Biplab Das

Drama Crime Others

2  

Biplab Das

Drama Crime Others

বক্ররেখা

বক্ররেখা

15 mins
142


সায়নের এখন স্কুল ছুটি। সারাদিন বাড়িতেই থাকে। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই ভিডিও গেম খেলা শুরু করে দুপুর পর্যন্ত চলে। তারপর খাওয়া-দাওয়া করে আবার গেম খেলা। বিকেলে অনলাইনে ক্লাস থাকে ঘণ্টা দুয়েকের মতন। তারপর আবার গেম খেলা শুরু। গেম খেলার সময় ওর কিছু মাথায় থাকে না।

সায়নের বয়স ১৮। মায়ের সাথে থাকে। মায়েরই বাড়িতে। দাদু-দিদা মারা গেছে। বাড়িতে প্রানী বলতে দুটি- মা এবং ছেলে। বাবা-মার ডিভোর্স হয়ে গেছে। সায়নকে দেখভাল করার ভার কোর্ট থেকে সায়নের মা পেয়েছে। যদিও সায়নের ভরণপোষণের বেশিরভাগটাই খরচটাই সায়নের বাবার কাছ থেকে আসে। তার মূল কারন সায়নের মায়ের চাকরি থেকে আয় বেশি হয় না। সায়নের বাবা একটি বহুজাতিক সংস্থায় ম্যানেজার হিসেবে কাজ করে।

সায়নের মা, অপরাজিতা, সায়নের ভিডিও গেমের প্রতি আসক্তি নিয়ে ভীষণ ভাবে চিন্তিত। লকডাউনের আগে অপরাজিতা যখন অফিসে যেতে হত তখন সায়নকে এতটা কাছ থেকে দেখার সময় পেতনা। কিন্তু এখন যেহেতু লকডাউন চলছে তাই অপরাজিতাকে ঘরে থেকেই কাজ করতে হচ্ছে। তাই সায়নের গতিবিধির ওপর নজর রাখাও সহজ হচ্ছে। অপরাজিতার চিন্তা হল যদি এতটা সময় ভিডিও গেমের পিছনে দেয় তাহলে পড়াশুনা কখন করবে। অপরাজিতা সায়নকে অনেকবার বলেছে যে ভিডিওগেম খেলা বন্ধ করে পরাশুনায় মন দিতে, কিন্তু সায়ন ওর মায়ের কথা একেবারেই কানে তোলে না। ডিভোর্সের পর পর সায়ন মায়ের কথা শুনলেও গত এক বছরে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক বিগড়েছে। তার মূল কারন অপরাজিতার জীবনে শুভজিতের প্রবেশ। শুভজিত রায়চৌধুরী একজন উদিয়মান শিল্পপতি। অপরাজিতা শুভজিতের অফিসেই কাজ করে।

শুভজিত প্রায়ই অপরাজিতাদের বাড়িতে আসে। বেশ কয়েকবার রাতও কাটিয়েছে। শুভজিত-অপরাজিতার মধ্যে যে শুধুমাত্র মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক আছে তা নয়। একটি অন্যরকমের সম্পর্কও গড়ে উঠেছে। সেটা সায়নও বুঝতে পারে। যদিও প্রথমদিকে এই সম্পর্কের ব্যাপারে খুব একটা কিছু ভাবেনি সায়ন। কিন্তু লকডাউনের পর থেকেই শুভজিত অপরাজিতার বাড়িতে বেশি করে আসতে শুরু করেছে। তার ফলে অপরাজিতা-শুভজিতের সম্পর্কটিকে আরও কাছ থেকে দেখতে পাচ্ছে সায়ন।

যে সময়টা সায়ন গেম খেলেনা তার বেশিরভাগ সময়টা জুড়েই সে মায়ের নতুন সম্পর্ক নিয়ে ভাবে। অপরাজিতা-শুভজিত দুজনে দুপুরবেলা ঘরের দরজা বন্ধ করে কি করে তা সায়ন দেখতে চায়। যদিও সায়নের একটি গার্লফ্রেন্ড রয়েছে যার সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সায়ন আলোচনা করে। নিজের মায়ের সম্পর্কের বিষয়েও আলোচনা করে। কিন্তু দুজনের মধ্যে যৌন সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। মেয়েটি সায়নকে পছন্দ করে। নাম শ্রেয়া। শ্রেয়া সায়নের সাথে এক স্কুলে এবং একই ক্লাসে পড়ে। সায়নের শ্রেয়া বাদে আর কোনও বন্ধু নেই। স্কুলেও নেই, পাড়াতেও নেই। তাই সায়নের শ্রেয়াই একমাত্র সম্বল। সম্বল বলতে মানসিক আশ্রয়। কিন্তু লকডাউনের জন্য শ্রেয়ার সাথে দেখা করতে পারছে না। লকডাউনের আগে প্রায়ই শ্রেয়ার বাড়িতে যেত সায়ন। কিন্তু এখন তা একেবারেই বন্ধ।

শুভজিতের সাথে সম্পর্কের কথা অপরাজিতা বার বার তোলার চেষ্টা করেছে সায়নের সামনে, কিন্তু সায়নের কাছ থেকে কোনরকমের প্রতিক্রিয়া পায়নি। তাই অপরাজিতা একপ্রকার ভেবে নিয়েছে যে সায়নের এই সম্পর্কে সায় আছে।

সায়নের যৌনতা নিয়ে একটা ধারনা আগে থেকেই ছিল। পর্ণ ফিল্মে দেখেছিল। তাই আন্দাজ করতে পারে, মা এবং শুভজিত কাকু দরজা বন্ধ করে কি করে। কিন্তু আন্দাজ করা এবং স্বচক্ষে দেখা দুটো সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়।

               ***


রোজের মতনই শুভজিত সকাল সকাল এসেই হাজির হয়। সঙ্গে কিছু চাইনিজ খাবারও আনে দুপুরে খাবে বলে। দুপুরে তিনজনে সেই খাবার খায়। খাবার খেয়ে সায়ন নিজের ঘরে ঢুকে যায় এবং শুভজিত অপরাজিতার সাথে ওদের ঘরে। সায়ন গেম খেলাতেই মত্ত ছিল। কিন্তু পেচ্ছাপ করার জন্য ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে যেই বাথরুমের দিকে যাবে তখনই মায়ের হাসির আওয়াজ শুনতে পায়। বাথরুমে যেতে হলে অপরাজিতার ঘর পেড়িয়ে যেতে হয়। হাসির আওয়াজ পেয়ে সায়ন দাড়িয়ে যায়। দরজাটা বন্ধ ছিল না। ভেজানো ছিল। তাই একটু ফাঁক হয়ে ছিল। যদিও কোনোদিন এরকম থাকে না। রোজ ভিতর থেকে বন্ধই থাকে।


দরজার ফাঁক থেকে প্রায় গোটা ঘরটা দেখা যাচ্ছে। বিছানার ওপর শুয়ে সায়নের মা এবং তার ওপর বসে শুভজিত। দুজনেই সম্পূর্ণ উলঙ্গ। জামাকাপড় মাটিতে পড়ে রয়েছে। শুভজিত বসা অবস্থাতেই আগে-পিছু করছে। যখন থামছে তখন সায়নের মা খিলখিল করে হাসছে এবং কিছু বলছে। মায়ের এরকম রুপ সায়ন আগে কখনও দেখেনি। যৌনক্রিয়া করতে করতে শুভজিত দেখে ফেলে সায়ন ঘরের বাইরে দাড়িয়ে তাদের দুজনকে দেখছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সে যে কাজটি করছিল তা বন্ধ করে না। সায়নের সাথে চোখাচুখিও হয়। তখন সায়ন নিজেই সরে আসে। বাথরুমে আর যায় না সায়ন। সোজা নিজের ঘরে ঢুকে যায়। ঘরে ঢুকে সায়ন বুঝতে পারে তার মাথার ভিতর বিস্ফোরণ হচ্ছে। প্রথমবার দুটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে সঙ্গম করতে দেখেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আনন্দ, মজা বা যৌন উত্তেজনা অনুভব করে না সায়ন। রাগ এবং ঘৃণার এক মিশ্রণ তৈরি হয় সায়নের মনে। সায়ন বুঝেই পায় না কি করবে। গেম খেলার চেষ্টা করে কিন্তু মনোনিবেশ করতে পারে না। চোখের সামনে একটিই দৃশ্য ঘুরতে থাকে, যেই কিছুক্ষণ আগে দরজার ফাঁক থেকে দেখেছে। মায়ের প্রতি এক অদ্ভুত ঘৃণা তৈরি হয় ওর মনে। 


বিকেলে অপরাজিতা অনেকবার সায়নের ঘরের দরজা ধাক্কায় চা খাবে কিনা জানার জন্য। কিন্তু দরজা না খুলেই ভিতর থেকে বলে দেয় সায়ন যে ও চা খেতে ইচ্ছুক না। অপরাজিতা একটু চিন্তিত হয়ে পড়ে। এরকম তো কখনও করে না সায়ন। চা না খেলেও দরজা খুলে সে একবার ডাইনিং রুমে আসে। অপরাজিতা শুভজিতের যাওয়ার অপেক্ষা করতে থাকে।


সন্ধ্যে নাগাদ শুভজিত চলে গেলে, অপরাজিতা সায়নের ঘরে ঢোকে। ঢুকেই সোজা প্রশ্ন করে, ‘এই তোর কি হয়েছে বলত’?

‘কিছু হয়নি তো’, খুব আস্তে আস্তে কথাটি বলে সায়ন।

‘কিছু যখন হয়নি তাহলে বিকেলে দরজা খুললি না কেন? কতবার দরজা ধক্কালাম’, বেশ তাড়াতাড়ি কথা গুলি বলে অপরাজিতা। সঙ্গে জুড়ে দেয়, ‘কি খাবি এখন? পাস্তা বানাবো’?

‘কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না’, একটু রাগের সাথে জবাব দেয় সায়ন। অপরাজিতা বুঝতে পারে সায়ন রেগে আছে। কিন্তু কারনটা সে জানেনা। তাই সাথে সাথেই কিছু বলেনা অপরাজিতা। সায়ন যে শুভজিতের আসা পছন্দ করেনা সেটা খুব ভালভাবেই বোঝে অপরাজিতা। ওর ধারনা ছিল সময়ের সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তা হয়না। উল্টে ছেলের সাথে দূরত্ব বেড়েছে।


কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর অপরাজিতা বলে, ‘কত লোকের চাকরি গেছে জানিস এই লকডাউনের জন্য। আমাদের অফিসেরও অনেক লোকের চাকরি যাবে যাবে করছে। তোর শুভজিত কাকু না থাকলে কি হত ভাবতে পারিস’? এক নিঃশ্বাসে কথাগুলি বলে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায় অপরাজিতা। সায়ন কিছু বলেনা। চুপ করে থাকে। সায়ন এমনিতেও বেশি কথা বলতে পছন্দ করেনা। কিন্তু সায়ন বুঝতে পারে যে মা তার রাগের কারন বুঝতে পেরেছে।


রাতে খাওয়ার টেবিলে প্রয়োজনীয় কথা ছাড়া কিছুই হয়না। দুজনেই খাওয়া শেষ করে যে যার ঘরে ঢুকে যায়।

   

পরদিন সকালেই সায়ন বাবাকে ফোন করে। ফোন করে বলে তার একটা নতুন ল্যাপটপ চাই। নতুন যে গেমগুলো মার্কেটে এসেছে সেগুলি সায়নের পুরনো ল্যাপটপে চলছে না। তাই নতুন ল্যাপটপ চাই।


‘কেন মা কিনে দিচ্ছে না’, জানতে চায় সৈকত, অর্থাৎ সায়নের বাবা। কিছু বলেনা সায়ন। চুপ করে থাকে। সৈকত বুজতে পারে সায়ন মাকে ল্যাপটপের ব্যাপারে কিছু বলেনি। সাথে আন্দাজ করতে পারে মা এবং ছেলের মধ্যে কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে।


‘ঠিক আছে। কয়েকটা দিন সময় দে। লকডাউনটা উঠুক কিনে দেবো’, এই বলে সৈকত ব্যাপারটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। এদিকে ২০১৯-এর জুনেই দ্বিতীয় বিয়ে করেছ্রে সৈকত। যদিও প্রথম বিয়ের মতন খরচ না হলেও, এখন ট্যাঁকের অবস্থা ভালো নয়। আর সায়ন যে ল্যাপটপ চাইছে তার দাম প্রায় ৫০ হাজারের মতন।


সৈকতের মনে হয় অপরাজিতাকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করা, কেন সে সায়নকে ল্যাপটপ কিনে দিতে পারছে না। সে তো প্রতি মাসে সময়ে টাকা পাঠায়। কিন্তু সৈকত ফোনটা করে না। কয়েকটা দিন অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয়। দেখে নিতে চায় ব্যাপারটা কোন দিকে গড়ায়। সৈকত ভাবে যদি সায়নের মন ও জিতে নিতে পারে, তাহলে কোর্টে গিয়ে সে বলতে পারবে সায়ন তার কাছে থাকতে চায়। অপরাজিতাকে সে যে কোনও প্রকারে অপদস্থ করতে চায়।


                           ***


এই ঘটনার পর দুই-মাস কেটে গিয়েছে। এই দুইমাসে অপরাজিতা শুভজিতের যত কাছে গেছে ততটাই সায়নের থেকে দূরে সরে গিয়েছে। অপরাজিতা এখন অপেক্ষা করে আছে কবে শুভজিত ওকে বিয়ের কথা বলবে। সায়ন যে দূরে সরে গেছে তা অপরাজিতা বুঝতে পারে। মা হিসেবে সে তার সব কর্তব্য পালন করে। কিন্তু তা স্বতেও সায়নের তার কাছ থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাওয়া নিয়ে সে চিন্তিত এবং হতাশ। যখনই কথা বলতে গেছে সায়নের সাথে তখনই সায়ন নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে।


অন্যদিকে এই দুইমাসে সায়ন সৈকতের অনেকটা কাছে চলে গেছে। নতুন ল্যাপটপ তো পেয়েইছে সঙ্গে আরও অনেক কিছু। অপরাজিতা বুঝতে পারে সৈকতের মাথায় কি ঘুরছে। তাই এক রবিবার অপরাজিতা ঠিক করে সায়নকে সে জিজ্ঞাসা করবে সে তার সাথে ভালোভাবে কথা বলছে না কেন।


সায়নের মন জয় করতে সকালের জল খাবারে সায়নের প্রিয় খাবার লুচি-আলুরদম করে দিয়েছিল অপরাজিতা। সায়ন চুপ করে বসে মাথা নিচু করে খাচ্ছিল।


‘তোকে আর লুচি দেবো’, জানতে চায় অপরাজিতা।

‘না’, সংক্ষিপ্ত উত্তর দেয় সায়ন।

‘তোকে আমি বুঝিনা। এখন তুই আমার সাথে ভালোভাবে কথাই বলিস না। শ্রেয়াকে তোর এত পছন্দ’, অপরাজিতা কথার শেষে একটু হাসি জুড়ে দেয়।

‘তুমি তোমার মতন থাকবে আমি আমার মতন থাকব’, চিবিয়ে চিবিয়ে কথাগুলি বলে সায়ন। সায়নের হঠাৎ এই আচরনে অবাক হয়ে যায় অপরাজিতা। 

‘এই ভাবে কথা বলা তুই কার থেকে শিখেছিস? তুই ভুলে যাসনা যে তুই তোর মায়ের সাথে কথা বলছিস’, বেশ রাগের সাথে কথাগুলি বলে অপরাজিতা।

‘ধুর তুমি রাখতো। যাও নিজের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে কাজ করো’, প্রায় সঙ্গে সঙ্গে কথাগুলো বলে সায়ন।


অপরাজিতা বুঝতে পারে সায়ন ঘরের প্রসঙ্গ কেন তুলেছে। কিন্তু কিছু বলে না। খানিকটা নিজেকে শান্ত করে অপরাজিতা আবার কথা বলতে শুরু করে।


‘কাজটা ঘরে বসে করি বলে সংসারটা চলে। তোর বাবা যা টাকা পাঠায় সেটা সব তোর পিছনেই খরচ হয়ে যায় রে’, অপরাজিতা খুবই শান্তভাবে কথাগুলি বলে। কিন্তু সায়নের প্রতিক্রিয়া হয় বীভৎস। চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে থালাটা টেবিলে আছড়ে মারে। যে কটা আলু থালায় ছিল তা ঘরের কয়েকটি প্রান্তে গিয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে। অবাক হয়ে যায় অপরাজিতা। সঙ্গে খানিকটা ভয়ও পায়। তা সত্ত্বেও চিৎকার করে অপরাজিতা জানতে জানতে চায়, ‘কেন এরকম করছিস’।

 

‘দরজা বন্ধ করে তোমরা মোটেই কাজ করনা। অন্য কিছু করো। আমি সব দেখেছি’, এই বলে সায়ন ডাইনিং ছেড়ে নিজের ঘরের ভিতর ঢুকে যায়। অপরাজিতা ওখানেই বসে থাকে। ওর কাছে এখন সব দিনের আলোর মতন পরিষ্কার হয়ে যায়। সায়নের এই রাগের আসল কারন কি, তা সে বুঝতে পারে।


ঘরের যেখানে আলুর টুকরো গুলো পড়েছিল সেগুলো পরিষ্কার করতে করতে অপরাজিতা ঠিক করে নেয় যে গোটা ব্যাপারটা সে শুভজিতকে জানাবে। কারন অপরাজিতার মনে হয় যে শুভজিতের সাথে তার সম্পর্কের জন্যই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। নিজেকে শক্ত রাখার চেষ্টা করে অপরাজিতা। ঘরের সব কাজ ঠিক মতন করে যেই নিজের ঘরে যায় তখন একেবারেই ভেঙে পড়ে অপরাজিতা। কাঁদতে কাঁদতে ভাবতে থাকে কোথায় ভুল হয়েছে। তাহলে কি তার সায়নকে মানুষ করাতে ভুল হয়েছে। নাকি সায়নও তার বাবার মতনই হিংস্র তৈরি হচ্ছে? একের পর এক চিন্তা অপরাজিতার মনে আসতে থাকে। এই সমস্যা থেকে বেরনোর পথ খুঁজে পায়না। এদিকে শুভজিতকেও সে পছন্দ করতে শুরু করেছে। একটা সম্বল ছাড়া যে বাঁচা যায়না সেটা এই ক’বছরে টের পেয়েছে অপরাজিতা।


অনেক ভেবে শেষ পর্যন্ত শুভজিতকেই ফোন করে অপরাজিতা। গোটা ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দেয় অপরাজিতা। সব শুনে শুভজিত জানায় যে সায়নের এখন বয়ঃসন্ধি চলছে তাই এরকম হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিছুক্ষণের মধ্যে এসে হাজিরও হয় শুভজিত।


দুপুরে যে যার মতন খাওয়া-দাওয়া করে নেয়। বিকেলে শুভজিত অপরাজিতাকে বলে একটু হুইস্কি খেতে। শুভজিতের ধারনা মদ খেলে যে টেনশন রয়েছে তা দূর হবে এবং অন্তত রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারবে। শুভজিতের কথা মতন একটু মদ খায়ও অপরাজিতা। সন্ধ্যেটা কোনও রকমে কাটে। রাতে খাওয়া দাওয়া করে আবার দুজনে মদ খেতে শুরু করে। অপরাজিতার মনে হতে থাকে কেউ যেন তাকে বেঁধে রেখেছিল, এখন খুলে দিয়েছে।


মাঝ রাত পর্যন্ত চলে দুজনের মদ্যপান পর্ব। মদ শেষ হয়ে গেলে দুজনে গিয়ে ডাইনিং রুমে গিয়ে বসে। শুভজিত খালি গা এবং হাফ প্যান্ট। অপরাজিতা নিজের গোটা শরীরটাকে বিছানার চাদর দিয়ে জড়িয়ে নেয়। শরীরের কোনও বিশেষ অংশ দেখা না গেলেও বাইরে থেকে দেখে যে কেউ বলে দিতে পারে যে বিছানার চাদর এবং অপরাজিতার শরীরের মধ্যে আর কোনও আবরণ নেই।


দুজনেই বেশ জোরে জোরে কথা বলতে আরম্ভ করে। হাসাহসিও চলে। সায়নের ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম থেকে উঠে বেড়িয়ে এসে দেখে দুজনকে ওই অবস্থায় দেখে। দুজনে ডাইনিং রুমে চেয়ারে বসে রয়েছে। সামনে টেবিলে গ্লাসে রাখা।


সায়ন এক নজরেই বুঝতে পেরে যায় কি হচ্ছে। চোখাচুখি হলেও কেউ কোনও কথা বলে না। সায়ন নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমোতে চলে যায়। দুজন ওই অবস্থায় ডাইনিং রুমে বসেই গোটা রাতটা কাটিয়ে দেয়।


সকাল হলেই শুভজিত বেড়িয়ে যায়। জলখাবারের জন্য সায়নকে ডাকে অপরাজিতা। সায়ন উঠেও আসে। কোনও কথা না বাড়িয়ে চুপ করে খেতেও থাকে। সায়ন কোনও কথা বলছে না দেখে অপরাজিতা নিজেই ফের কথা বলা শুরু করে।


‘কাল অনেকদিন পর পার্টি করলাম। এর পরের বার তোকে নিয়ে করবো’, অপরাজিতা এই কথা গুলো বললেও ওর আসল উদ্দেশ্য সায়নের কাছ থেকে জানা সায়নের শুভজিতকে কেমন লাগে। তাই কথাটি শেষ করে, সায়নের কাছ থেকে কিছু শোনার আগেই জিজ্ঞেস করে, ‘এই তোর শুভজিতকে কেমন লাগে রে’?


এই প্রশ্ন শোনার পর সায়ন কিছুক্ষণ ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর দাঁত খিচিয়ে বলে, ‘তুমি একটা রেণ্ডি’। এই কথা শোনার পর কিছুক্ষণ অপরাজিতা একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকে সায়নের মুখের দিকে। তারপর খুব ধীরে এবং শান্তভাবে বলে, ‘এখনই এখান থেকে বেড়িয়ে যা। আমি তোকে আমার চোখের সামনে দেখতে চাই না। যেখানে যা ইচ্ছে খুশি কর গিয়ে। বেড়িয়ে যা’। 


‘আমি বাবার কাছে চলে যেতে চাই’, সায়ন জানায়।


‘তাইই যা’, অপরাজিতা বলে।


কিছুক্ষণের মধ্যে ব্যাগ গুছিয়ে সায়ন বেড়িয়ে পড়ে বাবার ফ্ল্যাটের উদ্দেশে। ফ্ল্যাটটিতে আগে অনেকবার এসেছিল তাই খুঁজে পেতে অসুবিধা হয়নি।


দরজা খুলে সায়নকে দেখে কিছুটা অবাকই হয় সৈকত। ফ্ল্যাটের ভিতরে ঢুকে একটা সোফায় বসে পড়ে সায়ন। সায়নকে চুপ করে থাকতে দেখে সৈকত প্রথম প্রশ্নটা করে।               

‘কি হয়েছে বল’, সৈকত জানতে চায়।

‘মা বাড়ি থেকে তাড়িয়ে করে দিয়েছে’, উত্তরে জানায় সায়ন।

‘বাড়ি থেকে কেন তাড়িয়ে দিয়েছে’, জানতে চায় সৈকত। কিন্তু সায়ন কোনও কথা বলে না। সায়নকে চুপ থাকতে দেখে সৈকত অপরাজিতাকে ফোন করে। কিন্তু অপরাজিতা ফোন ধরে না। সৈকত সায়নকে আশ্বাস দেয় যে চিন্তার কোনও কারন নেই তার থাকা-খাওয়াতে কোনও অসুবিধা হবে না।

‘তোর চিন্তা করতে হবে না। তুই এখন থেকে আমাদের সাথে থাকবি’, জানায় সৈকত।

সৈকতের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী অনুরাধা দাড়িয়ে সব শুনছিল। সে বলে, ‘আমাদের একটা ঘর তো সব সময় খালিই থাকে’।

অনুরাধার সাথে সায়নের কোনও আলাপ নেই। তা সত্ত্বেও এসবের মধ্যে অনুরাধার আশ্বাস সায়নকে কিছুটা ঠাণ্ডা হতে সাহায্য করে।

অনুরাধা সায়নকে একটা ঘরে নিয়ে যায় এবং আবার আশ্বাস দেয় যে চিন্তার কোনও কারন নেই।


                         *** 

  

সৈকতদের সাথে এক মাস কাটিয়েই বুঝতে পারে যে এই সংসারেও সমস্যা আছে। সৈকত এবং অনুরাধা দুজনে দুটি আলাদা ঘরে থাকে। দুজনের মধ্যে কথাবার্তা প্রায় হয় না বললেই চলে। যেটুকু দরকার সেটুকুই।


স্বামী যে প্রায় তাকে গুরুত্ব দেয় না তা অনুরাধার কথাতেই স্পষ্ট। মোটের ওপর অনুরাধার জীবন বেশ কষ্টের। কিন্তু সায়নের আসার ফলে তার জীবনের গতি-প্রকিতী একেবারেই পালটে যায়। সায়নের সাথেই সে বেশি সময় কাটাতে শুরু করে। এদিকে সৈকতরা যে পাড়াতে থাকে সেই পাড়াতেই শ্রেয়ার বাড়ি। তাই বেশ কয়েকবার শ্রেয়ার সাথে দেখাও করে নিয়েছে সায়ন। সায়নের যে খুব একটা সমস্যা হচ্ছে তা একেবারেই না। এদিকে অনুরাধার সাথেও ভাব বেশ জমেই উঠেছে। অনুরাধার আবার ভিডিও গেম নিয়ে কিছু অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাইই বন্ধুত্ব পাতাতে সমস্যা হয়নি।


কিন্তু তা সত্ত্বেও সায়ন সম্পূর্ণরুপে খুশি ছিলনা। তার কারন সৈকতের আচরণ। সৈকত একটুতেই রেগে যায়। সায়নের সাথে খারাপ ব্যাবহার না করলেও অনুরাধার প্রতি সৈকতের আচরণ ভদ্র সমাজে বলার অযোগ্য। কিন্তু সবকিছুকে হার মানায় যেদিন সৈকত অনুরাধাকে চড় মেরে বসে।


অনুরাধা সায়নের ঘরে ছিল। একটা নতুন গেম খেলা শেখার চেষ্টা করছিল অনুরাধা। সৈকত অনুরাধাকে ডাকে কিছু একটা কাজের জন্য কিন্তু অনুরাধা খেলায় মশগুল থাকার কারনে ডাক শুনতে পায়না। অকস্মাৎ সায়নের ঘরে ঢুকে সে চিৎকার করতে শুরু করে। অনুরাধা আগে অনেকবার সৈকতের এরকম আচরণ দেখেছে তাই পাত্তা না দেওয়ার চেষ্টা করে। অনুরাধার দিক থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া নেই দেখে আরও রেগে যায় সৈকত। প্রথমে হাতটা মুচকে দেয় এবং দুই গালে দুটো চড় মেরে বসে।


সায়ন কিছু বুঝে পায় না কি করবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আচমকাই মুখ থেকে বেড়িয়ে আসে, ‘মারলে কেন ওকে’। এই শুনে সৈকত আরও রেগে যায়। সায়নের বুকে একটা ধাক্কা দিয়ে বলে, ‘তুই চুপ করে থাকবি। কোনও কথা বলবি না’। এই বলে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায় সৈকত।


সায়ন অনুরাধার কাছে এগিয়ে যায়। দেখে অনুরাধা কাঁদছে। সায়নের মুখ থেকে হঠাৎ বেড়িয়ে আসে, ‘কেঁদো না। সব ঠিক হয়ে যাবে’। অনুরাধা চোখ-মুখ মুছে বলে, ‘কিছু ঠিক হবে না। ওর স্বভাবে কোনও পরিবর্তন আসবে না। আমার আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছে না করেনা জানিস’। এই কথাগুলি বলে আচমকাই সে সায়নকে জড়িয়ে ধরে। সায়ন কিছু বুজতে পারে না। খানিকটা থতমত খেয়ে যায়। জড়িয়ে থাকা অবস্থায় অনুরাধা সায়নকে জিজ্ঞাসা করে, ‘তুই আমায় ভালবাসিস’? কোনও উত্তর দিতে পারেনা সায়ন। অনুরাধা সায়নকে বন্ধনমুক্ত করে।


অনুরাধা অন্য প্রসঙ্গে যাওয়ার চেষ্টা করে। সায়নকে জিজ্ঞেস করে কিছু খাবে কিনা। কিন্তু সায়ন কিছু বলে না। উল্টে জিজ্ঞেস করে, ‘আমি আসার আগেও বাবা তোমাকে মেরেছে না’? কিছুক্ষণ একদৃষ্টে সায়নের দিকে চেয়ে থেকে অনুরাধা বলে, ‘তোর মা কেন তোর বাবাকে ছেড়ে দিয়েছে এবার বুঝেছিস’। এই বলে সায়নকে চমকে দিয়ে সায়নের ডান হাতটা ধরে এবং ডান হাতের তালুটা দেখতে থাকে। ডান হাতের তালু দেখতে দেখতে অনুরাধা বলে, ‘এখান থেকে চলে গেলে আমায় তুই ভুলে যাবি। তুই আমার কথা ভাববি’? সায়ন কিছুটা হেসে বলে, ‘ভুলে যাব কেন। আর আমি তো এখন এখানেই আছি’। আবার হঠাৎ প্রসঙ্গ পাল্টায় অনুরাধা। হাতের তালুর দিকে চেয়ে থাকতে থাকতে বলে, ‘তোর হাতের রেখা গুলো এত ব্যাকাত্যারা কেন রে’? এই প্রশ্নে অবাক হয়ে যায় সায়ন। সংক্ষিপ্ত উত্তর দেয়। ‘জানি না’। কিন্তু এরপর যা হয় তারজন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিল না সায়ন। অনুরাধা হঠাৎ করে হাতের তালুতে চুমু খেতে শুরু করে। তারপর আঙুল গুলো আলতো করে চুষতে শুরু করে। সায়নের গোটা শরীর শিহরিত হয়। তারপর সায়নকে অবাক করে দিয়ে সায়নের প্যান্টের ভিতর হাত ঢুকিয়ে দেয় অনুরাধা। জোরে জোরে নাড়াতে থাকে সায়নের যৌনাঙ্গ। দুজনে একে অপরের দিকে তাকিয়ে। সায়নের জীবনে আগে কখনও এরকম অনুভুতি হয়নি। অনুরাধার লম্বা নখ সায়নের যৌনাঙ্গে আঘাত করছে কিন্তু তা সত্ত্বেও সায়ন কিছু বলছে না। যেন কেউ তাকে কথা বলতে বারণ করেছে।

‘আমি ভালো না বাজে’, জানতে চায় অনুরাধা।

‘খুব ভালো’, যেন কেউ কোনও জাদুবলে সায়নকে দিয়ে এই কথা গুলো বলায়।

‘আমি যদি আবার’ কথাটা শেষ করতে পারেনা অনুরাধা। তার মধ্যেই ঘরে ঢুকে পরে সৈকত। দুজনকে ওই অবস্থায় দেখে কি করবে ঠিক করতে পারে না সৈকত।

‘খানকি, আমার ছেলের সাথে এইসব করছিস। কত ছেলে চাই তোর? একটা রেন্ডি শালা’, এই বলে সৈকত অনুরাধার খোঁপাটা ধরে এবং টানতে টানতে সায়নের ঘর থেকে বাইরের ঘরে নিয়ে আসে। বাইরে এনে সৈকত অনুরাধাকে মারতেই থাকে এবং জিজ্ঞেস করতে থাকে আর কার সাথে সে শুয়েছে। সায়ন বাধা দিতে গেলে উল্টে তাকে মারতে শুরু করে। ধাক্কা মারতে মারতে সায়ন আর অনুরাধাকে ঘর থেকে বার করে দেয় সৈকত।


                             ***


রাস্তায় এসে সায়ন প্রথমে বুঝতে পারেনা যে তার কি করা উচিত। কিছুক্ষণ একটা পার্কে গিয়ে বসে থাকে। অনুরাধা সৈকতের কাছে ফিরে যেতে চায়। তাকে নাকি আগেও ঘর থেকে বের করে দিয়েছিল। তারপর আবার নিজেই দরজা খুলে দিয়েছিল। কিন্তু সায়ন ততক্ষণে ঠিক করে নিয়েছে সৈকতের কাছে সে ফিরবে না। তার মনে হয় যদি সৈকতের কাছে ফিরে যায় তাহলে সৈকত ওদের দুর্বল ভাববে।


সায়ন শ্রেয়াকে ফোন করে। বিষয়টা জানায়। ওর বাড়িতে আশ্রয় চায়। কিন্তু শ্রেয়া বলে তাকে সে থাকতে দিতে পারবে না। যখন সব রাস্তা বন্ধ মনে হতে থাকে তখনই সায়নের ফোন বেজে ওঠে। অপরাজিতার ফোন। ফোনটা ধরে নেয় সায়ন। অপরাজিতা কান্না মেশানো গলায় জিজ্ঞেস করে, ‘কিরে কেমন আছিস?’।

‘ভালো আছি’, সায়ন উত্তর দেয়।

‘আমার কথা কি তোর একবারও মনে পরে না’, জানতে চায় অপরাজিতা।

‘মা আমি একটা সমস্যায় পরে গেছি। একটু পরে তোমায় কল করছি’, জানায় সায়ন।

‘কি সমস্যা? আমায় বল’, অপরাজিতা জানতে চায়।

           

সায়ন শুধু এটুকুই জানায় যে বাবা তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। সে এবং অনুরাধা এখন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। এই শুনে অপরাজিতা ওদের সঙ্গে সঙ্গে ওর বাড়িতে চলে আসতে বলে। সায়ন বাড়ি ফিরে যাওয়াই ঠিক মনে করে। সেই কথা মতন সে অপরাজিতার বাড়িতে যায়। সঙ্গে অনুরাধাকেও নিয়ে নেয়।


বাড়িতে গিয়ে সায়ন নিজের ব্যাপারে কথা বলার সুযোগ পায়না। অপরাজিতার নিজের কথাই যেন শেষ হয়না। এই ক’মাসে সায়নকে ছাড়া তার জীবন কিভাবে কেটেছে তা জানাতে থাকে। এবং অঝোরে কেঁদে চলে। শুভজিত যে তাকে ধোঁকা দিয়ে চলে গেছে এবং সে নতুন চাকরি জয়েন করেছে তাও অপরাজিতা জানায়। সে যে প্রথম থেকেই ভুল ছিল এবং সায়ন প্রথম থেকেই ঠিক ছিল তাও জানায়। এর সঙ্গে অপারাজিতা জানায় সে খুবই দুঃখ পেয়েছে যে এই ক’মাসে সায়ন ওকে একবারের জন্য ফোন করেনি দেখে।

অনুরাধার ব্যাপারেও বলে সায়ন। অনুরাধাকে চিনত না অপরাজিতা। সায়ন জানায় অনুরাধা তাকে এই ক’মাসে দেখভাল করেছে। এমনিতেও অপরাজিতার অনুরাধার প্রতি কোনও রাগ বা হিংসা ছিল না। সৈকতকে ছেড়ে আসার কারন তার আচরণ। তাছাড়া অনুরাধা সৈকতের জীবনে অপরাজিতা ছেড়ে আসার পরেই এসেছে।

তিনজনে মিলে ঠিক করে পুলিশের কাছে যাবে। পুলিশের কাছে গিয়ে জানাবে সৈকতের কাণ্ড-কারখানা। এর মধ্যেই কলিং বেল বেজে ওঠে। অপরাজিতা, অনুরাধা তখন সায়নের ঘরে বসে। তিনজনেই ভাবে যে সৈকত এসেছে। অপরাজিতা ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে যায় সদর দরজায় কে তা দেখতে। কিছুক্ষণের মধ্যে যাকে নিয়ে অপরাজিতা ঘরে ঢোকে তাকে সায়নও আশা করতে পারেনি। শ্রেয়া। ঘরে ঢুকেই শ্রেয়া সায়নকে জিজ্ঞেস করে, ‘তুই কি আমার ওপর রাগ করে আছিস’? উত্তরে সায়ন জানায়, ‘না’।

‘তুই আমার সাথে কথা বলবি তো’, শ্রেয়া জানতে চায়।

‘কেন কথা বলব না’, এত সমস্যার পরেও হেসে উত্তর দিয়ে জানায় সায়ন।

‘তুই কিন্তু আমার বয়ফ্রেণ্ড, ভুলে যাস না’, কথাগুলি বলে সায়নের পাশে এসে বসে শ্রেয়া। এই কথা শুনে ঘরে উপস্থিত সবাই হেসে ফেলে। সায়ন শুধু একবার আড় চোখে অনুরাধাকে দেখে নেয়।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama