পেটে মোচড়
পেটে মোচড়


অনিমেষবাবুর নোলা দিনকে দিন বাড়ছেই কেবল|ছেলেরা-বৌমারা-মেয়ে-জামাই-হাফ ডজন নাতি-নাতনী নিয়ে ভরা সংসারে সম্বৎসর কর্তা-গিন্নী একা থাকলেও, পালা-পার্ব্বনে একেবারে চাঁদের হাট|ছেলেপুলেরা দূর-বিদেশে থিতু হলেও পুজোর কদিন সব্বাই হৈহৈ করে কলকাতার বাড়ীতে| অনিমেষবাবু অপেক্ষায় থাকেন এই দিনগুলোর| গিন্নী আজকাল বাতের ব্যামোয় কাবু,খাওয়া-দাওয়া জুতসই হচ্ছে না| এ কদিন অনিমেষবাবুর কোনও সমস্যা হবে না কারণ বড়বৌমার রান্নার হাতটি বড় খাসা! নাতি-নাতনীরা আসা ইস্তক অনিমেষ বাবুর মুখ আর পেট মোটে বিশ্রাম পাচ্ছে না| তার ওপর বড়বৌমার হাতে চিংড়ির মালাইকারী আর ভেটকি পাতুরী দিয়ে মধ্যাহ্নভোজনটি সেরে ভাতঘুমটা জমতে না জমতেই পেটের মোচড় অনিমেষবাবুকে বেশ কাতর করে ফেলল| ঘনঘন বাথরুমে যেতে দেখে গিন্নী বেজায় বিরক্ত, বড় লজ্জিত, ঘরে যে স্বল্পাহারী স্বল্পবাক ডাক্তার জামাই উপস্থিত! জামাই মেয়ের হাতে ওষুধ আর পথ্যের নিদান পাঠিয়ে দিল! ক্ষীণ আপত্তি জানাতে গিয়ে অনিমেষবাবু গিন্নীর ধমকে ভিজে বেড়ালটি| বিষন্ন মনে অনিমেষবাবু দোতলার বারান্দায় ইজিচেয়ারে, নীচ থেকে লুচির খাস্তা গন্ধ আসছে| গিন্নী একগ্লাস ইলেক্ট্রালের জল হাতে ধরিয়ে হনহনিয়ে চলে গেল| বড়বৌমা বিরিয়ানি বসিয়েছে, আহা কী সুবাস! রাত দেড়টায় হঠাৎ ঝনঝন শব্দে সবাই আলো জ্বেলে লাঠি নিয়ে নীচে এসে হেসে খুন! অনিমেষবাবু বিরিয়ানির বাটি হাতে দাঁড়িয়ে! মুখে আঁচল চাপা দিয়ে গিন্নী বললেন, "মরণদশা"!