দ্বিতীয় প্রেম
দ্বিতীয় প্রেম


কেউ লিখতে গিয়ে কবিতা উগরে ফেলে গল্প,
তোমার মনে জায়গা হল না আমার জন্যে অল্প?
আমার এখন অনেক কাজ, তোমায় নিয়ে পরে ভাববো,
আমি সোজা কথার মানুষ, স্পষ্ট কথা বলি, পারি না তোমার মত কাব্য।
কাজ তো সে সকলের আছে গাছে জল দেওয়া থেকে ভোরে,
কতক্ষণ আমি দাঁড়িয়ে থাকি তোমাকে দেখার জন্য দোরে
আবার বলছি শোনো আমার কথা, চলে গেলে আসবো না আর ফিরে,
ভিড়ের মাঝে হারিয়ে যাব, নয়তো ঘর বাঁধবো ভাগীরথীর তীরে।
সে তো মুখের কথা কত লোকই তা বলে,
পরাক্রমটি করতে গেলে বুঝবে তা কেমন করে চলে।
সে নাকি স্পষ্ট কথার মানুষ তাও তার কথা এত লাগে কেন ঘোরানো?
আমার বোধহয় আর ঠিক হবে না তোমার রাস্তা আটকে দাঁড়ানো।
তার সঙ্গে সব স্মৃতি চাইলাম যেতে ভুলে,
সে ভোলার কথা শুনতে ভালো লাগে, আঘাত যায় কি ধুলে।
আজ হতে এতবর্ষ পর কে আমার নাম ধরে ডাকো?
কততো পৌষ পার্বণ গেল, কেন আমার গন্ধ আজ গায়ে মাখো?
কেন তুমি আজ ফিরে এসেছো? কি অজুহাত শোনাবে আজ মরে?
সে কহিল, রাজা মরিলে রাজাই থাকে অপাংক্তেয় হয়ে মরে কেবলি বোড়ে।
তার চামড়ায় আজ টোল পড়েছে চোখ গেছে ঢুকে যেন কুম্ভের গহ্বর,
তার ঠোট গুলো যেন মফস্বল তুলল, যেখানে গ্রামে এসে মিলেছে শহর।
তোমার জীবন তো এত ধূসর ছিল না, সে তো ছিল অনেক রঙিন,
আমি কোনদিনও এত সখ রাখেনি, তোমার মতো সৌখিন।
সে একটু কেশে, ম্লান হেসে আমার পানে চায়,
যা দেখে এখনো সারা ব্রহ্মাণ্ড বাকরুদ্ধ হয়ে যায়।
এসেছি অনেক পথ হেঁটে আমার কথা একটু খানি শোনো,
আমারও এক রাজপুত্রের সাথে বিয়ে হয়েছিল জানো?
সে কথা আমি শুনবো কেন আমার তাতে কি?
রাজপুত্তুর অন্য রানী এনে তোমায় ছুঁড়ে ফেলেছে নাকি?
তুমি তো পাবেই ব্যথা, আগুন লাগিয়ে হাতে ধরে রেখেছো ফানুস,
তুমিতো মুহূর্তের মধ্যে সুখ খোঁজনি, খুঁজেছিলে মানুষ।
জিনিস কোন পেয়ে গেলে কেইবা আউড়ায় তার মূল্য,
পরের কথাটা বলি দেখতো, মনটা কি তোমার একটি বারের জন্যেও ধুললো?
সে রাজপুত্তুর কে কাছে পাওয়ার পেলাম কোথায় সময়,
সে তো কোন মন্ড দেশে, যেখানে শুলে সবাই ঘুমায়।
কথাটা শুনে খুব বিধলো কানে আমি হয়ে উঠলাম চঞ্চল,
তবুও তার চোখ হ্রা কাটলোনা যা কখনও করতে ছল ছল।
পথে বেরিয়ে পড়ি কি করে বেড়ে ওঠা বাড়ির দিকে বাড়াই হাত?
বিয়ের পর সে তো খুব লজ্জার, বাপের বাড়ির ভাত।
তাই তুমি আজ এত শ্রান্ত, সাদা শাড়ি পড়েছো গায়ে?
জলেরা অবলি ভুলে, শৃঙ্খলাহীন ধূলি এসে লেগেছে পায়?
যদিও, বিধবার আর বিয়ে করতে কোন বাধা নেই, নেই তাতে কোনো পাপ,
এতবার করে বলছি, করা যায় নাকি একবার মাপ?
আমি তো আর তোমার কাছে ছুটে যাইনি? রাখতে চাই নি তোমাকে বদ্ধ,
তুমিতো আমার প্রকার খোঁজোনি, খুঁজেছিলে সমৃদ্ধ।
তখন আমি ছিলাম না উভচর, ছিলাম আমি পক্ষী,
আজ আমি আর হতে চাই না পেচক, হতে চাই বিষ্ণুর পাশে লক্ষী।
একটি বিন্দু জল যেমন মোছায় কাঁচের ধোয়া, বিলীন হলো ক্ষত,
চায়ে ভিজে যাওয়া বিস্কুট কাপ থেকে তুলে খাওয়া হলো যেন,
পুরনো প্রেমিকের সাথে দ্বিতীয় বার প্রেমে পড়ার মতো।