বটবৃক্ষ
বটবৃক্ষ
ধূসর কংক্রিটের জঙ্গলে দাঁড়িয়ে,
একলা আমি, ইচ্ছা মৃত্যুর আশায়।
অপেক্ষা, একটা ভীষণ কালবৈশাখীর।
যা, এক লহমায় ছিন্ন করে দেবে,
মাটির বুকে আঁকড়ে থাকা, সকল বাঁধন।
ওবেলা গুটি কয়েক লোক এসেছিলো।
তাদের চশমা আঁটা প্রাণহীন চোখ,
আর হাতে, ভবিষ্যতের হিসেবের দলিল।
তপ্ত দুপুরের, ক্ষমাহীন দাবদাহ তখন ,
এক ফুৎকারে, নিভিয়ে দিতে চেয়েছিলো ,
তরুণ প্রাণের দুরন্ত প্রতিশ্রুতি।
আমার জীর্ণ শাখার, এক মুঠো সবুজ নিয়ে,
আগলে রেখেছিলাম ওদের।
ওদের ব্যাস্ত সময়ের, হিসেবে মাপা কথার,
বিষয় ছিলাম, কালের পথে বেহিসাবি, এই আমি।
হালকা হাওয়ার ছোঁয়ায়, যখন মুছে দিচ্ছিলাম,
ওদের কপালে লেগে থাকা, দীর্ঘ পথের ক্লান্তি,
>তখনই জানতে পারলাম সেই আশ্চর্য সত্যিটা।
আমার এই অচলায়তন বেমানান অস্তিত্বটা,
আজ পথ আটকে দিয়েছে প্রগতির।
হয়তো যে ছোট ছোট হাজার স্বপ্নের ইচ্ছেরা,
আজও লাল হলুদ সুতোর মানোতে,
আটকে আছে আমার বুকে,
তারা আমার মতোই আজ অবান্তর অতীত।
পড়ন্ত বিকেলের শেষ আলো যখন,
পাড়ি দিলো হাজার তারার দেশে,
ওদের এজলাসে তখন সর্বসম্মতিক্রমে,
স্বাক্ষরিত হলো আমার মৃত্যুদণ্ডের ফরমান।
স্মৃতির ভারে প্রাচীন, এই মৃতপ্রায় শরীরে,
এখন অভিমান, বড্ড বেমানান।
তবুও শেষ অমাবস্যার অকৃপণ আঁধারে,
যখন স্বপ্ন বয়ে আনা দখিনা হাওয়া,
এসেছিলো শেষ বিদায় জানাতে,
তখন তার কাছেই রেখে গেলাম,
এক ফালি দীর্ঘশ্বাস, আর আমার কাছে জমিয়ে রাখা ,
ওদের ভুলে যাওয়া স্বপ্নের ইতিহাস।