সেলফি
সেলফি
“স্যার আপনার সঙ্গে একজন দেখা করতে চায়।“ কন্সটেবল প্রদীপ এসে জানালো থানার ওসি মিঃ নিরঞ্জন ভৌমিককে।
“ এখন আবার কে ? বল আমি ব্যস্ত। “
“ স্যার বলেছি। কিন্তু উনি খুব জোর করছেন। কি নাকি একটা ছবি দেখাবেন।“
“ সেলফি? কার?”
“ জানিনা স্যার। “
“ মাথা টাথা খারাপ নাকি?”
“ স্যার দেখে তো সুস্থই মনে হচ্ছে।“
“ আচ্ছা বিপদ। ঠিক আছে বল যাস্ট দু মিনিট সময় দেব। তার মধ্যেই...।।“
“ ওকে স্যার।“
একজন বছর তিরিশ বত্রিশের লোক ভেতরে এলো।
“ নমস্কার স্যার।“
“ নমস্কার। দেখুন আমি কিন্তু ভীষণ ব্যস্ত।“
“ জানি স্যার। আমি বেশী সময় নেব না। “
“ ঠিক আছে কি ছবি দেখাবেন দেখান। “
“ এই দেখুন।“
“ এটা কার ছবি?”
“ আজ্ঞে, আমার বউয়ের স্যার। ওর না খুব সেলফি তোলার সখ। যেখানে সেখানে সেলফি তোলে। এর জন্য আমার কাছে কত বকুনি......”
“ আপনি কি আমার সঙ্গে মসকরা করতে এসেছেন?”
“ না স্যার। না । আপনি একবার মন দিয়ে আমার কথাটা শুনুন। কাল আমরা সিকিম থেকে ফিরেছি। ওখানে আমাদের একটি বাঙালি দম্পতির সঙ্গে দেখা হয়। আমরা একই হোটেলে ছিলাম জুলুকে। পরেরদিন ওনারা আমাদের আগেই বেড়াতে বেরিয়ে যান। তারপর আর ওদের সঙ্গে আমাদের দেখা হয় নি। সেদিন রাস্তায় একটা ফাঁকা জায়গা দেখে আমি একটু হাল্কা হতে দাঁড়াই। আমার স্ত্রী নেমে সেলফি তুলতে থাকে। আজ সকালে আমার বউ ছবিটা এডিট করতে গিয়ে দেখে...... এই দেখুন...... ওর মুখের পাশ দিয়ে আমাদের গাড়ীর সাইড মিররটা দেখা যাচ্ছে। আর সেই মিররে......”
নিরঞ্জনবাবু চোখটা সরু করে মন দিয়ে ছবিটা দেখে আঁতকে উঠলেন, “ আরে এটা তো...।“
“ হ্যাঁ স্যার। আমি বিখ্যাত ব্যবসায়ী মিঃ বাগচির স্ত্রীর অপঘাতে মৃত্যুর সংবাদটা খবরের কাগজে কালই দেখি। অবিচুয়ারিতে ওনার ছবিটা দেখে মুখটা চেনা চেনা লাগে। পরে মনে পড়ে এনাদের সঙ্গেই আমাদের দেখা হয়েছিল। তাই আজ এই ছবিটা পেয়ে আমি ছুটতে ছুটতে এসেছি আপনার কাছে।“
“ থ্যাংক ইউ মিঃ...।“
“ মিঃ সৈকত মল্লিক স্যার।“
“ থ্যাংক ইউ মিঃ মল্লিক। আপনি একটা বিরাট সাহায্য করলেন। প্রদিপ...প্রদীপ ”
“ ইয়েস স্যার”
“ মিঃ বাগচির শ্বশুর মশাই থানায় ডায়েরি করেছিলেন না যে ওনার মেয়ে পাহাড় থেকে পড়ে মারা যায় নি।“
“ হ্যাঁ স্যার”
“শিগগির গাড়ী বের কর মিঃ বাগছি কে আরেস্ত করতে হবে।“
“ অ্যাঁ?”
“ অ্যাঁ নয় হ্যাঁ। মিঃ মল্লিকের বউয়ের সেলফিতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে যে মিঃ বাগচি ওনার বউকে ঠেলে ফেলে দিচ্ছেন পাহাড় থেকে।“