জাতীয় আত্মাহুতি
জাতীয় আত্মাহুতি
জাতীয় আত্মাহুতি
স্মরজিৎ দত্ত
রঞ্জন তুমি একা নও,
পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখো
দলে দলে ওরা আসছে ;
আসছে তোমার পেছন পেছন।
ওরা কেউবা অসহায়,
ওরা কেউবা পাইনি চাকরি,
কেউবা দারিদ্রতায় জীর্ণ,
তবে সকলেরই লক্ষ্য ,
শূণ্য পৃথিবীতে চিরকালের মতো
চিরকালের মতো শূন্যে মিলিয়ে যাওয়া।
ওরা দীপ্ত, ওরা জিদি;
ওরা সাহসী, ওরা নির্লিপ্ত।
ওরা প্রতিবাদী, ওরা ক্ষিপ্ত;
তবুও ওরা ভদ্র, ওরা বিনয়ী।
এই নেই পৃথিবীতে জন্ম ওদের,
অন্ন নেই, অভাব তাই বস্ত্র নেই;
অর্থ নেই, তাই মাথা তোলবার জায়গা নেই।
তাবেদারি করতে পারে না বলে
সমাজে পজিশন নেই।
ওরাই আসছে দলে দলে,
ওদের প্রতিরোধ করবার জন্য
অপর দিক হয়েছে তৈরি।
সংখ্যায় ওরা প্রতিবাদীদের চেয়ে
অনেক অনেক বেশি।
তবুও ওরা আসছে,
ওরা আসছে ওরা একসঙ্গে
একসঙ্গে দেবে আত্মাহুতি।
আজ ওদের কাছে
ওদের কাছে মৃত্যুই একমাত্র পথ;
নেই পৃথিবীর একমাত্র জ্বালামুখ
তাতেই ওরা দেবে একে একে
একে একে নিজেদের বিসর্জন।
হয়তো আসবে মিডিয়া,
হয়তো আসবে বুদ্ধিজীবীর
বুদ্ধিজীবীর কিছু অংশ।
হয়তো আসবে রাজনীতির
রাজনীতির তাবেদারি কিছু ভক্ত।
তারা স্লোগান তুলবে
এ মৃত্যুর বিচার চাই ,বিচার চাই।
কোর্টে উঠবে মামলা,
বিচারক বলবেন এ কোন প্রহসন?
গঠিত হবে তদন্ত কমিশন।
বিচার চলবে ,চলবে ,চলবে;
খবরের কাগজ, তারা টিআরপি তুলবে,
প্রথম দিন প্রথম পাতায়,
তারপর ধীরে ধীরে
একদিন খবরের কাগজের সাদা পাতার
পাতার মত বিলীন হয়ে যাবে ;
বিলীন হয়ে যাবে, এই এমন ঘটনা।
কিন্তু ওদের অপরাধ!
ওদের মৌলিক অধিকার কি
অধিকার কি কেউ ফিরিয়ে দিতে পেরেছিল?
ওদের মৌলিক অধিকার কি
অধিকার কি কেউ ফিরিয়ে দিতে পারবে?
ওদের মায়েদের কোল
কোল পুনরায় কি ভরিয়ে দিতে পারবে?
তবে এ কোন বিচার ?এ কোন প্রহসন?
তার কি সংজ্ঞা, আমি, তুমি, আমরা,
কি আমাদের সমাজ, বলতে পারবে?
ইতিহাসের পাতায়, কোনদিন কি
সেই প্রতিবাদ ভেসে উঠবে
ভেসে উঠবে কালো অক্ষরে?