হার্মাদ ওমিক্রন
হার্মাদ ওমিক্রন
পর্তুগালের রাজা ম্যানুয়েল বাংলার খবর পান,
পিরেস কাপ্তেনকে বাংলায় বাণিজ্যের পরামর্শ দেন।
পিরেস দ্য ম্যানড্রোডা তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গোদের বলেন,
চলো যাই, পূর্ব ভারতীয় দ্বীপেগুলোয় করি অভিযান।
বাংলায় পরে যাওয়া যাবে ভেবে দ্বীপেই থেকে যান।
পিরেস, তাঁরই স্বজাতীয় জোয়াও কোয়ালহোকে,
এবারে বাংলায় প্রথম বাণিজ্যের কারণে পাঠান।
আরেক কাপ্তান, জোয়াও সিলখেরা, তার নাম,
কিছুদিনের মধ্যেই বাংলার সম্পদের খবর পান।
তিনি চারখানা খালি জাহাজ নিয়ে বানিজ্য করতে,
বাংলার বন্দরে হাজির হন, জাহাজ নোঙর করান।
এভাবেই পর্তুগীজেরা জনে জনে বানিজ্যের কারণে,
বাংলায় আসেন, বসতি স্হাপন করে থেকে যান।
নিরীহ গোবেচারা বণিক হয়েই পঁচিশ বছর কাটান।
বাংলার সুলতান গিয়াস উদ্দিন মহম্মদ শাহ,
শেরশাহের আক্রমণ থেকে বাঁচার কারণে,
পর্তুগীজদের কাছ থেকে সাহায্য নেন।
চট্টগ্রাম ও সপ্তগ্রামের কর আদায়ের কাজ দেন।
কোনো সুযোগ পেতে গেলে কিছু সুযোগ দিতে হয়,
এটাই নিয়ম ব্যবসার, এভাবেই লোকে ব্যবসা চালায়।
এই কর আদায়ের নামে হার্মাদ বাহিনী দস্যুবৃত্তি করে,
নিজেদের রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক শক্তি বৃদ্ধি হয়।
শেরশাহের বাংলা বিজয়ের পর কিছুদিন থাকে চুপ,
কিন্তু অরাজগতার ফাঁকে মগেরা বাংলায় দেয় চাপ।
পর্তুগীজেরা এবার আরাকানিদের বন্ধু সাজে,
বন্ধুত্বটা লাগায় তারা ভালোভাবেই কাজে।
হুগলি নদীর ধারে তৈরী ব্যান্ডেলের গীর্জার মতোই,
কর্নফুলির নদীর ধারেও এক গীর্জা বানায়।
গীর্জাতেই সন্তুষ্ট নয়, বাণিজ্য কুঠিও করে স্হাপন।
ক্রমে ক্রমে করে ফেলে ওরা নগরও পত্তন।
কখনো সুলতান, কখনও আরাকান, কখনও মোগল,
যেখানেই আছে অর্থের সম্ভাবনা, দল বেঁধে যাই চল।
পর্তুগীজ দস্যুরা জানতো অর্থের জয় হবে নিশ্চয়,
বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থই রাজত্ব করে পৃথিবীময়।
এমনকি মানুষও অর্থের বিনিময়ে বিকিয়ে যায়,
তাই জোর করে বা ভুলিয়ে মানুষ জাহাজে উঠিয়ে,
বাজারে নিয়ে মানুষকে অনায়াসে বিক্রি করে দেয়।
এভাবেই বাংলার মানুষও ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীতে,
এখানকার মানুষ স্বেচ্ছাতেও গেছে ভ্রমণ করতে,
অথবা গেছে কেউ কেউ নিজেরাই বাণিজ্য করতে।
একটু বেশি রোজগারের আশায় আজও বাঙালি,
নির্ভয়ে, নির্দ্বিধায় দেশ দেশান্তরে পাড়ি দেয়।
এখন হার্মাদ নেই কিন্তু তার চেয়েও ভয়ঙ্কর করোনা!
সারা পৃথিবীতে ঘাপটি মেরে আছে আজ ওমিক্রন,
যারা দেশে আছো বা বিদেশে সকলেই হও সাবধান।
