Nityananda Banerjee

Horror Fantasy Thriller

3  

Nityananda Banerjee

Horror Fantasy Thriller

প্রান্তিক প্রেম চতুর্থ পর্ব

প্রান্তিক প্রেম চতুর্থ পর্ব

3 mins
152


পর্ব (৪)


মদনমোহন মুখার্জী সায়ন্তিকার এরূপ আচরণে বিস্মিত হলেন না । নেহাত মেয়েমানুষী ভেবে হাত ছাড়িয়ে নিলেন। সায়ন্তিকা ততক্ষণে প্রায় গা ঘেঁষে বসে পড়েছে। মদনমোহন সায়ন্তিকার বুকের উত্তাপ অনুভব করছেন এবং ক্রমশ সেই উত্তাপ কোমল স্পর্শ ছাড়িয়ে পরস্পরের অন্তরে সংক্রমিত হতে শুরু করেছে। এবার মদনমোহন সায়ন্তিকাকে বাঁ হাতের কনুই দিয়ে আলতো টোকা দিতেই সায়ন্তিকা একটু দূরে সরে বসে ।

সুকুমারের চোখে তা এড়িয়ে যায় না। কমলসাধন, বাগাড়িয়াও তা দেখে পরস্পরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করেই ক্ষান্তি দেয় । 

কমল সাধন বলতে শুরু করেন।

- এবার সাত নং স্টেশন । এম জি রোড মেট্রো স্টেশন গুরগাঁও।

ছয়ে লুধিয়ানা পাঞ্জাব, পাঁচে ডোম্বিভিলি মুম্বাই, চারে নৈনি উত্তরপ্রদেশ, তিনে দ্বারকা মেট্রো দিল্লী, এবং দুইয়ে 

রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো কলকাতা।

তবে আমি যে ভুতুড়ে রেলস্টেশনটির নাম বলব ; আমি প্রস্তাব করছি সেখানেই আমাদের পরবর্তী অভিযান শুরু করব। সেই স্টেশনটি এখনও ভয়ংকর এবং লোকবিশ্বাস অনুসারে ভারতে তো নিশ্চয়ই; সারা পৃথিবীতে এখনও এক নং ঘোস্টলিয়েস্ট স্টেশন।

বাগাড়িয়া প্রশ্ন করলেন - নাম কেয়া হ্যায় ভাইয়া? লগতা হ্যায় বহুত এক্সপিডিশাস জার্ণি হোগা।

- বলছি বলছি। আগে একটা সিগারেট ধরাই। তোদের কারও আপত্তি নেই তো ?

- আছে। মদনমোহন বললেন - আমার আপত্তি আছে। আর সায়ন্তিকারও।

সুকুমার বললেন - তোর না হয় আপত্তি আছে মানলাম ; কিন্তু তুই কি করে জানলি সায়ন্তিকারও আপত্তি আছে ?

- মেয়েরা এসব পছন্দ করে না।

- তাই ? আমার বউতো আবার ভীষণ পছন্দ করে। কমলসাধনের জবাব। আমি তো আগে ধূমপান করতাম না। বউয়ের কথাতেই ----

- মানে ? 

বাগাড়িয়া খোঁচা দিলেন। 

- বউ বলল আর তুই শুনলি; করেও দেখিয়ে দিলি ? এ'জন্যই বিহা করলাম না রে; পাছে বউয়ের পোঁ - ধরা হইয়ে যাই ।

- তুই থাম তো !

কমলসাধন হুংকার ছাড়ে। তুই কি বুঝবি বউয়ের ব্যাপার ?

সুকুমার তখন থামানোর জন্য বললেন - এই তোরা তর্ক থামা দিকি। আসল কথা বল। সেই কখন থেকে বসে রয়েছি। বাড়ি ফিরতে হবে তো !

- উঁহু বন্ধু !

বাগাড়িয়ার টিপ্পনি। 

- আজ তোরা সবাই আমার গেস্ট । সারা রাত বাতচিত হোবে। তোরা বরং নিজের নিজের বাড়িতে খবর দিয়ে দে। লে লে কমলা বোল তেরা বাত কেয়া বোল না হ্যায় ।

কমলসাধন - হাঁ যা বলছিলাম। সেই এক নং ভুতুড়ে স্টেশনটির নাম বেগুনকোদর । এই পশ্চিমবঙ্গেই। পুরুলিয়া জেলার ঝালদা ব্লকের অন্তর্গত এবং পুরুলিয়া শহর থেকে পঁয়তাল্লিশ কিলোমিটার দূরের একটি অতি সাধারণ রেলস্টেশন।

অযোধ্যা পাহাড়ের গা ঘেঁষে ছোট্ট একটি স্টেশন ।চারপাশের অপূর্ব প্রাকৃতিক পরিবেশে এই স্টেশন মন ভরিয়ে দেওয়ার মত।কিন্তু কোন অজানা আতঙ্কে খালি পড়ে আছে প্রায় পাঁচটি দশক ধরে। রেলের মানচিত্রে বেগুনকোদর স্টেশন হলেও ভুতুড়ে বলেই জানে সকলে।

পাকা ইমারতের স্টেশন বাড়ি, কোয়ার্টার সব আছে। এক সময় নাকি হাট বাজারও বসত । এখন সব অতীত। রেললাইনের ধারে সারাবছর হানাবাড়ির মত পড়ে আছে বেগুনকোদর।

এখনও স্থানীয়দের মুখে শোনা যায়, রাত নামলে হঠাৎ হঠাৎ এখানে দেখা যায় অদ্ভুত আলো।বাতাসে ভেসে আসে অদ্ভুত গন্ধ। মাঝে মাঝেই শোনা যায় অদ্ভুত কন্ঠস্বর।

সুকুমার প্রধান মদনমোহন আর বাগাড়িয়া শোনেন মন দিয়ে আর শিহরণ খেলে যায় সর্বাঙ্গে। সায়ন্তিকা বলে - দারুন ইন্টারেস্টিং। তাহলে কি এখানেই অভিযান হবে নাকি কমলদা ?

- সেই কথাই তো বলছি। যদি সবাই মিলে এমন একটা জায়গায় যাই তো অভিযান কেন অভিজ্ঞতাও কিছু কম হয় না। কি বলিস মদন ?

মদনমোহন বলেন - আমি নেই ভাই। একে ভুত তায় আবার রুক্ষ্মসুক্ষ্ম পুরুলিয়ার মাটি। ধাপধাড়া গোবিন্দপুর। তোরা যা। 

সায়ন্তিকা হো হো হেসে বলে - স্যার আপনি এত ভীতু জানতাম না ।

সুকুমার, কমলসাধন, বাগাড়িয়া একবাক্যে সায়ন্তিকাকে সমর্থন করেন । মদনমোহনের ইগোতে টান পড়ে। একটা মেয়ের যা সাহস একজন ম্যানেজারের তা নেই। অমনি বলেন - না না, ভয়ের জন্য বলছি না । অনেকদূর বলে এভয়েড করছি। তা' কতদিনের প্রোগ্রাম ?

বাগাড়িয়া বলেন - এই ধর সাতদিন মানে এক হপ্তা। আরে বাবা, খরচাপাতি, জলপানি সব আমার। তোরা শুধু দিন ঠিক কর ।

- তোর আড়তের কি হবে ?

- সে একটা বন্দোবস্ত করে লিব । এখন যাবার দিন ঠিক কর।

সকলের ছুটিছাটার ব্যাপার আছে ভেবে তখনকার মত আলোচনায় ঠিক হল গন্তব্য বেগুনকোদর। সময় পরে জানানো হবে।  



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror