The Stamp Paper Scam, Real Story by Jayant Tinaikar, on Telgi's takedown & unveiling the scam of ₹30,000 Cr. READ NOW
The Stamp Paper Scam, Real Story by Jayant Tinaikar, on Telgi's takedown & unveiling the scam of ₹30,000 Cr. READ NOW

Ajoy Kumar Basu

Abstract

2  

Ajoy Kumar Basu

Abstract

তিন পুরুষের স্বপ্ন

তিন পুরুষের স্বপ্ন

3 mins
571


আমাদের পরিবার ছেলেদের। বৌ হয়ে আসে অনেকে ,কিন্তু মেয়ে হয়ে আসে না।

দাদুরা ছয় ভাই। তাদের সব মিলে তেরটি সন্তান ,সব ছেলে।

বাবা -কাকা -জেঠু মিলে আমাদের জেনেরেশনে ষষ্ঠীর কৃপায় একুশ জন -সব ছেলে।

আমাদের সবাই মিলে ভারতের জনসংখ্যায় এখনো পর্যন্ত input দিয়েছি চোদ্দটি। শেষ হয়নি ,আরও আসবে।

নদার বৌ হাসপাতালে ,দ্বিতীয় পুত্রের অপেক্ষায়। না ,না , আমরা যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করে বলছি না। অবশ্যম্ভাবীকে স্বীকার করেই বলছি।

এই তো বছর তিনেক আগের ঘটনা। ন বৌদির প্রথম সন্তান আসছে। প্রথম বার ,তাই আমরা গোটা দশেক ভাই হাজির। বিকেল বেলা গোমড়া মুখে দাই খবর আনলো ,'মেয়ে হয়েছে '.আর আমরা সবাই তাকে জড়িয়ে ধরে নাচতে লাগলাম। ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাই কবুল করলো ,ছেলে হয়েছে। আমরা তো তাকে মারতে বাকি রাখলাম। পরে শুনেছি ,এটাই নাকি দস্তুর ,আগে বলো মেয়ে ,তারপর ছেলে।বখশীষটা বেড়ে যায়।

এবার ন -বৌদির repeat performance ,আমাদের কারুরই যাবার ইচ্ছে নেই ;কী হবে আবার একটা ষণ্ড দেখে।

রাত্তিরে খেয়ে দেয়ে সবাই ঘুমোচ্ছে। দাদুর ঘর থেকে ভেসে আসলো এক আর্ত চিৎকার। আমরা সবাই দৌড়লাম। খাটের পাশে দাঁড়িয়ে ঠাকুমা কাঁপছে ,দাদুর চোখ দুটো বন্ধ। চিৎকার করেই যাচ্ছে ,"ওরে ভাসাস না ,আমাকে দিয়ে দে। ".সে কী কাকুতি বুড়োর।

আমরা বুঝলাম ঘুমের ঘোরে দেখেছে যম রাজার চরকে ,দাদুর প্রাণটা নিয়ে যেতে চাইছে আর দাদুর আপত্তি তাতে।

কিছু করবার নেই ,ডাক্তার বদ্যির হাতের বাইরে ,তাই চোখে মুখে জল দিয়ে কোনো ক্রমে চোখদুটোকে খোলানো গেল। চোখ মেলেই দাদুর original format ; খিটখিটে বুড়োর role যে ফেরত।

শান্ত করতে ঘটনাটাকে বললো। সেদিন সন্ধ্যে বেলা মহাভারতে কর্ণের জন্ম বৃত্তান্ত পড়েছে। রাতে স্বপ্ন দেখছে সেই দৃশ্য। তফাৎটা একটু, ঝুড়িতে করে ছেলে কর্ণকে নয় ,এক মেয়ে কর্ণকে ভাসিয়ে দিচ্ছে আর তাই দাদু চিৎকার করে আটকাবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

দাদুকে তো বুঝিয়ে সুঝিযে  ঘুম পাড়ানো গেল। আমাদের সকালের মনটা ভারী হয়ে গেল। মা ষষ্ঠীর একচোখামি বড়ই বেদনার। সব বাড়ীতে কেমন অনেক অনেক মেয়ে হচ্ছে আর আমাদের বাড়ীটা মেয়ে শূন্য। বৌ আছে অনেক ,কিন্তু ঘোলের স্বাদ কী দুধে মেটে ? কেউ আর ঘুমোতে গেলাম না। সবাই একটা মেয়ে হবে স্বপ্ন নিয়ে বসে বসে ঝিমুলাম। যৌথ স্বপ্ন একেই বলে।

তখনো ভোরের আলো হয়নি। দরজায় কলিং বেল। এই ভোর রাত্তিরে এলো কে ? কোনো দুঃসংবাদ ?

সবাই ধাক্কা ধাক্কি করে দরজা খুললাম। সামনে দেখি ডাক্তারবাবু -মুখটা বেশ বিরক্ত। তাঁর পেছনে ন -বৌদি ,শ্রান্ত -ক্লান্ত চোখ -মুখ। তার পেছনে পুঁটলি হাতে দাই।

আমরা হাঁ কোরে দাঁড়িয়ে ,কিছুই বুঝতে পারছি না। 

ডাক্তার বাবু ঘরে ঢুকলেন ,বৌদি আর দাই বাইরে ,কিছুতেই ভেতরে আসলো না।

বাড়ির সবাই এসে গেছে ;ডাক্তারবাবু বাবার বন্ধু। রেগে রেগে বাবাকে বললেন ,"জানি মশাই আপনার বাড়ী ছেলেদের ,তাই বলে বৌগুলোকেও ছেলে বানাবেন ? এইযে আপনার পুত্রবধূ ,এ ছেলে , না মেয়ে ? এক্কেবারে গুন্ডা। "

 শান্ত হয়ে শোনালেন রাতের ইতিকথা।

"বাচ্ছা হোলো বারোটা বেজে তিনে। সিস্টার বৌমাকে বললো মেয়ে হয়েছে। বৌমা জানে এটা ওকে ভোলাবার কথা ;হটাৎ কেঁদেই ঘুমিয়ে পড়লো। ঘুম ভাঙলো তিনটে নাগাদ। বাচ্ছা দেখলো ,আর তারপরেই লক্ষ্মী বৌ রক্ষাকালী হয়ে উঠলো। কী চিৎকার ,আমাকে এক্ষুনি বাড়ী যেতে হবে ,অ্যাম্বুলেন্স ডাকো। শুনলনা কারুর কথা। বাধ্য হয়ে আমিই আসলাম নিয়ে।"

ঠাকুমা আর মায়েরা বাইরে গিয়ে দাইকে বললো বাচ্ছাটাকে মাটিতে রাখতে। উধম বাচ্ছাকে কোলে নিয়ে ঠাকুমার ডাক ,'ওরে ,বরণ কর ,বরণ কর'।

কারুর হাতে প্রদীপ ,কারুর হাতে মোমবাতি ,কেউবা এনেছে টর্চ। অনেক আলো অনেক উলু -বৌ আর মেয়েকে ঘরে তোলা হলো।

আমরা সবাই দেখলাম ,মাকালীর মতো ছোট্টো শিশু। দাদু উত্তেজিত ;ডাক্তারবাবুকে জিজ্ঞেস করলো ,'আপনি বললেন এর জন্ম বারোটা তিনে ? এবার বুঝেছি মা কালী এসেছেন ;মা ষষ্ঠীর Boss না হলে এমন হবে কেমন করে ?'

আমাদের পরিবারে তিন পুরুষ বাদে প্রথম মেয়ে। তাকে ঘিরে ডজন ডজন ছেলে আর মেয়ে মহাদেব। মাকালী ঘুরতে থাকলো এ কোল থেকে সে কোল।

এতক্ষনে নজর পড়লো ন -বৌদির দিকে।সোফার কোণে চুপ করে বসা। মুখে পরিতৃপ্তির হাসি।  

অদ্ভুত ক্লান্ত ,শান্ত স্বর:

"বাড়ীর সবাই স্বপ্ন দেখে একটা মেয়ে হবে। আমার মনে স্বপ্ন ছিল সবাইকার স্বপ্ন মেটাবো। তাই তো মাকালীর কাছে বাজি রেখেছি আমার প্রাণটাকে। আজ আমার স্বপ্ন পূরণের দিন। আমার বাজিটাকেওতো দিতে হবে। তোমাদের সবাইকার জন্যে রেখে যাচ্ছি তোমাদের স্বপ্ন। "

ন -বৌদি হটাৎ ঢোলে পড়লো। আর কোনোদিন কথা বললো না।

 পূব আকাশটা আস্তে আস্তে সোনার রং নিলো।




Rate this content
Log in

More bengali story from Ajoy Kumar Basu

Similar bengali story from Abstract