তিন্নি ও লাল গোলাপ
তিন্নি ও লাল গোলাপ
আজ সকালে ছাদ বাগানের ঘুরতে গিয়ে দেখলাম গোলাপ ফুলের পাপড়িটায় মরচে ধরেছে। ছিঁড়ে ফেলতে গিয়ে দেখালাম। হাতে কাটা ফুটে গেলো। নোনতা রক্ত এর স্বাদ মনটা একটু খারাপ করিয়ে দিলো। সেদিন তিন্নিও বোধহয় এই রকম ভাবে বাঁচার চেষ্টা করেছিলো।
আমাদের বিয়ে তখন কয়েকটা মাস বাকি। তাই সন্ধ্যায় মার্কেটিং গিয়ে, একটু দেড়ি হয়ে গিয়েছিল। কয়েকটা বাড়ির পর ওর বাড়ি তাই দরকার হলেই মা ওকে দেখে নেয়। সেদিন ও আমতা আমতা করছিলো। মোল্লা পাড়ায় ওর পড়ানো ছিলো। ওই পাড়ায় প্রথম কোন মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছে , তিন্নির ছাত্রী ও , ও দায়িত্ব নিয়েছে মেয়েটাকে পাশ করাবেই। বাড়ির সব কাজ করা সাথে সব বাধা পেরিয়ে মেয়েটাও পড়া শোনা করার চেষ্টা করে। ফলে কোন কারণেই মেয়েটাকে পড়ানো কামাই করে না ও।
সেইদিন পড়িয়ে ফিরতে ফিরতে ওর দেরি হয়ে গেলো। সাইকেল আছে চিন্তা কি? ও চালাতে শুরু করলো। রাতের পৃথিবীটা একটু অন্যরকম। রাস্তা ঘাট কিছুটা ফাঁকা মসজিদ টা ওখানে যেতেই ও কিছু পুরুষ মানুষের উপস্থিতির আভাস পেয়ে ছিলো বিকট মদের গন্ধে।
কোন ক্রমে। গলিটা এড়িয়ে গিয়ে রাস্তায় নেমে দ্রুত গতিতে সাইকেল চালানো শুরু করলো।
যা মনে করেছিলো তাই মানুষ কটা দুই টো বাইক নিয়ে ওর পিছু নিয়েছে। ও হেরে যাবার মেয়ে নয় । দুই পাশ দিয়ে বাইক দিয়ে পথ আটকানো চেষ্টা করা বাইক আরোহীদের চোখে মুখে ও এলো পাথরি ভাবে চুলে কাটা দিয়ে আঘাত করলো।
আত্মরক্ষার চেষ্টা সফল হলো কিন্তু পড়ে দিন পুলিশ এলো। সমাজের নিয়ম অসহায় ভাবে ধর্ষিত হওয়া। ওই দলে এক প্রভাবশালী নেতার ভাই এবং ছেলে ছিলো। ছেলেটা আবার আঠেরো বছর হয়নি। চোখ দুটো ই নষ্ট করে দিয়েছে । তিন্নি পুলিশ FiR এসব নিয়ে অভ্যস
না আমরা। আইন আদালত তো প্রভাবশালী মানুষের হাতে , ওর বাবার চাকরি টাও। গেলো ঘুস নেবার অভিযোগে। আইনকানুন পাড়াপড়শি টোন ওরা সহ্য করতে পারছিলো না। ওর মা খাবারে সাথে বিষ মিশিয়ে রেখে দিলো। এক সাথে ওরা আত্মাহত্যা করলো। তিন্নিও লাল গোলাপের মতো সেদিন ক্ষত বিক্ষত করেছিল আমাকে যে ব্যাথা আমি। আজো ভুলেনি।
