Rita De

Abstract Children

3  

Rita De

Abstract Children

পৃথুরাজা কর্ত্তৃক পৃথিবী দোহন ( দ্বিতীয় পর্ব) ড. রীতা দে

পৃথুরাজা কর্ত্তৃক পৃথিবী দোহন ( দ্বিতীয় পর্ব) ড. রীতা দে

3 mins
306


অতঃপর পৃথুরাজা ধনু ঘুরিয়ে পৃথিবীকে সমতল করলে শস্য উৎপাদন হয়।শুধু শস্যই নয় আরও কত কিছু যে সেই ধেনু থেকে উৎপন্ন হলো তা বলে শেষ করা যাবে না। ধেনুরূপী ধরণী অর্থাৎ যখন গাভী তখন দুগ্ধ উৎপন্ন হলো। যেমন বিদ্যা দুগ্ধ, তেজ দুগ্ধ, ক্ষীর দুগ্ধ, মধু দুগ্ধ ইত্যাদি ইত্যাদি ।এবার কে বা কারা সেই সেই দুগ্ধ দোহন করবে ? 

 এই যে আমরা বলি হিমালয় পর্বত সকল পর্বতের রাজা।শুধু উচ্চতায় নয় হিমালয় পর্বত যে কত বনৌষধিকে আশ্রয় দিয়েছে তা বলে শেষ করা যাবে না। শুধু কি তাই ! বিবিধ রত্নের আকরও বটে। আবার গাছেদের মধ্যে বট গাছকেই প্রাধান্য দেওয়া হয় । কেন ? আবার কপিল মুনির কথা কে না জানে , যিনি নিজের জননীকেই ধর্ম শিক্ষা দিয়েছিলেন । দেবরাজ ইন্দ্রের তেজবল সকলকেই অবাক করে । এসব কিছুর মূল যিনি তিনি হচ্ছেন সেই ধেনুরূপী ধরণী।

    ধরণীর সঙ্গে যখন পৃথুরাজার কথোপকথন চলছিল তখন দেবতা, গন্ধর্ব, যক্ষ, মুনিগণ সকলেই উপস্থিত ছিলেন । তখন সকলকে প্রণাম করে পৃথুরাজা বলেন যে তিনি এই ধেনুরূপী ধরণীকে দোহন করবেন। এখন প্রশ্ন হলো, বসুধা তো গাভীরূপ ধারণ করবে কিন্তু কে কে বৎস্য হবে সেটাই চিন্তা করতে হবে । এত গাছপালা, পশুপাখি,  মানুষজন সকলেই তো দোহন করবে বললে চলবে না । এদের মধ্যে এক একজনকে ঠিক করতে হবে। কোন জাতি কোন শ্রেণীর মধ্যে কে কে দোহন করবে ?

    এই যে আমরা পৃথিবীতে পাহাড় পর্বত সমতলভূমি দেখি আবার মরুভূমিও দেখি , গাছের মধ্যে বট গাছ দেখি আবার ছোট ছোট গাছ ,জলজ উদ্ভিদও দেখি।পশুদের মধ্যে বাঘ সিংহ হাতি সাপ ব্যাঙ কি নেই ! পাখীরাও আছে সকলের খাবারও এক নয়। মহাসমস্যা ।কে কে দোহন করবে?

    তখন মুনিগণ এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এলেন । এক একটা শ্রেণী থেকে এক একজন বৎস হবে। বৃহস্পতি বৎস্য হয়ে যে গাভী দুগ্ধ দোহন করলেন তার থেকে আবার বেদ উঠলো । দেবরাজ ইন্দ্রের গাভী দুগ্ধ দোহনে তেজবল উঠলো ।সবথেকে মজার ব্যাপার জাতশ্রেণী অনুসারে গাভী দুগ্ধ বিভিন্ন ধরনের হতে লাগলো।যেমন পশুগণের মধ্যে বৃষভ বৎস্য অর্থাৎ বাছুর হলে তৃণময় ক্ষীর উৎপাদন হলো ।ক্ষীর যেমন উৎপাদিত হলো তেমনি বিষও দুহিত হলো যখন নাগকুলের মধ্যে তক্ষক দোহন করলো। কারুকে সাপে কাটলে তার জন্যে ওষুধ লাগবে।সেই বনৌষধি উঠলো পর্বতের মধ্যে যখন হিমালয় পর্বত দোহন করলো। শুধু তাই নয় জ্যোতিষ বিদ্যায় বলো আর আভরণই বলো রত্নের প্রয়োজন ।সেই রত্নধাতুও উৎপাদিত হলো হিমালয় পর্বতের দোহনের ফলে।আবার বাঁচতে গেলে আমাদের অক্সিজেন চাই । বৃক্ষরাজি থেকে আমরা সেই অক্সিজেন পাই। পাদপের মধ্যে বটবৃক্ষ গাভী দোহন করলে বৃক্ষরাজির সৃষ্টি হলো । শুধু খেলে পরলে তো চলবে না মানুষের মতো মানুষ হতে হবে।তার জন্যে চাই বিদ্যা , ধর্ম কর্ম, শুভবুদ্ধি , তখন সিদ্ধগণের মধ্যে কপিল মুনি দোহন করলে বিদ্যাদুগ্ধ উৎপন্ন হলো । গন্ধর্বদের মধ্যে বিশ্বাবসু দোহন করলে মধু উৎপন্ন হলো। আর পৃথুরাজা দোহন করলে শস্য উৎপন্ন হলো ।

এইভাবে পৃথুরাজার রাজ্যে যা যা লোপ পেয়েছিল তা তা অর্থাৎ ধর্ম কর্ম যাগযজ্ঞ শস্যাদি পুনরায় ফিরে এলো। পৃথুরাজার রাজ্যে সবাই শান্তিতে বাস করতে লাগল ।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract