নেতাজী
নেতাজী
আসমুদ্র হিমাচল যখন প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে কেবল অহিংস আন্দোলনে রাজি
তখনই ভারতের গর্ভে সশস্ত্র বিপ্লবের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি করতে জন্ম নিলেন নেতাজি
ইংরেজদের চরম অত্যাচারে সমগ্র ভারতের জনগণ যখন ভীত-সন্ত্রস্ত ও দিশেহারা
তখন তোমার বিপ্লবী মানসিকতা ও অটল দেশপ্রেম দেখায় এক নব আলোর ধারা
জানকীনাথ বসু ও প্রভাবতী দেবীর নবম সন্তানরূপে জন্ম নেন তিনি কটক শহরে
শিশুকাল থেকেই জাতীয়তাবাদের রক্ত প্রবাহিত হতে শুরু করে তার সমগ্র শরীরে
শৈশব থেকেই মেধাবী সুভাষচন্দ্রের পড়াশুনার ক্ষেত্রে দেখা যায় এক গভীর নিষ্ঠা ও টান
ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় সমগ্র কোলকাতার মধ্যে সাফল্যের সাথে অর্জন করেন প্রথম স্থান
সিভিল সার্ভিসে নিয়োগপত্র লাভ করেও বিপ্লবী সচেতন দৃষ্টিভঙ্গিতে করেন তা প্রত্যাখান
ব্রিটিশ সরকারের উৎখাতের লক্ষ্যে বিনা দ্বিধায় বেছে নেন রাজনীতির কণ্টকময় প্রাঙ্গন
জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হলেও গান্ধির বিরোধিতায় বাধ্য হয়ে করেন পদত্যাগ
নিজ প্রচেষ্টায় গড়ে তোলেন অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লক-যা প্রচার করে চরম জাতীয়তাবাদ
বিপ্লবী চিন্তাধারা প্রচারের জন্য বহুবার হতে হয় তাকে কারারুদ্ধ - ভারতের বিভিন্ন স্থানে
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গৃহবন্দি দশা থেকে পলায়ন করেন প্রথমে জার্মানি ও পরে জাপানে
রাসবিহারী বসুর সহযোগিতায় প্রবাসী ভারতীয়দের নিয়ে গঠন করেন জাতীয় সেনাবাহিনী
ব্রহ্মদেশ,ইম্ফল ও কোহিমায় সাময়িকভাবে ব্রিটিশ শাসনের অবসানে সমর্থ হয় এই বাহিনী
কিন্তু বিশ্বযুদ্ধে জাপানের আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়ে পিছিয়ে আসে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি
রাষ্ট্রদোহিতার অপরাধে ব্রিটিশের বিচারে কারাবন্দি হয় এর সাথে যুক্ত সকল ভারতীয় কর্মী
মায়ানমারে বন্দি অবস্থায় গুরতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় ভিয়েনায়
এখানেই তার স্বরচিত গ্রন্থ “ইন্ডিয়ান পিলগ্রিম” ও “ইন্ডিয়াস স্ট্রাগেল ফর ফ্রিডম” প্রকাশ পায়
বিদেশে থাকাকালীন এক অজ্ঞাত কারণে মৃত্যু হয় তার,যার রহস্য আজ অবধি হয়নি উদঘাটন
বহুমতে তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত ভারতীয় নেতাদের ষড়যন্ত্রে দিতে হয়েছে তাকে বলিদান
অন্তর্ধানের রহস্য উন্মোচিত না হওয়ায় সারা ভারতবাসীর বিশ্বাস - নেতাজি রয়েছেন আজও অমর
হয়ত কোনও ঔপনিবেশিক শক্তির জাগরণে ভারত আবার দেখবে তার প্রত্যাবর্তনের প্রহর।।