মেয়ে, এবারটা লেখা হলো না !
মেয়ে, এবারটা লেখা হলো না !


সে মেয়েকে নিয়ে অনেক লিখেছি ,
লিখেছি তার জলনুপুরের শব্দ নিয়ে ,
তার কবরীতে বাঁধা মেঘ নিয়ে ,
চোখে বিদ্যুৎ ঝিলিক নিয়ে লিখেছি অনেক ।
সে নীলিমার ঘোঙট সরিয়ে নির্দ্বিধায়
মাথা ঢেকেছে রাঙা উড়নি দিয়ে ।
কাব্য করে আদিক্ষেতা করেছি তার রূপ নিয়ে ।
তার অঙ্গময় মুক্তধারা খেলা করেছে ,
তার ছিটেয় আমি আমার কাব্য
কিশলয়ের মত সতেজ প্রাণ পেয়েছে ।
মেয়ে বলতো , " তুমি তো আমায় ছুঁয়েই দেখলে না ! "
আমি বলতাম , " চোখ ধুয়েই শান্তি আমার । "
সে বলতো , " ও রূপস্তুতি করতে কত দেখলুম !
কোনোদিন আমাতে লুকোনো আসল গল্পটা
পড়তে দেখলুম না , সুখের মহলের বাইরে এসো ! "
আমি কিছু মনে না করেই লিখে যেতাম ।
আজও শুরুতে ভেবেছিলাম আগের মতই একই ,
সেই কোমলতা , স্নিগ্ধতা , দীঘির গন্ধ
এসব মেখেই সে আসবে আমার সম্মুখে ।
কিন্তু না , সে তার সাথে আজ আনলো
বেদুইন গতির উল্লাস , দুরন্তপনা
যা তার চরিত্রের সাথে যায় না ।
সে কীসের যেন আক্রোশ পুষে রেখেছিলো ,
হয়তো সে আমায় আহাম্মক ভাবে ।
আমার চোখে ধরা পড়লো তার অচেনা রোষ ,
আমার মতো যারা যেখানে আদিক্ষেতা করে
তাদের সেখানে সেখানে মহারুদ্রাণী হয়ে
প্রলয়নেত্য দেখালো , সে এক ভয়াল রূপ !
এই নিয়ে কাব্য করা চলে না ,
তবু সে কানে কানে নালিশ করতে এলো
না লেখার, না কাব্য করার জন্য ।
যেন সে আমার থেকে ছন্নছাড়ার ছন্দটা ,
ছন্দহীনার ছন্দটা বুঝে বলে যায় ,
" তোমায় বলেছি কবে এসো প্রিয় ,
দুইহাতে মোর সোহাগ নিও ।
মিলবো মোরা বিলুপ্তির সীমে ,
হারাতে চাইলে তুমি অপরিসীমে
এসো , কবি এসো রূপাঙ্গণে ,
কাব্য করে হারাতে নীল নির্জনে । "
তার আর্তি যেন মনে চমক ধরিয়ে দেয় ,
মন্ত্রমুগ্ধ করে হয়তো লিখেই দিতাম ...
কিন্তু সে মেয়ে আর এ মেয়ে যে অনেকই ...