজের শিকারকে খুঁজে বেড়ায় ছলনাময়,তার একটাই অস্ত্র ছলনা। শুধু গ্রামের আশেপাশে নয়,বাইরের দূর দূরান্তের ব্যক্তিকেও নিজের ছলনার জালে আবদ্ধ করে অমাবস্যা নিশুতিতে শিকার করে এই ছলনাময়। রিক্সাটাকে দেখেই ধড়ে প্রাণ ফিরল সমিতের। আরে,এ যে তারই পরিচিত বিশুকাকা।ছলনাময় চুলোয় যাক,তাহলে আজ গ্রামে ফেরা হচ্ছেই। উফ,কতোদিন পর ভোলাদাদুর সাথে দেখা হবে। সমিতের মনে হচ্ছে রিক্সাটা বারবার একই জায়গায় পাক খাচ্ছে।রাস্তার দু'পাশে ঘন শালবন। আরে,এই তো শ্মশানকালীর মন্দির। আবেগের বশে সমিত খেয়ালই করে নি বিশুকাকার পায়ের গোড়ালি উল্টো।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror