STORYMIRROR

Biplab Das

Abstract Action Others

3  

Biplab Das

Abstract Action Others

বিপ্লব

বিপ্লব

8 mins
241

                             ১

ধরমেন্দ্র দোকানের সামনে পৌঁছে দেখল বিপ্লব সেখানে দাড়িয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছে। বিপ্লবকে ধরমেন্দ্রই আসতে বলেছে। সে ধরমেন্দ্রর দোকানে কাজ শুরু করবে। ধরমেন্দ্র একজন ইস্ত্রিওয়ালা। রাস্তার ধারেই তার দোকান। একাই দোকান চালায়। অবশ্য আগে ওর বউ সাহায্য করত কিন্তু বউ গর্ভবতী হয়ে পড়ায় একজনের খুব প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। তাই বিপ্লবকে আসতে বলা। বিপ্লবের খোঁজ ধরমেন্দ্র পায় তারই এক খদ্দেরের কাছ থেকে। ধরমেন্দ্র জানতে পারে বিপ্লব কাজ খুঁজছে। তাই বিপ্লবকে সেই খদ্দেরের মাধ্যমে ডেকে পাঠায়।

বিপ্লবের সাথে কথা বলে জানতে পারে সে একটা অফিসে লেখক হিসেবে কাজ করছিল। কিন্তু অফিস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার চাকরিটা চলে যায়। তারপরে অন্য জায়গায় ঢোকার চেষ্টা করেছে কিন্তু তার দুর্ভাগ্ যে কোথাও থেকে সুযোগ আসেনি। তাই ধরমেন্দ্রর কাছ থেকে কাজের সুযোগটি বিপ্লব দু’হাতে লুফে নেয়। ধরমেন্দ্রর চালু দোকান। দিনে প্রায় ১০০০ এর মতন জামাকাপড় ইস্ত্রি করতে হয়। ধরমেন্দ্র যখন জানতে চায় দিনে ১০০০-এর ওপর কাপড় ইস্ত্রি করতে পারবে কিনা তখন প্রায় কিছু না ভেবেই বিপ্লব বলে, ‘পারব’। ধরমেন্দ্র অবাক হয়ে যায় উত্তর শুনে। বুজতে পারে বিপ্লবের চাকরির প্রয়োজন খুব বেশি। তাই সে বিপ্লবকে নিয়ে নেয়।


কাজে যোগ দেয়ার পর ধরমেন্দ্র বুঝতে পারে বিপ্লব আগে এরকম কাজ কখনও করেনি। কিন্তু ধরমেন্দ্র জানে বিপ্লবরা যেকোনো কাজ করতে পারে। দ্রুত কোনও কাজ বুঝতে পারে এবং মানিয়ে নিতে পারে।


বিপ্লব একটি রোবট। কোলকাতাতেই তৈরি হয়েছে। বছর পাঁচেক হল তৈরি হয়েছে। এই পাঁচ বছরে বিপ্লব বিভিন্ন রকমের কাজ করেছে। কখনও সেলস এজেন্ট আবার কখনও হিসাবরক্ষক। লেখকের চাকরিটা চলে যাওয়ার পর তাকে সমস্যায় পড়তে হয়। কারন মাইনে হিসেবে যে টাকা পেত সেটা দিয়ে সে প্রতিমাসে চার্জ কিনতে পারত। সঙ্গে ঘর ভাড়াও দিতে পারত। কিন্তু চাকরি চলে যাওয়ায় তাকে ফুটপাতে থাকতে শুরু করতে হয় এবং নিয়মিত নিজেকে চার্জ ও দিতে পারেনা। এর ওর থেকে চার্জার ধার করে কোনও মতে তার দিন চলছে। তাই এই চাকরিটা দরকার ছিল খুব ভীষণ ভাবে।


বিপ্লবের সম্পর্কে একটু বলে নেওয়া যাক। বিপ্লবের মাথা বলে কিছু নেই। দুটো হাত, একটা পা। ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত একটাই দণ্ড। দুর থেকে দেখলে মনে হয় যেন একটা যোগ চিহ্ন। গোটা শরীরটা ধাতব জিনিস দিয়ে তৈরি। ইংরেজিতে যাকে বলে স্লিক, ঠিক সেই রকম শরীরটা। চোখ, নাক, মুখ বলতে কিছুই নেই। সামনের দিক বা পিছনের দিক বলতেও কিছু নেই। ওপরের দিকে একটা ছোট গর্তের মতন আছে যেখান দিয়ে বিপ্লব চার্জ দেয়।ফুল চার্জ হতে সময় লাগে তিন ঘণ্টার মতন। ফুল্ চার্জে এক সপ্তাহ চলে যায়। বিপ্লব নামটা যে প্রতিষ্ঠান ওকে তৈরি করেছে তাদেরই রাখা। রোবট বিপ্লব সব রকমের কাজ করতে পারে।


যারা ধরমেন্দ্রর দোকানে জামাকাপড় ইস্ত্রি করতে দিতে আসে তারাও অবাক হয়ে গেল ধরমেন্দ্রর এই কর্মচারী দেখে। একটি রোবটকে সে সহকারী রেখেছে। কারন তাদের ধারনা ছিল ছোট ব্যাবসায়িরা কাজের জায়গায় রোবট নিযুক্ত করে না। সাধারনত বড় বড় কোম্পানিরাই কাজের জায়গায় রোবট নিযুক্তি করে থাকে। ধরমেন্দ্রর এই কাজে সবাই যে অবাক হয়েছে তাও নয় অনেকে ধরমেন্দ্রকে ভয় দেখিয়ে গেছে যে ‘তোর দোকান একদিন এই রোবটেই চালাবে’। কিন্তু ধরমেন্দ্র তাদের কথায় বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি। কারন সে বুঝেছিল বিপ্লব কাজের ছেলে এবং ওকে দিয়ে কাজ হবে। এবং ধরমেন্দ্রকে হতাশ না করে বিপ্লব নিরলস ভাবে দোকানের সব কাজ করে যেতে লাগে।

                                                             ২

কিন্তু সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয়না বিপ্লবের জন্য। একদিন একটি রাজনৈতিক দলের লোকজন এসে ধরমেন্দ্রর কাছে জানতে চায় একটি রোবটকে কাজে নেওয়ার পিছনে কি কারন এবং যুক্তি রয়েছে। ধরমেন্দ্র কিছু উত্তর দিতে পারেনা। চুপ করে থাকে। সেদিনই কাজ থেকে ফেরার পথে বিপ্লব ওই লোক গুলোকে দেখে রাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে মিটিং শুনতে। মিটিঙের বক্তব্যও রোবট-বিরোধী। বক্তার কথার সারমর্ম হল এই যে রোবটরা মানুষের চাকরি নিয়ে নিচ্ছে এবং এর থেকে প্রতিকার হল রোবটদের সম্পূর্ণভাবে পৃথিবী থেকে বিনাশ করা। এই বক্তব্য শুনে খুবই দুঃখ পায় বিপ্লব। সে বুঝতে পারে কিছু মানুষ তার এই লন্ড্রিতে কাজ করে ভাল ভাবে নিচ্ছে না।


পরেরদিন কাজে গিয়েই বুঝতে পারে পরিস্থিতি বদলে গেছে। যে ধরমেন্দ্র তাকে খুবই ভালবাসত, স্নেহ করত, তার ব্যাবহার পাল্টে গেছে। ধরমেন্দ্র অনেকটাই বিরূপ আচরণ প্রকাশ করতে থাকে। ধরমেন্দ্র তার ব্যাবহারের মধ্যে দিয়ে বিপ্লবকে বুঝিয়ে দেয় আর তাকে প্রয়োজন নেই। বিপ্লব এই ব্যাবহারে আশাহত হয়। শেষে ধরমেন্দ্র তাকে ডেকে বলে দেয় তাকে আর প্রয়োজন নেই। এই শুনে বিপ্লবের মন একেবারেই ভেঙ্গে যায়। সে বুজতে পারেনা কি করবে। তাকে আবার একটি নতুন কাজ খুজতে হবে ভেবেই সে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। ধরমেন্দ্রকে বিদায় জানিয়ে সে তার বাড়ি ফিরে আসে এবং ভাবতে থাকে তার কি করা উচিত।

                                                               ৩ 

অনেক ভেবে বিপ্লব ঠিক করে সে রজতের কাছে যাবে। রজত একজন মানুষ হলেও সে রোবটদের জীবন সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল। সে নিজে একটি রোবট-নির্মান কোম্পানিতে কাজ করে। তাই রোবটদের সম্পর্কে সে ভালই জানে।

বিপ্লব রজতের কাছে যায় এবং গত কয়েক মাসে নিজের জীবনে কি ঘটেছে তা জানায়। বিপ্লবের কাহিনী শুনে রজত খুবই চিন্তিত হয়ে পড়ে। সে বুঝতে পারে রাজনৈতিক দলেরা লোকেরা বিপ্লবের এই কাজ করা পছন্দ করছে না। রজত তাকে বুদ্ধি দেয় কোলকাতা ছেড়ে দেওয়ার। রজত এও বলে মুম্বাই হবে হচ্ছে আদর্শ জায়গা বিপ্লবের জন্য। কারন সেখানে কাজের সুযোগ অনেক বেশি। তাছাড়া সেখানে বিপ্লবের মতন রোবট প্রচুর পরিমানে রয়েছে। মানুষ এবং রোবটের সুস্থ সহাবস্থান সেখানে। রজতের কাছ থেকে আশার কথা শুনে বিপ্লবের মন থেকে ভয় দূর হয়। সে ঠিক করে মুম্বাই যাবে।

                                                                ৪

কয়েকদিন বাদেই সে মুম্বাই যাওয়ার ট্রেনে চেপে বসে। মুম্বাই গিয়ে বিপ্লবের মাথা একেবারেই ঘুরিয়ে যায়। একসাথে এত রোবট সে আগে কখনও দেখেনি। মুম্বাই যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই সে একটা কাজও জুটিয়ে ফেলে। একটা বিজ্ঞাপনের এজেন্সিতে লেখক হিসেবে। লেখক হিসেবে আবার কাজ করতে পারবে বলে সে খুবই খুশি হয়। কিছুদিনের মধ্যেই সে মুম্বাই শহর এবং শহরের লোকদের ভালোবেসে ফেলে। মুম্বাইতে একটা জিনিস লক্ষ্য করে যে মানুষ তাকে আলাদা চোখে দেখেনা রোবট বলে। বেশ কয়েকজন মানুষের সাথে তার বন্ধুত্বও গড়ে ওঠে।


এরকমই একজন হল অনন্যা। অনন্যা এবং বিপ্লব একই অফিসে কাজ করে। দুজনেই লেখক হিসেবে কাজ করে। অনন্যা মানুষ এবং বিপ্লব রোবট। মানুষ হলেও বিপ্লব বুঝতে পারে অনন্যার সাথে তার মনের মিল রয়েছে একাধিক জায়গায়। অফিসে আরও অন্য রোবট থাকলেও সে অনন্যার সাথে সময় কাটাতেই বেশি পছন্দ করে। বিপ্লবের ধারনা অনন্যাও তার সাথে সময় কাটাতে পছন্দ করে।


বন্ধুত্ব কিছুদিনের মধ্যেই প্রেমে পরিনত হয়। দুজনে অফিসের বাইরেও সময় কাটাতে শুরু করে। সপ্তাহন্তে ছুটি কাটাতে তারা প্রায়ই মুম্বাইয়ের বাইরে যেতে থাকে। দুজনে অফিসের সামনে একটা ফ্ল্যাট নিয়ে থাকতে আরম্ভ করে। বিপ্লব তার পুরনো জীবন একেবারেই ভুলে যেতে থাকে। সে বুজতে পারে তার সাথে অনন্যার এই প্রেম শুধুই দুজনের মধ্যে সম্পর্ক নয়, অন্য কিছু। কারন এর আগে তার জানা ছিল না যে একটি রোবট এবং একজন মানুষের ভিতর কি ভাবে প্রেম হতে পারে।


এরই মাঝে বিপ্লব জানতে পারে অনন্যাও মুম্বাইয়ের মেয়ে না। সেও বাইরে থেকে এসেছে। অনন্যার বাড়ি পুনেতে। সম্পর্কে থাকাকালীন কিছু দিন পরপরই সে পুনেতে বাড়ি যেতে থাকে। ঘন ঘন বাড়ি যাওয়ার কারন জিজ্ঞাসা করলে বিপ্লবকে সে জানায় বাড়ির জন্য তার মন কেমন করে। তাই সে বাড়ি যায়। বিপ্লবও তাই ওকে আর কোনও প্রশ্ন করে না। বেশি ঘাটায় না। কিন্তু তার মনে প্রশ্ন জমতে থাকে কেন এত কম ব্যাবধানে সে বাড়ি যায়।

                                                              ৫

বিপ্লবের জীবনে আবার দুঃখ নেমে আসে যখন অনন্যা তাকে জানায় যে পুনেতে একটি ছেলের সাথে তার সম্পর্ক রয়েছে। এবং তাদের মধ্যে বিয়েও ঠিক হয়ে গেছে। এই শুনে বিপ্লব একেবারেই ভেঙ্গে পড়ে। সে কিছুটা রাগ হয়েই জানতে চায় কেন তার সাথে সম্পর্ক থাকা সত্তেও অন্য একজনের সাথে সম্পর্ক করেছে। উত্তরে অনন্যা জানায় একজন রোবটের সাথে কিভাবে সে সারাটা জীবন কাটাবে। তাকে তো একজন মানুষের সাথেই জীবন কাটাতে হবে। এই কথা অনন্যার কাছ থেকে শুনে বিপ্লব খুবই আহত হয়। সে বুঝতে পারে অনন্যা তাকে একজন রোবট হিসেবেই দেখেছে। একজন বন্ধু হিসেবেও দেখেনি। প্রেমিক তো দূরে থাক।

অনন্যার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছেদ হওয়ার পর প্রথমে বিপ্লব বুঝে উঠতে পারেনা কি করবে। বিচ্ছেদ যে তাকে একটা ধাক্কা দিয়েছে সেটা বুঝে উঠতেই কিছু দিন চলে যায়। সে এতটাই ভেঙ্গে পড়ে চাকরি এবং মুম্বাই দুটোই ছাড়ার কথা ভেবে নেয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অফিসেরই এক কলিগ তাকে বলে কয়েকদিনের ব্রেক নিতে এবং কোথাও থেকে বেড়িয়ে আসতে। বিপ্লবের এই প্রস্তাব পছন্দ হয়। সে ঠিক করে কোলকাতায় যাবে এবং রজতের সাথে একবার দেখা করে সব কথা বলবে।

                                                               ৬

বিপ্লব কোলকাতার ট্রেনে চেপে বসে। হাওড়া গিয়েই একটা জিনিস লক্ষ্য করে সবাই তাকে এড়িয়ে চলছে। ট্যাক্সিওয়ালা ট্যাক্সিতে তুলতে চাইছে না। কেউ কেউ আবার এগিয়ে এসে বলছে ‘যেখান থেকে এসেছিস সেখানেই ফিরে যা’। লোকজনের এরকম আচরণে ভীষণ অবাক হয় বিপ্লব। সঙ্গে সঙ্গে রজতকে কল করে। রজত কিছুটা অবাক হয় জেনে যে বিপ্লব কোলকাতাতে। সে বিপ্লবকে তখনই চলে আসতে বলে নিজের বাড়িতে। বিপ্লব কোনও মতে সে রজতের বাড়ি পৌছায়। রজতের কাছে গিয়ে জানতে পারে গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে রোবটদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। রোবটরা মানুষের কাজ নিয়ে নিচ্ছে বলে সব সাধারন মানুষ এখন রোবটদের বিরুদ্ধে। রোবটরা একে একে পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে দিচ্ছে। রোবটদের এই অবস্থা শুনে বিপ্লব সত্যিকারেই ভীত হয়। রজতও তাকে বলে পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা। বিপ্লব বুঝতে পারে তার সময় তো খারাপ যাচ্ছেই সঙ্গে রোবটদের সময়ও খারাপ যাচ্ছে। বিপ্লব অনন্যার সাথে বিচ্ছেদের কথা না জানিয়েই বিদায় নেয় রজতের কাছ থেকে।

রাস্তায় বেরিয়েই দেখ্তে পেল একটা বিরাট মিছিল। মিছিলের মূল বক্তব্য, কিভাবে রোবটদের বাংলামুক্ত করা যায়। মিছিল থেকেও ওর উদ্দেশে অনেক কটূক্তি ভেসে আসতে থাকে। মিছিলটি কোনওরকমে এড়িয়ে কিছুটা হেঁটেই একটি হোটেল দেখতে পায়। ঠিক করে একটা রাত কোনও মতে কাটিয়ে, কাল সকালে সে মুম্বাইয়ের দিকে রওনা দেবে।

             ৭

হোটেলে ঢুকতেই একজন লোক এগিয়ে আসে এবং যে ব্যাগ-পত্তর ছিল তা বিপ্লবের কাছ থেকে নিয়ে নেয়। লোকটির ব্যাবহার খুবই ভাল। বিপ্লবের সাথে হেসে হেসে কথা বলতে থাকে।এই রোবট-বিরোধী আবহাওয়ায় এই ব্যাবহার বিল্পব আশা করেনি। তাও আবার একজন মানুষের কাছ থেকে। সে যাই হোক, একটা ঘর পেয়ে নিশ্চিন্ত হয় বিপ্লব। ঘরে চার্জ দেওয়ার জায়গা ছিলনা তাই নিচে নেমে একটা জায়গায় নিজেকে একটু চার্জ দিয়ে নেয়। চার্জ দিয়ে এসে ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে।


মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায়। দরজায় কেউ কড়া নাড়ছে। লাইট জ্বেলে যেই দরজা খোলে তখন দেখে যে লোকটি ব্যাগপত্তর উপরে তুলে দিয়েছিল, সে দাড়িয়ে। বিপ্লব তাকে দেখে কিছুটা অবাক হয়েই বলল, ‘কি হয়েছে? দরজায় কড়া নাড়ছিলেন কেন?’ উত্তরে কিছু না পেয়ে আবার জিজ্ঞেস করল, ‘কিছু বলবেন?’ এইবার লোকটি মুখ খুলল, ‘আপনি রোবট না’? উত্তরে বিপ্লব কিছু বলে না। বিপ্লব বুঝতে পারে কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে। তাই সে কিছুটা শান্ত ভাবেই বলল। ‘এখন রাত হয়েছে, কাল কথা হবে’। লোকটি বলে, ‘আমিও রোবট। দেখতে মানুষের মতন’।

‘ও আচ্ছা। প্রথমে বুঝতে পারিনি।’

‘আমাকে কোলকাতা ছাড়তে হবে। আমার মালিক আমাকে কিছুদিন পর কাজ থেকে বার করে দেবে। কোলকাতায় আর রোবটরা থাকতে পারবে না’।

‘হ্যা। আমিও তাই শুনলাম’।

‘আমার সাথে একটি লোকের কথা হয়েছে। সে বলেছে যদি আমি রোবটের শরীরের পার্টস যোগাড় করতে পারি তাহলে সে আমাকে কিছু টাকা দেবে সেই টাকা দিয়ে আমি বাংলার বাইরে যেতে পারব’।

‘তো আমি কি…’

বিপ্লবের কথা শেষ করার আগেই রোবটটি বিপ্লবকে একটি লোহার দণ্ড দিয়ে বেধড়ক মারতে থাকে। মারতে মারতে রোবটটি বিপ্লবকে টুকরো টুকরো করে ফেলে এবং শেষে একটি ব্যাগে ভরে নিয়ে চলে যায়।

                                                                 ***


#সাগরের_ঢেউ


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract