ভ্রুক্ষেপ
ভ্রুক্ষেপ


সেদিন বাসে উঠেছিলো কথা
কোনো এক রাজনৈতিক বিষয়ে ,
পাশে এক দাদুর কিছু নেই ভ্রুক্ষেপ ,
কারণ ওটা তাঁর খাবার সময় ।
তর্ক বেশ জমে গেছিলো কিছুপরেই ,
তখনও শুনি দাদুর শ্যামাসঙ্গীত ,
অবাক হয়ে তাকালাম একটিবার ,
বাকি বন্ধুরাও হল স্তম্ভিত ।
গোটা বাসের সব লোকের মুখেই
হচ্ছিলো সেই একটাই বিশেষ আলোচনা ,
আমি দাদুকে কই , " কি গো দাদু
তুমি তো কিচ্ছুটি কইছো না ! "
দাদু মুচকি হাসলেন আমাপানে ,
সে চাওয়ায় ছিলো পূর্ণবিদ্রুপ ,
বলেন , " ওসব শুনে আমার কি ? "
এবার আশেপাশের লোকেরাও চুপ ।
ফের কন , " সাড়ে তিন কুড়ি পার
করে এসব খবরে কাজ নেই ,
পেনশন নিয়ে কিছু খবর হল বার ?
তবে তা আমায় বলো ভাই ।
আমার যেখানে সকালে বাপুজী ,
দুপুরে লাগে শুধু ডাল - ভাত ,
বিকেলে একটা বর
্ন পাউরুটি
আর রুটি - দম দিয়ে কাটে রাত ;
বছরে একটা জামা কিনলে হয় ,
সেখানে ওইসবে আমার কি হবে ?
তাইতো বলি পেনশন বা ভাতা
নিয়ে খবর বলো , কাজ ওসবে । "
একবন্ধু বলে , " দেশ নিয়ে তোমার
উদ্বেগ যে বলছো নেই তাহলে
দেশের ক্ষতি হলে তো তা সকলের ,
তাও নেই চিন্তা এসবে কোনোকালে ? "
" নিজের বাড়িটাই বাঁচাতে পারলাম না !
আবার দেশ বাঁচানোর কথা ভাববো ?
যে কটাদিন বেঁচে আছি আমি
এসব চিন্তা ছেড়ে আশ্রমে একা থাকবো । "
আলোচনাটা অন্ততঃ আমাদের মধ্যে
সেদিন আর হয়নি সেই কথা শোনার পরে ,
অনেক ভেবেছি সেই নিয়ে বাড়িতে
বসে নিশ্চিন্তে একলা ঘরে ।
ভেবেছি , দেশ নিয়ে কি হচ্ছে তা
আমার মতোই অনেকেরই শুধুই ভাবা ,
ছাপোষা বা দিনআনাদের কি যায় আসে ?
ওদের চালের বাইরেই রাখে আজীবন দাবা ।