🍁𝓐𝓷𝓷𝓲𝓮🍀 🍂

Abstract

4.5  

🍁𝓐𝓷𝓷𝓲𝓮🍀 🍂

Abstract

ফুল না Fool? (পর্ব ৪)

ফুল না Fool? (পর্ব ৪)

5 mins
369


অনেক তরিবাদ করা সত্ত্বেও অর্কর জ্ঞান ফিরছে না দেখে অর্কর বাবা নাকে একটা জামাকাপড় শুকানোর ক্লিপ আটকে নিজের একটা নোংরা, দুর্গন্ধময় মোজা নিয়ে এসে হাজির হন।


অর্কর মা : (শাড়ির আঁচল দিয়ে নাক চাপা দিয়ে)এটা এখানে কেন নিয়ে এলে?


অর্কর বাবা : এটা বাবুকে শুকিয়ে বাবুর জ্ঞান ফিরানোর জন্য নিয়ে এলাম। 


অর্কর দাদু : পটলা তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি?


অর্পণ : বাবা এটা শুকলে দাদাভাইয়ের জ্ঞান ফেরার কতটা চান্স আছে জানিনা। কিন্তু দাদাভাইয়ের পটলডাঙ্গায় যাওয়ার চ্যান্সতা পুরো একশো শতাংশ আছে। 


অর্কর বাবা : তাহলে তোমাদের কারুর কাছে আর কোনো উপায় আছে?


সবাই চুপ করে দুপাশে মাথা নাড়িয়ে না বললে অর্কর বাবা আবার বলে " তাহলে এটাই ট্রাই করি। "


অর্পণ : বেচারা দাদাভাই। প্রেম করার আগেই না পটল তুলতে হয়।


অর্কর বাবা : এই যে রাম ভক্ত হনুমান নিজের মুখটা একটু বন্ধ করবি।


অর্পণ ব্যাঙ্গাত্মক ভাব করে মুখে চেন টানার ভঙ্গিমা করলে অর্কর বাবা অর্কর নাকের কাছে ওনার নোংরা দুর্গন্ধময় মোজাটা ধরতেই ও মুখ খুলে বড়ো করে একটা শ্বাস নিয়ে কাশতে কাশতে উঠে বসে পড়ে।


অর্ক : বাবা তুমি কি আমাকে আজকেই মেরে ফেলতে চাও?


অর্কর বাবা : ঘোর কলিযুগ ঘোর কলিযুগ। কোথায় বাপকে ধন্যবাদ দিবি তা না উল্টে নিজের একমাত্র বাপকে হত্যাকারী বলছিস।


অর্কর মা : তোমার এই নাটকটা পরে দেখিও। আর বাবু এবার আমাকে একটু স্নিগ্ধার ছবি দেখা তো। 


অর্ক : কি অবস্থা!! ছেলের থেকে বেশী তো ফটো দেখতে আগ্রহী এরা।


অর্কর দাদু : এ কি বলছো দাদুভাই। 


অর্পন : দাদাভাই তুই ঠিক আছিস তো?


অর্ক : হ্যাঁ। 


অর্কর দাদু : তাহলে এবার স্নিগ্ধা দিদিভাইয়ের ছবি দেখাও।


অর্ক : আমার কাছে স্নিগ্ধার কোনো ফটো নেই।


অর্কর মা : আরে তোর কাছে মানে তোর ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডিন বা অন্য কোনো সোশ্যাল মিডিয়া যে যে সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট -এ তুই স্নিগ্ধার ফ্রেন্ড আছিস, সেখানেই দেখা।


অর্ক : কোনো সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট -এ ও আমার ফ্রেন্ড নয়। 


অর্পন : মা দাদাভাইয়ের যে'কটা সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট আছে তাতে একটাও মেয়ে বন্ধু নেই।


অর্কর মা : অ্যা...!


অর্কর বাবা : তাহলে?


অর্কর মা : তাহলে আর কি?


অর্পণ : সত্যিই দাদা ভাই!!


ইতিমধ্যেই অর্কর দাদু ওনার ফেসবুক খুলে সার্চ এ গিয়ে স্নিগ্ধা লিখে সার্চ করতে শুরু করে দিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে স্নিগ্ধা নামের অনেকগুলো মেয়ের প্রোফাইল চলে আসে। তাই উনি অর্ককে জিজ্ঞাসা করেন " দাদুভাই স্নিগ্ধা দিদিভাইয়ের পুরো নাম কি? "


অর্ক : স্নিগ্ধা রায় চৌধুরী।


অর্কর দাদু : ( উত্তেজিত হয়ে স্বাভাবিকের থেকে একটু বেশীই জোরে) পেয়েগেছি ।


অর্কর বাবা : কি পেয়েগেছো?


অর্কর দাদু : স্নিগ্ধা দিদিভাইয়ের প্রোফাইল। (বলে ওনার ফোনটা সবাইকে দেখান।)


অর্পণ : স্নিগ্ধা দিদির প্রোফাইল খুলেছে নাকি স্নিগ্ধা দিদিদের প্রোফাইল খুলে গেছে ।


অর্কর দাদু : সে যাই হোক গিয়ে। অর্ক দাদুভাই এবার তাড়াতাড়ি বলে ফেলো তো এদের মধ্যে কে আমার হবু নাত বৌ?


অর্ক : ত ত... তোমরা কি কি... বলছো কি?


অর্কর দাদু : দাদুভাই এভাবে তোতলাচ্ছ কেন?


অর্পন : আমি বলছি... তোমরা স্নিগ্ধা দিদিভাইকে দাদাভাইয়ের হবু বৌ বললে সেই শুনে দাদাভাই তোতলাছে।


অর্কর বাবা : শেষ মেশ কিনা আমারই ভাগ্যে তোতলা ছেলে এসে জুটলো। 


অর্কর মা : কি বললে?


অর্কর বাবা : আরে আমি কোথায় বললাম? স্নিগ্ধা মা আমাদের বাবুকে এভাবে তোতলাতে দেখলে এমন বলবে। 


অর্কর দাদু : ওহো পটলা চুপ কর তো তুই। (বেশ নরম সুরে) আচ্ছা তো দাদুভাই এবার তাড়াতাড়ি করে বলে ফেলো তো দেখি, স্নিগ্ধা দিদিভাই কোনটা?


অর্কর মা : হ্যাঁ বাবু আর তর সইছে না। তাড়াতাড়ি বল তো দেখি।


দাদুর ফোনটা হাতে নিয়ে অর্ক স্ক্রিনে স্ক্রল করতে থাকে। স্নিগ্ধার প্রোফাইলটা খুঁজে পেয়েছে বলা মাত্রই অর্কর মা, বাবা, দাদু আর ভাই " আমি আগে দেখবো আমি আগে দেখবো " করে ফোনটা নিয়ে কাড়াকাড়ি করতে শুরু করে দেয়।


অর্কর বাবা : আমার ছেলে তাই আমিই আগে দেখবো। 


অর্কর মা : তোমার একার ছেলে নাকি? আমি ওকে নয় মাস....


সঙ্গে সঙ্গেই অর্পণ পাস থেকে বলে ওঠে, " মা প্লিজ... তোমার নেকু সিরিয়ালের টিপিক্যাল ডায়লগগুলো দিও না প্লিজ। শুনলে এখুনি কাল রাতের বিরিয়ানিটা পেট থেকে বেরিয়ে আসতে চাইবে। " 


অর্কর বাবা : হ্যাঁ টেনশনের জন্য এখনো ঠিক মতো হজম হয়নি।


অর্পণ : বাবা তোমার টেনটা সন আছে!


অর্কর মা : (অর্কর বাবাকে উদ্দেশ্য করে) কিহ!তোমার সাহস কম নয়তো!


অর্কর বাবা : এই হনুমান কি যা তা বলছিস? দেখো ইন্দু....


অর্পন : তুমিই তো বললে টেনশনে।


অর্কর বাবা : ওরে গাধা। ও ইন্দু দেখো...!


অর্কর মা : কি দেখবো? হ্যাঁ!


অর্কর দাদু ফিসফিস করে অর্পনের কানে কানে বলেন, " সাবাস! দাদুভাই। সাবাস। "


অর্ক : 😑


অর্পণ মা বাবাকে ঝগড়ায় ব্যস্ত রেখে একটু সাইড হয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে দাদুকে বলে, " দেখো দাদু... আমি এই বাড়িতে সবার ছোট। সুতরাং আমি আগে আবার হবু বৌদিভাইকে (অর্ক চোখ বড়ো বড়ো করে তাকালে) মা... মানে স্নিগ্ধা দিদিভাইএর ফটো দেখবো। " 


অর্কর দাদু : এই না না। এসব হবে না। আমি এই বাড়িতে সবার বড়ো। আই আম দ্যা সিনিয়র মোস্ট পারসন। তাই আমিই আগে দেখবো। 


অর্পন : না না আমি আগে দেখবো। 


অর্কর দাদু : না আমি দেখবো। 


অর্কর মা হঠাৎ করে এসে ফোনটা নিয়ে বলেন "লেডিস ফার্স্ট। শুনেছ নিশ্চই। তাই আমি আগে দেখবো। "


সবাই চুপচাপ মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললে অর্কর মা স্নিগ্ধার ফটো দেখতে লাগে। ওনার পর এক একে সবাই স্নিগ্ধার ফটো দেখে। ফটো দেখে সবার স্নিগ্ধাকে খুব পছন্দ হয়।


অর্কর দাদু : স্নিগ্ধা দিদিভাইয়ের ফটো দেখে মনে হচ্ছে খুব শান্তসিষ্ট প্রকৃতির।


অর্কর মা : হ্যাঁ বাবা। আর মুখটাও কি মিষ্টি। বাবু আমার বৌমা খুব পছন্দ হয়েছে।


অর্কর বাবা : দাঁড়াও। আগে আমাদের এই তোতলা ছেলে স্নিগ্ধা মাকে প্রপোজ তো করুক। দেখো, আবার স্নিগ্ধা মা আমাদের এই তোতলা হ্যাবলাকে রিজেক্ট না করে দেয়।


অর্কর মা : এই কি বলছো কি? হ্যাঁ!? আমার বাবুটা না দেখতে শুনতে খারাপ আর না পড়াশোনাতে। একটু না হয় মেয়েদের ভয় পায়। তাই বলে রিজেক্ট করে দেবে! মোটেই না।


অর্কর বাবা : হুহ। (অর্পনের দিকে তাকিয়ে) কি রে তোর কি হলো হনুমান?


অর্পণ : মনে হচ্ছে স্নিগ্ধা দিদিকে আগে কোথাও দেখেছি। খুব চেনা চেনা লাগছে। কিন্তু কোথায় মনে পড়ছে না।


অর্কর বাবা : এখন আর ওসব মনে করে কোনো কাজ নেই। তার থেকে বরং তোর দাদাভাইকে কতগুলো প্রপোজ করার রকমফের শিখিয়ে দে। কাজে দেবে। পারলে একটা স্ক্রিপ্ট লিখে দিস।


অর্কর দাদু : চুপ কর পটলা। আমাদের বংশে গত তিন প্রজন্ম প্ৰেম বিবাহ করেছে। আমাদের রক্তে রক্তে শিরায় শিরায় প্রেম - ভালোবাসা আছে। 

তুমি কোনো চিন্তা করো না দাদুভাই। আমরা সবাই তোমার সঙ্গে আছি। কি আছি তো?


সবাই একসাথে বলে " হ্যাঁ। আমরা সবাই তোর সঙ্গে আছি। " 


অর্ক : (মনে মনে) হে ভগবান! তোমার এই নির্বোধ বালককে রক্ষা করো। রক্ষা করো।







Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract