ছবি:-
ছবি:-


কুড়ি দিনের ছুটিতে কর্মস্থল থেকে বাড়িতে এসেছে ভার্গব। প্রথম চার পাঁচদিন আত্মীয় স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করে আনন্দেই কেটে গেছে ভার্গবের সময়। কিন্তু এখন আর তার সময় কাটে না। কোনো কাজই থাকে না তেমন, শুয়ে বসে, টিভি দেখে, মোবাইল ঘেঁটে, বাবর সঙ্গে বাজারে গিয়ে, মায়ের সঙ্গে মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়ে, ছোট ভাইয়ের সঙ্গে বাইকে করে এখানে সেখানে ঘুরে বেড়িয়েও তার সময় কাটছে না। একরাশ বিরক্তি ঘিরে ধরেছে ভার্গবকে।
এমনি একদিন কি মনেকরে ক্যামেরাটা নিয়ে ঘরে বাইরে ছবি তুলছিলো ভার্গব। পটাপট বাইরের ফুলের বাগানের ফুলগুলিরও ছবি নিয়ে নিল কয়েকটা। যখন ছবি গুলি দেখছিল তখুনি তার ডাক পড়ে সকালের জলখাবার খাওয়ার জন্য। ক্যামেরাটা হাতে করেই ভার্গব খাবার টেবিলে হাজির। চেয়ার টেনে বসতেই মা ভার্গবের সামনে পরিবেশন করলেন তার পছন্দের গরম গরম ফুলকো লুচি সঙ্গে আলু-ফুলকপির রসা আর দুটো পান্তুয়া। গরম গরম ফুলকো লুচি আর বাটি ভরা ফুলকপির রসা দেখে ভার্গবের পেটে তখন রীতিমতো উথাল পাথাল। সে অবাক হয়ে দেখছে তার মা কি সুন্দর করে থালা সাজিয়ে পরিবেশন করলেন সকালের জলখাবারটা। কিন্তু আশ্চর্য ভার্গব কিছু খাচ্ছে না, মুখেই তুলছে না কিছু। মায়ের চিন্তান্বিত মুখ দেখে কিছুটা ওনার মনের কথা আঁচ করতে পেরে ভার্গব বললো
- মা। আমি এক মিনিট আসছি।
- কেনো বাবু? কি হলো? খাবি না?
- খাবো তো, ক্যামেরাটা নিয়ে আসি।
- খাওয়ার সময় ক্যামেরা কেনো? এ কি!!! ক্যামেরা এঁটো হবে না?
- কিচ্ছু হবে না, এই বলে একদৌড়ে ক্যামেরাটা নিয়ে হাজির ভার্গব। চটপট কয়েকটি ছবি তুলে নিল ভার্গব থালায় সাজানো খাবারের। মা তখনো হা করে তার কীর্তি কলাপ দেখছেন। মা কে অবাক হয়ে থাকতে দেখে সে বললো
- মা, যতদিন আছি আমি প্রত্যেকদিন তোমার রান্নার ছবির তুলবো। এটা হচ্ছে ফুড ফটোগ্রাফি। এই যেমন গাছপালা, পশুপাখির ছবি তোলে আমি রান্নার সময়ের বা রান্না হওয়ার পর খাবারের ছবি তুলবো। মা খুশি হয়ে বলেন,
- বেশ তবে তাই করিস।
সকালের জলখাবার সমাধা হলে মা যখন দুপুরের রান্নার কাজে ব্যস্ত তখন ভার্গব একটা চামচে লাল লঙ্কা গুঁড়ো, নুন, হলুদ গুঁড়ো, গোটা মশলা কিছু কিছু সাজিয়ে সুন্দর একটা ছবি তুললো। এই ছিল শুরু তারপর থেকে ফুড ফটোগ্রাফিটাই সবচেয়ে পছন্দের সখ হয়ে দাঁড়ালো ভার্গবের। কর্মস্থলে ফিরে গিয়ে সেখানেও নিত্যদিনই রান্নার সামগ্রী গুলো নিয়ে সুন্দর সুন্দর ছবি তোলার প্রতি তার ছিল অগাধ আসক্তি।
___*____