শীতকাল
শীতকাল
ঋতুচক্রের নিয়ম মেনেই প্রাণবন্ত শরতের বিদায়ধ্বনির পর শোনা যায় শীতের রুক্ষ আহ্বান-
সর্বত্র শুষ্ক নীরস এক পরিবেশ রচনার মাধ্যমে সে আপনমনে গেয়ে চলে নিজের জয়গান।
তার আগমনে প্রকৃতির স্নিগ্ধতা দূরীভূত হয়ে অকস্মাৎ ছেয়ে আসে কঠোর নীরসতা,
তীব্র উত্তুরে হাওয়ার প্রভাবে সৃষ্ট কনকনে শীতের দাপটে ফুটে ওঠে সর্বগ্রাসী রিক্ততা।
দিবসের শুরুতে পারিপার্শ্বিক প্রকৃতিকে নিশ্ছিদ্র রূপে আচ্ছন্ন করে রাখে ঘন কুয়াশার আবরণ-
সূর্যরশ্মির তীব্রতার অভাবে সর্বত্র হ্রাস পায় তাপমাত্রা, তৈরি হয় এক হিমেল বাতাবরণ,
পশ্চিমী ঝঞ্ঝার ফলে স্থানে স্থানে আকস্মিকভাবে নেমে আসে বৃষ্টি ও তুষারপাতের বিস্ফোরণ।
প্রাণোচ্ছল প্রকৃতির রঙিন ক্যানভাসে হঠাৎ ভেসে ওঠে ঝরাপাতার বিবর্ণ প্রতিচ্ছবি!
শুষ্ক বাতাসে ভেসে আসে বহুদূরের গৃহহারা কারো শৈত্যপ্রবাহে আক্রান্ত ক্রন্দনধ্বনি!
গ্রামীণ পরিবেশে ভয়াবহ হয়ে ওঠে শীতের
প্রকোপ,খোলাস্থানে হিমেল হাওয়া লাভ করে চরম দ্রুতি-
গ্রামবাসী হয়ে পরে গৃহবন্দি,কখনও বা আগুনের তাপে শরীর উত্তপ্ত করে লাভ করে সাময়িক স্বস্তি।
তার মধ্যেই আনন্দে মেতে ওঠে বাঙালির প্রাণের শহর, উৎসবের শহর তিলোত্তমা কলকাতা
বিবিধ মেলা,সার্কাস ও উৎসবে সামিল হয়ে বাঙালি হৃদয়ে প্রকাশ পায় এক অকৃত্রিম প্রসন্নতা
শহরজুড়ে বড়দিনের আনন্দে সামিল হয়ে একজোটে মেতে ওঠে সমগ্র বাঙালিজাতি-
সুস্বাদু বিবিধ পদ ভোজনের মাধ্যমে সার্থক হয় বাঙালির চিরন্তন ঐতিহ্য চড়ুইভাতি।
আলোর রোশনাই,উৎসবের মেজাজে বাঙালি মনে ফুটে ওঠে অনাবিল আনন্দের উদ্রেক
পিঠেপুলি,নলেনগুড়ের পাশাপাশি বাঙালির মেনুতে এইসময় যোগ হয় সুস্বাদু ফ্রুটকেক
সর্বগ্রাসী এই রিক্ততার মাঝেও উৎসবের আনন্দ লুটে নিয়ে বাঙালির মনে জাগে প্রশান্তি
ভয়ঙ্কর শীতের সৌন্দর্যকে উপভোগ করার মাধ্যমে পরিপূর্ণ হয় বাঙালি হৃদয়ের অপার তৃপ্তি।।