কান্না হাসির দোলনায়
কান্না হাসির দোলনায়


আমাদের রবিবারের আড্ডাখানা মেছোদার বাড়িতে। আমরা পাড়ার লোকজন ছাড়া মেছোদার কেউ নেই। আর আড্ডাতে আসে গরম গরম চা ,সঙ্গে আসে চানাচুর মাখা মুড়ি। তাই দু পক্ষের আত্মার টান - চুম্বকের মতো সমান সমান। মেছোদাকে আমরা মেছোদা বলে ডাকি ,আমাদের বাবা -কাকারাও ডাকতো, দাদুরাও যদি ওই নামেই ডেকে থাকে তাতে অবিশ্বাসের কিছু নেই। কোনো এক বিলিতি সাহেব নাকি লিখেছেন ,নামে কিই বা এসে যায় , তিনি বোধহয় মেছোদার নাম শোনেন নি ,তাই এমন মারাত্মক কথা লিখতে পেরেছেন। মেছোদা নামটা একটা লিজেন্ড ,এক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী। নামের কপিরাইট হয় কিনা জানিনা ,হলে আমরা চাঁদা তুলে দরখাস্তর পয়সা যোগাড় করতাম এতে কারুর প্রশ্নই ওঠেনা।
তরুণ বয়সে প্রি -নামকরণ মেছোদার একমাত্র সখ কিংবা নেশা ছিলো মাছ ধরাতে। শুধু খবরটুকু পৌঁছে দাও ,অমুক পুকুরে দুটো মাছ দেখা গেছে ,আর জেনে রেখো সেই মাছ শিগ্গিরি মাছের ঝোল কিংবা ঝালে পরিবর্তিত হয়ে কারুর থালার শোভা বাড়াবে।
সেবার খবর এলো পাঁচ মাইল দূরের পদ্ম দীঘি এত গভীর যে সেখানকার সব মাছ বাস্তবিকভাবে গভীর জলের মাছ হয়ে কলেবর বাড়াচ্ছে ,কারুর ধরবার সাধ্য নেই। মাছধরা বিশারদের এত অপমান ! পরদিনই অফিস কেটে মেছোদা চললেন মৎস্য অভিযানে, সঙ্গে কয়েক ডজন গুণমুগ্ধভক্ত।
দীঘির পাশে বসার জায়গা ,তাকে ছেড়ে দাদা চললেন জলের আরো কাছে- আমাদের ক্রিকেটের দাদা যেমন ক্রিজ ছেড়ে বোলারের দিকে ধাওয়া করে সেইরকম। সেকেন্ড দাদা প্রথম দাদার কাছ থেকে টেকনিক শিখেছিল কিনা সেটা সঠিক কারুর জানা নেই অবশ্য।
দিঘিপাড়ে দাদা বার করলেন তাঁর অস্ত্রশস্ত্র -imported ছিপ ,স্বহস্তে বানানো মাছের চকোলেট -বিস্কুট। মনমতো ব্যূহ রচনা করে দাদা বসলেন ,বিড়বিড় করে মাছের চোদ্দপুরুষ উদ্ধারের মন্ত্র বলতে লাগলেন। মাছের সাধ্যকি মন্ত্রমুগ্ধ না হবার ! তাও গভীর জলের মাছের নাম রেখে দু ঘন্টা অপেক্ষা করালো গ্রেট দাদাকে।
কিন্তু অবশ্যম্ভাবী সত্যের কাছে হার মানতেই হোলো শেষমেশ। মাথা নামাবার পাত্তর সে নয় ,মাথা উঁচু করে এক বিশাল হাঁ করে ধরলো চকোলেটের ছদ্মবেশে বড়শিকে।
শুরু হলো অলিম্পিকে রেকর্ড করা Tug -of -War ; এই মাছ চললো মুখে বড়শি ,দাদা দিচ্ছে সুতোকে ছেড়ে ,তারপর ইন্টারভাল ,সব চুপচাপ। তারপর দাদার সার্ভিস -সুতোকে কাছে আনার -এসে গেল এসে গেল ,কিন্তু না -সার্ভিস চেঞ্জ ;এবার মাছের পালা। কুরুক্ষেত্র মহারণ চললো ঘন্টা দুয়েক।
দর্শকজনে উত্তেজনা বাড়ছে তো বাড়ছেই। বেটিং শুরু হলো ;লিস্টের প্রথমে মাছের পরিচয় ,রাঘব চেতল ,রাঘব বোয়াল, নাকি রাঘব কাতলা। মাছটার রাঘবত্বের কোনো সন্দেহ নেই ,কেউই তাকে কুরু বা পান্ডব মাছ বলে ভাবছে না ;তাই প্রথম সংশোধন হলো সর্বসম্মতিতে ,যুদ্ধটা কুরুক্ষেত্রের নয় ,রাম রাবণের। যাই হোকনা কেন যুদ্ধটা যে জম্পস তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
দুঘন্টা বাদে ঘটলো অঘটন। মাছ চলেছে দিঘীটাকে চক্রাকারে ঘুরে ,আর সুতোর দৈর্ঘ্য বেড়েই চলেছে -বাড়তে বাড়তে শেষ। বড়শিতে টান হেঁচকি তোলার মতো ,একটু কম তারপরেই হেঁইও মারি মার্ কাটারি। দাদা ক্রমশঃ জলের কিনারায়। আর একটা হ্যাঁচকা টান -ছিপ হাতে দাদা চললো জলভ্রমণে। মাছ টানে ডাইনে তো দাদা চলেন ডাইনে ,মাছ চলে বামে তো দাদাও বামে লাল -সেলাম দিতে দিতে। আর সেকি জলপরীর খেলা -এই উঠছে এই নামছে। ডাঙ্গার লোক চেঁচাচ্ছে ,বড়শিটাকে ছেড়ে দিতে বলছে। কে শোনে তাদের কথা। মাছের অবশ্য দোষ নেই -সে তো গাঁটছড়াতে,সরি ,মুখছড়াতে বাঁধা ছিপের সঙ্গে -জন্ম জন্মান্তরের বন্ধন। দাদার কানে জনতার দাবী পৌঁছয় কেমন করে ?একবার জলসিংহাসনে বসেছে ,আর কি ছাড়া যায় ?
জলখেলার মাঝে একবার দাদা আসলো টাচ লাইনের কাছাকাছি আর গোটাচারেক লাইনসম্যান ধরলো তাকে জাপটে,ছিপ চললো গভীর জলে নতুন প্রভুর মুখে -একবার ফিরেও দেখলোনা তার সদ্য হস্তচ্যুত প্রভুকে। ছিপের সংসারে মীরজাফর !
অর্ধ- চৈতন্য অথবা অর্ধ -অচৈতন্য দাদাকে সেবা করে সুস্থ করা হলো। দাদা মাছ পেলোনা ,অর্জন করলো তার সর্বপরিচিত নাম মেছোদাদা।
সেই মেছোদাদার বাড়িতে আমাদের আড্ডার একদিন বিষয় হলো সিনেমা,থিয়েটার। একজন লরেল -হার্ডি দেখে এসেছে -এত হাসি এর আগে দেখেনি ; রামের সুমতি দেখে -আসার মতে এত কান্না সে দেখেনি। একজন থিয়েটার ভক্ত , কৃষ্ণ চন্দ্র দের গানে থিয়েটার হল কাঁপিয়ে দিচ্ছে। মেছোদা শুনছে না ,তার মন ভেসে বেড়াচ্ছে। ধ্যান ভঙ্গে তার কণ্ঠে তাচ্ছিল্য সুর ,"কি যে হলো দেশটার ,গরম গরম আলুভাজা ছেড়ে খাচ্ছে প্যাকেটের চিপস। "
আমাদের সকলের আপত্তি -চিপস একটা পারফেকশন আর বাড়ির তৈরী আলুভাজা ? ছ্যাঃ ছ্যাঃ ,কোনোটা কম ভাজা ,কোনোটা পুড়ে গাছে ,একটা লম্বা তো একটা বেঁটে। কোনো কোয়ালিটি কন্ট্রোল নেই।
দার্শনিক দাদার কন্ঠে বোঝানোর আভা ,যেন সক্রেটিস শিষ্যদের বলছে , "জীবনটাই তো ওই রকম - হাসি -কান্না -সুর -বেসুরের চানাচুর। এই যে তোরা সিনেমা -থিয়েটার নিয়ে তক্কো করছিস ,একবার ভেবে দ্যাখ ওগুলো তো প্যাকেটের আলুবাজা। দর্শক দেখে টাকা দেবে তাই সুন্দর রঙিন প্লাস্টিক মোড়া। আসল দেখতে চাইলে তোদের যেতে হবে যাত্রার আসরে। দেখেছিস কখনো ?"
কলকাতার বঙ্গসন্তান আমরা , কখন সখোনে দুগ্গা দুগ্গা বলে যাত্রা করেছি ,যাত্রা নামক সিনেমা দেখিনি মানতেই হলো। আমাদের অনুরোধে দাদা শুরু করলো তার চিত্ত -চমৎকারী যাত্রা কাহিনী। এসে গেল চা -মুড়ি। আমাদের মুখ চললো সেগুলোকে নিয়ে আর দাদার মুখ চললো যাত্রা চর্বনে।
" অনেক দিন আগের ঘটনা ,কিন্তু এখনও ভাবলে বুকপেট গুড়গুড় করে। সেবার পুজোতে আমরা সবাই গেলুম মামাবাড়ির গ্রামে। কলকাতা থেকে অনেক দূরে বীরভূমের তারামার মন্দিরের কাছে।আনন্দের শেষ নেই মামাবাড়িতে। কিন্তু একটা চাপা উত্তেজনা সকলের হাবভাবে ,বুঝতে অসুবিধে হয়নি। শুনলাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পাড়া থেকে আসছে এক বিখ্যাত অপেরা পার্টি দ্বাদশীর দিন যাত্রা গান করতে। তার চেয়েও দামী খবর ,সেই পার্টির প্রাণ নিজে আসছেন মেন্ রোল করতে গ্রামের জমিদারবাবুর অনুরোধে। অরে, এ প্রাণ তোদের হিন্দি সিনেমার ভিলেন প্রাণ না ,এ প্রাণ যাত্রার প্রাণকেন্দ্র হৃদস্পন্দন। নিজের পরিশ্রমে বহু চেষ্টায় বানিয়েছেন বিশ্ববরেণ্য মহাকালী অপেরা পার্টি। শোনা যায় তিনি মাঝে মাঝেই জার্মানী যান ব্রেষ্টের থিয়েটারে। ব্রেষ্ট উনার কাছেই তো থিয়েটার করা শিখে বিলিতি চেহারা দিয়েছে। তোরা যদি কখন জার্মানি যাস তো দেখে আসিস ব্রেষ্ট থিয়েটার ,জোড়াসাঁকোর ধাঁচে তৈরী।
উত্তেজনাময় কটাদিন কাটলো দেখতে দেখতে ;আসলো দ্বাদশী। সন্ধ্যে হতে না হতেই সবাই যাবার জন্যে রেডি ভালো জায়গা পাবার জন্যে।
যাত্রাগানের আসরটা কেমন শোন ,তবেই বুঝবি সিনেমা-থিয়েটার তার ধরে-কাছেও আসতে পারবেনা। একটা খোলা মাঠ ,মধ্যিখানে একটা গোল বেদি ফুটখানেক উঁচু ;এটাই স্টেজ। স্টেজের ওপরে গোল চাঁদোয়া ,অনেককটা বাঁশ স্টেজ ঘিরে চাঁদোয়াটাকে ধরে রেখেছে। প্রতিটি বাঁশে ঝুলছে একটা করে হ্যাজাক আলো ,কি রোশনাই তাদের ঝলমল করছে স্টেজ আর সামনের সারির কিছু অংশ। দর্শকেরা বসবে স্টেজ ঘিরে। একটু দূরে বাঁশের কঞ্চি ঘেরা দুটো ঘর , তারকাদের সাজবার জন্যে তোরা যাকে Green Room বলিস। স্টেজ আর গ্রিন রুমের আসা-যাবার জন্যে একটা ছোটো পথ ছাড়া চারদিকে বসা কয়েক হাজার দর্শক। কেউ এনেছে মাদুর ,কেউবা সতরঞ্জি ,আবার অনেকেই বসা মাটিতেই। দাঁড়িয়ে দেখা strictly prohibited .
বোঝ ব্যাপারখানা। অভিনয় করতে হবে ঘুরে ঘুরে যাতে প্রতিটি দর্শক ভাবে যে সে সামনেই দেখছে যাত্রা। এটা ক্যামেরা ঘুরিয়ে সিনেমা নয় ,থিয়েটারের একমুখ স্টেজ নয় ,এটা রিভলভিং স্টেজ নয় ,রিভলভিং অভিনেতা। পারবে তোদের উত্তম কুমার ? পারবে অমিতাভ বচ্চন ? কী অসাধারণ শিল্পী - প্রতি দর্শক ভাববে তাকেই উদ্দেশ কোরে অভিনেতা কথা বলছে। এঁরা প্রত্যেকের মন্ত্রী হবার শক্তি রাখে ,ভাষণ দেবে এমন যে দক্ষিণপন্থী, মধ্যপন্থী ,বামপন্থী ,উগ্রপন্থী সবাই ভাবে বক্তা আমারই দলের। ভোটে জেতা অতীব সহজ কাজ। আরও ভাব - সাজঘর থেকে স্টেজে আসতে হবে হেঁটে হেঁটে সবাইকার মধ্যে দিয়ে ,উইংসের পাশ দিয়ে ফুড়ুৎ করে আসা চলবে না ,কিন্তু দর্শক দেখবে হটাৎই তারকার উদয়।
মনে রাখিস কোনো মাইক নেই ,খোলা ময়দান ,লোক গিজগিজ করছে চারদিক ঘিরে ,যতদূরে দ্যাখা যায় শুধু মাথা আর মাথা। সবাইকে শোনাতে হবে ডায়লগ আর গান। পারবেটদের হেমন্ত আর কিশোর কুমার ? একটা অসাধারণ ক্ষমতা চাই বুঝলি ? ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক দিতে হবে তো ,তা নইলে পালার মুড আসবে কী করে ? স্টেজের ঠিক নীচে স্টেজকে ঘিরে বসা বাজনার লোক। বেশী কিছু নয় অবশ্য ,হারমোনিয়াম,ক্লারিওনেট ,তবলা ,ঢোল আর খঞ্জনি -তাদের মধ্যে থেকেই বেড়োবে সব মুড ,সব সুর।
সেটটিংটা তো শুনলি ,এবার শোন যাত্রার কথা। সন্ধ্যে থেকেই বাজনা শুরু -গ্রামকে জানানো হচ্ছে ,এসেছে সময় -তাড়াতাড়ি খেয়েদেয়ে ঘর বন্ধ করে আসতে সময় তো লাগবেই। তার ওপর এবারের যাত্রা তো নতুন যুগ এনেছে। এতদিন সীতার বনবাস দেখেছে ,এবারের যাত্রা সীতার পাতাল প্রবেশ। এখানে তো স্টেজের তলায় গর্ত নেই যে সীতা টুপুস করে গর্তে ঢুকতে পারে ,যেতে হবেই সরুপথ দিয়ে চলে। সবাই উন্মুখ হয়ে আছে পাতাল প্রবেশ দেখবে বোলে।
যাত্রার কথা কী বলবো। সীতার অভিনয় অভিনয় মনেই হচ্ছিলো না। তখন যাত্রাতে মেয়েরা অভিনয় করতো না। একজন ছোট ছেলে সীতার রোল করছে -কিন্তু কি অনবদ্য অভিনয় -মায়ের মতো লব -কুশকে বকুনি দিচ্ছে আবার আদর করে খাওয়াচ্ছে ,কে বলবে আসল মা নয়। আর কি সুরেলা গলা ,গান গাইছে ভাব আর সুর মিলে মিশে কোথাও ছন্দপতন নেই ,থ্রো এত পারফেক্ট যে শেষের দর্শকের শুনতে কোনো অসুবিধে নেই।
আস্তে আস্তে নাটক গম্ভীর হচ্ছে। রামের যজ্ঞ ,লবকুশের গান -সীতাকে যজ্ঞ সভায় আমন্ত্রণ। এবার সীতার অন্য রূপ -অনেক আশা ,রামের ওপর শ্রদ্ধা ,লাজুক চলা-বলা নতুন বৌয়ের মতো।
তারপর শুরু যাত্রার করুণ ভাগ। পাথরের মতো কঠিন রাম সীতাকে সকলের সামনে আবার অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে। অপমানে অপমানে সীতার ভেঙেপড়া -কী কান্না আর দুঃখ।শুধু সীতা একলা কাঁদছেন। হাজার দর্শক কাঁদছে -চোখের জল রুমালে মোছার কান্না নয় - সত্যিকারের বেদনার কান্না ,বুকের মধ্যে থেকে উঠে আসা কান্না। কারুর কোনো লজ্জা নেই শুধু প্রাণ খুলে কান্না।
সীতা প্রার্থনা করছে মাটির মাকে ডাকছে তাকে অপমানের হাত থেকে মুক্তি দেবার জন্যে। কারুর ওপর ক্ষোভ নেই ,কারুর ওপর টান নেই ,চাইবার -পাবার কিচ্ছু নেই -শুধু বুকভরা কান্না ,একটু মুক্তি পাবার কান্না। সীতার কথা,গান আর কান্না দর্শকের প্রতিজনের মনের কান্না।
সবাই কাঁদছে ,আমিও কাঁদছি।
এবার মাটি-মায়ের প্রবেশ। আমরা কেউ নজর করিনি একটা সিংহাসন ঝলমল করছে তাতে বসে আছে মাটিরমা। মাথায় সোনার মুকুট ,ঝলমলে রানীর পোশাক। চাকা লাগানো সিংহাসন ;হামাগুড়ি দিয়ে দুজন লোক তাকে কখন ঠেলে স্টেজের পাশে এনে রেখেছে।
হারমোনিয়াম -ক্লারিনেটের করুণ সুর। মা ডাকছে তার অনেক দিন না -দেখা মেয়েকে আর মেয়ের মুক্তির আনন্দ মাকে পেয়ে। সীতা ঘুরে ঘুরে স্বীকার কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছে দুচোখ দিয়ে জলের ধারা। দর্শক কান্নাভরা -বিদায় দিচ্ছে তার ছোট্ট মেয়েটাকে।
মা সিংহাসনে বসা ,স্টেজের নীচে ,হাত দুটো সামনে ছড়ানো মেয়েকে ডাকছে ,আয় আমার কোলে আয় ,আর তোকে কষ্ট পেতে হবে না ,আমার কোলে ঘুমোবি আয়।
অশ্রুসিক্ত সীতা স্টেজ থেকে দৌড়ে মায়ের কোলে বসতে গিয়ে সামলাতে পারলোনা। হুড়মুড় করে সিংহাসনের ওপর আছড়ে পড়লো। দুজনের ধাক্কাতে কাঠের সিংহাসন গেল ভেঙে।
মা নীচে মেয়ে ওপরে - তাড়াতাড়ি উঠতে গিয়ে দুজনের পরচুলা কিসে আটকে গেল খুলে।
পরচুলা হাতে , শাড়ি সামলাতে সামলাতে দুজনে দৌড়োলো সাজঘরের দিকে।
দর্শকজন কান্নামুক্তির হাসিতে ফেটে পড়লো।
মা আর মেয়ে দুই বুড়ো, মাথা ভর্তি টাক। "