Manab Mondal

Abstract Crime Thriller

3  

Manab Mondal

Abstract Crime Thriller

সেই রাত

সেই রাত

3 mins
773


বৃষ্টি ভেজা জোসনা একটা রাত । আমার বাড়িওয়ালা চাচা চাচী বাড়িতে । একটা পেগ শেষ করে দ্বিতীয় পেগ ধরেছি। হঠাৎ দরজায় ঠকঠক । দরজা খুলে দেখি , আমার দেওয়া সাদা শাড়িটা পরে দাঁড়িয়ে আছে দরজায়‌ নিশা । আমি নির্লিপ্ত। 

ও বললো " ভিতরে আসতে বলবে না"  

আমি বললাম " এ ঘরে ঢুকতে তোমাকে কারো অনুমতি নিতে হবে নাকি?"

ওর চোখ জল। ও ঢুকলো ঘরে। দরজা দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষন কাঁদলো। তারপর। রান্নাঘর ঢুকে খাবার দাবার গুছিয়ে এসে বললো

" খাবার টুকু খেয়ে যতো ছাইপাশ গেলো"

ও চলে যাচ্ছিলো, আমি ওকে যেতে দিলাম না । বললাম " তোমাকে আমি বিশ্বাস করি এখনো কি হয়েছে বললো এ বাড়ি ছেড়ে চলে গেছো কেন বললো"

ও আমাকে জড়িয়ে কাঁদলো , ওর কান্না থামাতে ওকে বুকের মধ্যে টেনে নিলাম। অনেক আদর করলাম । কিন্তু ভরের বেলায় হঠাৎ দেখি ও ঘরে নেই। প্রথমে ভেবেছিলাম নেশার ঘোরে আমি স্বপ্ন দেখছি। কিন্তু পরে দেখলাম ঘরটা পুরো সাজানো গুছানো। খাবার টেবিলে আমার পছন্দের ব্রেক ফাস্ট আর ফুড জুস রেডি। আবার লেখার টেবিলে  

ফ্লাক্সে কফি করা রয়েছে।

আমি ভাবলাম আমার বেলা হয়ে গেছে দেখে হয়তো ও সব কিছু রেডি করে অফিস বেড়িয়ে গেছে।

চাচি বাড়িতে ফিরেই সাবানাকে দিয়ে আমার জন্য জল খাবার পাঠাল। আমি তখন জলখাবার খাচ্ছি, আমি বললাম " নিশা খাবার করে দিয়ে গেছে, তোমাকে দুপুরে খাবারও করতে হবে না। ও বিরিয়ানি রান্না করে গেছে।"

ও ঘরের চারিদিকে কিছুক্ষণ দেখে " আম্মি । বাঁচাও " বলে অজ্ঞান হয়ে গেলো। 

আমি ডাক্তার কল করলাম। কিন্তু চাচি ডাক্তারকে না দেখিয়ে ওকে নিয়ে মসজিদ নিয়ে গেলো।

ও আমার পরিচয় দেয়নি আপনাদের , আমি আর নিশা বছর দুই বিবাহিত সুখী দম্পতি। নিশা বিধর্মী ছেলেকে বিয়ে করছে বলে ওর বাড়ির লোকজন ওকে মেনে নেয় নি। বাবা মা ভিতু "এ শহরে থাকলে ওরা তোদের মেরে ফেলবে"

আমাদের অপরাধ কি। আমার ভালো বাসার সম্পর্কে বিয়ে করেছি, কেউ কারো ধর্ম বদলানোর জন্য বাধ্য করি নি। নিশা ফাতেমার বন্ধু হায়দরাবাদ শহরের একটু দূরে ওদের বাড়ি। আমার শহরেই ফ্যাল্ট কিনতে পারতাম । কিন্তু ফাতেমা বিয়ে জন্য অনেক টাকা দরকার। তাছাড়া ওর ভাই দুটো ভালো পড়াশোনা করেনি , ওদের দুবাই এ কাজে পাঠানোর জন্য কিছু টাকা দরকার তাই প্রায় জলের দরে ওদের বাড়ির ওপরের অংশটা কিনে নিলাম। কারণ আমি বিদেশে চাকরি করতে যাবো চেনা জানা কারো কাছে থাকাই নিরাপদ। তাই ফাতেমা র বাবা মা মানে চাচাচাচীর ভরসা রেখে গেলাম ওকে।

একটু রাত হতে ও ফিরছে না দেখে চিন্তা হচ্ছিল। ছাদে একটু পাইচারি দিচ্ছি। এমনি সময়ে খাবার টেবিলে চামচ বাজানোর আওয়াজ , নিশা ওভাবেই আমাকে খেতে ডাকে। আমি ঘরে ঢুকতেই দেখি খাবার টেবিলে খাবার সাজিয়ে গুছিয়ে ও বসে‌।

আমি জিজ্ঞেস করলাম " কখন তুমি এলে কখন এতো খাবার বানালে। "

ও বললো " একদিন আমি আসি নি। তাই সাবানাকে বিয়ের ফন্দী করছিলে, এখনো হয়তো ওর কথাই ভাবছিলে তাই আমার ঘরে ঢোকা তোমার চোখে পরেনি।" 

নিশার কথা বিশ্বাস যোগ্য নয় হয়তো বাজার থেকে খাবার নিয়ে এসেছে কিন্তু , কোনো প্যাকিং বাক্স দেখছি না। কিন্তু ও সব চিন্তাকে বেশি গুরুত্ব না দিয়ে আমি প্রতিবাদ করে বললাম " তুমি না ফিরলে দ্বিতীয় কোন মহিলাকে আমার জীবনে জায়গা দিতে পারতাম না নিশা, আমি যে তোমাকে খুব ভালোবাসি।"

নিশার চোখে জল " আমি এয়ারপোর্ট আসিনি বলে তুমি অবাক হও নি।"

হু খুব কষ্ট হয়েছিল যখন জানতে পারলাম চাচা চাচীর মুখ থেকে আমার স্ত্রী অন্য কারোর সাথে অবৈধ সম্পর্ক করে পালিয়ে গেছে.। কিন্তু আমার সাথে এতো বড়ো একটা বিশ্বাস ঘাতক করতে পারে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারতে পারি নি। 

কিছুটা নিস্তব্ধতা ঘিরে ধরলো ঘরটাকে।

আমি ওকে বললাম " কিন্তু তুমি কোথায় গেছিলে আমাকে ছেড়ে, কিছু কি হয়েছে এখানে যেটা তুমি আমাকে বলতে পারছো না.."

ও বললো " এখন তো তোমার সাথেই আছি তুমি ঘুমিয়ে পড়ো সময় হলে সব জানতে পারবে।"

আমি জানি আমি না থাকলে আক্রম ওকে বিরক্ত করে। ও সেটা আমাকে ফোনে বলেছিলো সেটা।

চাচি বুঝতে পেরে গেছে নিশা রোজ রাতে বাড়িতে আসে। সন্ধ্যায় সময় একটা মৌলানা সঙ্গে নিয়ে এলো ঘরে। সে ধোঁয়াময় করে বিরক্ত কর পরিবেশ তুলো আমি বাঁধা দিতে , চাচির যা বললো তাতে আমার মাথায় , বাজ পড়লো।

নিশা চেঁচিয়ে উঠলো , " মানব দেখলে আমি অবিশ্বাসী নই।"

পরেরদিন আমি ও বাড়ি ছেড়া আগে পাঁচ জনকে হাজতে পাঠালাম। আক্রম , চাচা , সারিম তিন জন মিলে ওকে ধর্ষণ করেছিলো । ওর অচৈতন্য দেহ পাঁচ জনে মিলে বুদ্ধি করে সেফটিক ট্যাঙ্কে ফলে দিয়েছিলো। ওর দেহটা আমি উদ্ধার করলাম।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract