রঙিন আকাশডাঃ গৌতম মান্না
রঙিন আকাশডাঃ গৌতম মান্না
শ্রাবণ মাসে ঝিরি ঝিরি হাওয়া সঙ্গে বর্ষা মৌসুমে বায়তুল বহিছে , পৃথার সেদিন স্কুল থেকে ফিরতে একটু দেরি হয়ে গেছে । বাড়ীতে ঢোকার সময় হঠাৎ কর্নগোচরে এলো এক বিদেশী ছেলের সঙ্গে তাঁর বিবাহ দেওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে গিয়েছেন মা । যত টুকু শোনা গিয়েছে তা থেকে অনুমান, বাবা পৃথাকে খুব ভালো বাসে । পৃথার বাবা মেয়ের অনুমতি ছাড়া কখনো কোন কাজ উনি করেন না ।
বিমল মজুমদার অর্থাৎ পৃথার বাবা উনি একটি সরকারি ব্যাঙ্কে চাকুরীরত । এখন প্রতিদিন বাড়ীতে ফিরে স্ত্রীর ওই কোলাহল ভালো লাগে না ! মেয়ে পড়াশোনায় খুব ভালো, অতএব তিনি খুব চিন্তা ভাবনা করে কাজ করেন । মেয়ের অনুমতি ছাড়া কখনো কোন কাজ করতে চাইতেন না , এই নিয়ে বিমল বাবুর সঙ্গে কমলা দেবীর কোলাহল প্রায় লেগেই থাকত ! কমলা দেবী মেয়েকে তিনি যে ভালো বাসেন না এটা বলা ভূল হবে , তবে তিনি চান মেয়ে যখন বড়ো হয়েছে তাকে আর বাড়ীতে না রেখে বিয়ে দিয়ে দিতে চান । যেহেতু ওই বিদেশ থেকে আসা ছেলেটি হলো প্রতিবেশীর দূর সম্পর্কের আত্মীয়, সেটা কমলা দেবীর অজানা ছিল না । যে হেতু ছেলেটি লন্ডনের চিকিৎসক তাই………
বিমল বাবু তিনি তাঁর মেয়েকে,না জিজ্ঞেস করে কখনো এই কাজে এগিয়ে যেতে চাইছেন না । যদি হিতকে বিপরীত হয় ! এই কোলাহল পৃথার কর্নপাত না হয় সে জন্য বিমল বাবু সব সময় কমলা দেবীকে এড়িয়ে চলতেন । তার জন্য বিমল বাবুকে বেশ ঘাত প্রতিঘাত কমলা দেবীর কাছ থেকে সহ্য করতে হতো মেয়ের জন্য। তিনি ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে আমার মেয়ে পৃথা এমন কোন ঘটনা ঘটাবে না যে, তার বাবার সম্মান হাণি হয় মেয়ের প্রতি
সেই শ্রদ্ধা বিমল বাবু রাখতেন ।
না ! পৃথার বাড়ীতে প্রবেশ দেখে তিনি বুঝতে পারলেন যে তার ধারণা ভুল প্রমাণিত হচ্ছে ! বিমল বাবুকে বিষন্নতা দেখে,পৃথা কিছু না বলেই বাড়ীর মধ্যে গিয়ে দরজা বন্ধ করে এবং সঙ্গে সঙ্গেই বিজলী বাতি নিভিয়ে ফেলে । বিমল বাবুর খুব স্টেনসান্
বোধ করছেন ! এই দেখে স্ত্রী কমলা দেবী বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লেন । দরজা খোলার আওয়াজ শুনে পৃথা চমকে উঠে, হঠাৎ সে বিজলী বাতি জ্বালিয়ে দেয় ।
পৃথা দরজা খুলে দেখে বিমল বাবুর চোখে জল, পৃথা আর থাকতে পারলেন না সে তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে খেতে বলল আমি তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি বাবা……
এবার কমলাকে, আদর করে ,নাম না ধরে বিমল বাবু বললেন ও পৃথার মা….. তুমি আমার উপরে রাগ না করে ফিরে এসো । যতই হোক পৃথা কী শুধু আমার মেয়ে, এ তো আমাদের দুজনের 'রঙ্গিন আকাশ ' তাই তোমাকে ছাড়া আমি যেমন থাকতে পারবো না তেমন আমাদের পৃথা মাও কীভাবে……
সবাই সবাইকে জড়িয়ে ধরে সেই জ্যোৎস্না রাতে, আকাশের দিকে তাকিয়ে কোমল হৃদয়ে যে যার মতো আনন্দ উপভোগ করতে , প্রাণ খুলে সবাই হাসাহাসি করতে লাগলো ।
নমস্কার।