আশ্বিনেশারদপ্রাতে মায়ের দেখা
আশ্বিনেশারদপ্রাতে মায়ের দেখা


আমরা সকাল হলেই চারিদিকে বিশ্ব বিখ্যাত সঞ্চালক বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সেই গান শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি মন্ডপে মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সুরের সানাই। যা আমাদের কে আশ্বিনের মায়ের আগমনী বার্তা দিতে দিতে কবে যে শেষ হতে বসে। তা বুঝে উঠার ক্ষমতা সাধারণ মানুষের মধ্যে সেই চেতনা থাকে না। শরতের হিমেল হাওয়ায় শিশিরে শিশিরে ভেজা সবুজের ছটা যেন এনে দিয়েছে শারদপ্রাতে। প্রকৃতির সেই হিমেল হাওয়ায় ভেসে চলেছে রঙিন সব মেঘের ভেলা। যা দেখে মনের আঙ্গিনায় বসে পড়ে নির্মল সেই ষষ্ঠীর ছটা। সেই ষষ্ঠীর প্রাতঃকালে এসে হাজির হলো রঙিন কোন সে কুজঝুটিকা। সবাই কে শুভেচ্ছা না জানিয়েছে তাতে নেই কোন বাধা। তবুও তুমি এসে ছিলে মোদের দ্বারে, তব নাহি হয় দেখা। সুন্দর মুহূর্ত গুলো সবাই তো চায় একটু খানিক উপভোগ করতে। তাই দিনের আলোর আশা না বুঝি কোন সে রাতের রঙিন পেন্ডেল মেলা। বিগত দিনে মানুষের ঢল দেখা গিয়েছে অষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করতে আসা অগনীত ভক্ত বৃন্দ গন। তোমার এই প্রভাত পাতে এসেছে মায়ের দর্শন ক্ষনিকের তরনীর তরণ। আশ্বিনের সেই কাশফুলের কোমল শুভ্রতায় হেসে উঠেছে শারদীয় দেবী দুর্গার আগমনী আরাধনার বার্তা।
তব পিছে পিছে নাহি কোন কোমল শিশিরে আঘাত করা মনের মানুষ জন। পিছু পা হবো না তবো মুখ খানি অঅরাঙিয়ে দেবো দেবীর চরণ তলে। উত্তুরে হাওয়া বহিছে ভুবনে হালকা হিমেল। কখনো কখনো মা আসেন নাগর দোলায় চড়ে মায়ের বাবার বাড়ীতে। তাইতো মর্তধামে পুজিত হয় মায়ের বহু রুপী রুপের অধিকারী রুপ। আর দেবী দুর্গা হলো মায়ের আর এক রুপ। তাই তো আশ্বিনের শারদপ্রাতে মায়ের দেখা মেলে বছরের এই সময় কালে। এবং এই সময় মাকে নিয়ে আপামোর জনগণের এতো উল্লাস। শুধু মায়ের দেখা পাওয়া নয়, এই কয়েক দিন ধরে চলে আনন্দের ছটা ভরা উন্মাদনা। এই আনন্দের মাঝে কিছু সময় অতিক্রান্ত করে মা আবার ফিরে যাবেন তাঁর নিজ ঘরে। মা যে থাকেন সেই কৈলাস পর্বত শৃঙ্গ মাঝারে। সমস্ত নারী জাতিকে একটি সময় অতিক্রম করে তার নিজের বাড়ীতে ফিরে যান। যতো খন না মাকে আমরা কোন সুদক্ষ বাবার হাতে তুলে না দেওয়া পর্যন্ত। মা চিরকাল মা ই থাকেন। সে হোক বিবাহিত। আবার হোক না অবিবাহিত মায়ের রুপ। এর কিছু দিন পরে মা আসেন জগৎ জননী জগৎধাত্রী মাতার রুপ নিয়ে। এই ভাবে মা আমাদের সামনে বহু রুপে এক এক বার এসে থাকেন। আর ফিরে যাওয়ার সময় ধরাধাম কে চোখের জলে ভরিয়ে দিয়ে চলে যান।