STORYMIRROR

DR.GAUTAM MANNA

Drama Romance Action

3  

DR.GAUTAM MANNA

Drama Romance Action

তমালিকা ডাঃ গৌতম মান্না

তমালিকা ডাঃ গৌতম মান্না

4 mins
25

তমালিকা/ পর্ব -১১৫


কনিকা দেবী জুনিয়র জিনিয়াসের ফাঁস করা পর্দায় আটকে গিয়েছেন বলা যেতেই পারে, কিন্তু এই তকমা মুছে ফেলতে এখন উনার কিচ্ছু করার নেই। তাই তিনি শত চেষ্টা করে চলেছেন নষ্ট হয়ে যাওয়ার সেই সমস্ত সম্পর্ক কে ফিরে পেতে, এটা যেন একটা মরিয়া প্রচেষ্টায় পরিনত হতে শুরু করেছে। এবং সেই চেষ্টাকে কাজে লাগাতে গিয়ে তিনি প্রাণ পণ এক রুদ্ধশ্বাস মরিয়ার অন্তিম লড়াই। যা নষ্ট হয়ে যায়,তা ফিরে পাওয়ার সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের অবস্থায় রয়েছেন, কিন্তু এটা যে জুনিয়র বুঝতে পেরেছেন তা হয়তো কনিকা দেবীর অজানা থেকে গিয়েছে। আসলে পুরনো প্রেম ফিরে পেতে কে না চায় বলুন?.... 

পৃথিবীর বুকে আজও পর্যন্ত তা ব্যাতিক্রম হয়েছে বলে কারোর জানা নাই,তাও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম দেখা গিয়েছে। তবে তিনি নিজেকে পরিবর্তন করে নেওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছেন কোন এক পরিস্থিতিতে পড়েই, কিন্তু কনিকা দেবী তিনি শুধু নিজের এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন পড়ে এই ডেমেজ কন্ট্রোল করার জন্য এগিয়ে এসেছেন নিজের থেকে। আর তিনি যে ধরনের প্রশ্ন করেছেন উনাকে, তা হয়তো তিনার ভালো নাও লাগতে পারে। কেন না তিনি তো এই পরিবারের সদস্যদের একজন কে চিনতে পেরেছেন তমালিকার মধ্য দিয়ে নয়, তিনি জানতে পেরেছেন অম্বিকা মহারাণী মধ্য দিয়ে । তাতে করে তিনি অম্বিকার নাম ধরার সঙ্গে সঙ্গেই চুপ করে গিয়েছেন কনিকা দেবী, কেন না তিনি যে একজন বুদ্ধিমান ছেলে তা তিনি বুঝতে পেরেছেন। আর এই সমস্ত কিছুর সঙ্গে কখনোই উনার বাবার মতো করে চিন্তা ভাবনা করেননি, তিনি ঠান্ডা মাথায় কাজ গুলো করে গিয়েছেন এবং শান্ত প্রকৃতির ছেলে হিসেবে সবার কাছে পরিচিতি রয়েছে। যা সহজে মানুষের মনের মধ্যে মিশে যেতে পারেন উনি, এবং সবাইকে আপন করে নেওয়ার চেষ্টা করে থাকেন সর্ব সময়। সেই কারণেই হয়তো তমালিকা ভালো বেসে এসে ছিলেন বলেই উনার ধারণা, কিন্তু তা এখন বাস্তবে অন্য কোন কিছু দেখে চলেছেন। উনি অম্বিকা কে ভালো বাসার আগেই উনার মা বলে ছিলেন, “দেখো জুনিয়র, তোমার সমস্ত কষ্ট,দুঃখ ,আমি ভাগ করে নেবো, কিন্তু তোমার বাবার ভালোবাসার ফলকে নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই আমি তা মেনে নেবো না। এর জন্য তুমি আমাকে কখনো কোন সময় মা হিসেবে দেখতে পাবে না তোমার চোখের সামনে, এবার তুমি ভেবে দেখো কি করবে!” 


জুনিয়র জিনিয়াস মার্গারেট মায়ের কথার পরিপ্রেক্ষিতে বলে ছিলেন, “মা, আপনি হলেন আমার পৃথিবীর বুকে আলোর ছটা। যা থেকে আমি এই জগৎকে দেখতে পেলাম, এবং তোমার এই সামান্য একটা ঘটনা কে আমি কখনো কোন ভাবেই কোন পরিস্থিতিতে স্বীকার করবো না, এদিক থেকে তুমি আমার উপর ভরসা রাখতে পারো মা । আমার কাছে মা হলেন সমস্ত কিছু, তাই আমি ও চাই না তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও চলে যাও।” 


মা ছেলের সেই যে প্রতিজ্ঞা বদ্ধ বাণী আজও তিনার কানে বেজে চলেছে। অম্বিকা হলেন কনিকা দেবীর একমাত্র মেয়ে, তিনি এক সঙ্গে পড়াশোনা করে এসেছেন তমালিকা দেবীর ছোট্ট বেলার সঙ্গী হিসেবে। যা আজও পর্যন্ত ওদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে নি জুনিয়র জিনিয়াসকে নিয়ে, কিন্তু এখন বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কনিকা দেবী নিজের থেকে। তিনি নিজেকে পাগল কুকুরের মতো জুনিয়র জিনিয়াসের পিছনে পিছনে ছুটে চলেছেন, তবে নিজেকে সাকশেষ ফুল করার লক্ষ্যে রয়েছেন। এখন ওদের মধ্যে সে ভাবে কোন সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি, তার জন্য এতো সমস্যা। কলেজে পড়াশোনা করার আগেই তিনি জেনে গিয়েছেন নিজের ক্লাস ফ্রেন্ড হিসেবে, এবং ভিন্ন স্কুল কিন্তু একই সঙ্গে একই সালে পড়াশোনা করে থাকেন। 

সেই কারণেই তিনি উনাকে এড়িয়ে যেতে নিজেকে সেদিনের মতো রেহাই করে বাড়ীতে ফিরে এসেছেন। কয়েক দিন পর তিনি যখন কলেজের মধ্যে এসেছেন, তখন তিনি নিজেকে শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করছেন সমস্ত বিষয়ের থেকে। তাই ওই দিন অম্বিকাও কলেজের মধ্যে প্রবেশ করছেন। ঠিক এমন সময় সেই মুহূর্তে গেটের সামনে দুজনের মধ্যে স্বাক্ষাত হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি কি বলবেন বুঝে উঠতে পারছেন না, ওদিকে অম্বিকা তিনিও উনাকে সহজ ভাবেই মনের অকুণ্ঠা না রেখেই জিজ্ঞাসা করলেন, “ জুনিয়র, তোমার কি হয়েছে বলোতো, যেখানে তুমি আমাকে ডেকে কথা বলতে। আজ তুমি আমাকে এড়িয়ে যেতে চাইছো কেন, তোমার কি কিছু হয়েছে বুঝি? আমি কি কোথাও ভুল করে ফেলেছি তোমার সঙ্গে?”


 জুনিয়র বেকায়দায় পড়ে যান অম্বিকার কথা শুনে, এরপর তিনি অম্বিকা কে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও কোন ভাবেই এড়িয়ে যেতে পারলেন না । অম্বিকার কথার প্যাঁচে পড়ে গিয়েছেন, তাই বাধ্যতামূলক তিনি উনাকে ওখানে দাঁড়িয়ে বলবেন কি বলবেন না ভেবে চলেছেন, ঠিক তখনই অম্বিকা উনার পাশে এসে ভালো করে দেখার পর তিনি বুঝতে পারলেন যে, তিনি বিড়বিড় করে গডের নাম করে কি সমস্ত বলে চলেছেন। আর হাতটা ওপর নীচ করে চলেছেন বারংবার, এই দেখে তিনি মনে মনে ভাবলেন যে, “ আমাকে দেখে জুনিয়র জিনিয়াসের এই অবস্থা হঠাৎ করে হওয়ার কারণ কি, আর আমার সঙ্গে এই ধরনের ব্যবহার করার কারণটাই বা কি হতে পারে!” 


ভাবতে ভাবতে তিনি এগিয়ে গেলেন নিজেদের ক্লাস রুমের দিকে।….

এরপর প্রথম ক্লাস শুরু হওয়ার কিছু সময় বাদে তিনি পিছনের দিকে এবং একা একা বসে রয়েছেন দেখা যাচ্ছে, আর কি যেন চিন্তা করে চলেছেন সারা ক্লাস ধরে। এই দেখে কলেজের স্যার জানতে চাইলেন, “ জুনিয়র, তোমার শরীর খারাপ?” 


জুনিয়র উত্তরে জানালেন, “ না স্যার।”


 “তাহলে এভাবে মনমরা হয়ে থাকার কারণ কি?” 


জুনিয়র আর কিছু উত্তর দিতে পারলেন না, বরং তিনিও এরপর উনার কাছে আর কিছু জানতেও চাইলেন না । কেন না কলেজের মধ্যে ছেলে মেয়েদের প্রতি খুব একটা সহানুভূতিশীল হতে যাওয়া মানেই শিক্ষক মহাশয়দের পদে পদে বিপদ। এটা কলেজের স্যারদের খুবই জানা, তাই তিনি পুনরায় বলেন, “ জুনিয়র, তোমার যদি ভালো না লাগলে তুমি একটু বাহিরের থেকে ঘুরে আসতে পারো,পরের দিন তোমাকে আমি বুঝিয়ে দেবো তোমার পড়ার অংশটুকু।……


স্যারের কথা শুনে অম্বিকা তাকিয়ে রয়েছেন জুনিয়রের দিকে…..



কলেজে অম্বিকা এবং জুনিয়র মুখোমুখি।






Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama