STORYMIRROR

Rashmita Das

Horror

4  

Rashmita Das

Horror

পাপস্খলন

পাপস্খলন

7 mins
714

পাপস্খলন


হঠাৎ করেই আমাদের পিকনিকের তারিখটা ফাইনাল হয়ে গেল।আজ এর আত্মীয়ের বাড়ি নিমন্ত্রণ তো কাল ওর অফিসের মারামত্মক কাজের চাপ,এইসব বজ্র আঁটুনিতে একটা কোনো রবিবার আমরা ম্যানেজ করতে পারছিলাম না যাতে আমরা সব বন্ধুরা একসাথে হয়ে এই জমাটি শীতে একটু আনন্দ,একটু হৈ হুল্লোড় করতে পারব।কিন্তু "শীত দেবতা" র আশীর্বাদে অবশেষে আমরা চিরাচরিত প্রাত্যহিকীর এই একঘিয়েমির মাঝে একটি ঝলমলে দিন পেয়ে গেলাম,বাসের জানলার পাশে বসে গান গাইতে গাইতে তীব্রবেগে ধাবমান সূর্যের সাথে সমান তালে পাল্লা দেবার অমোঘ সুখগুলি ছুঁয়ে ছুঁয়ে অনুভব করার জন্য।আমাদের ব্যস্ত।জীবনের নিত্যনৈমিত্তিক চেনা পরিচিত শাখাপ্রশাখার আবডালে বিচরণ আমাদের। কিন্তু এই গন্ডিটা ছাড়িয়ে দৃষ্টি এতটুকুও যদি প্রসারিত করি,তাহলে আমরা উপলব্ধি করতে পারি,এই রোজনামচায় প্রতিনিয়ত যে শব্দ কথা ভাষা উচ্চারিত হয় তার বাইরেও অনেক অজ্ঞাত অমোঘ শব্দ কথা ভাষা আমাদের চারপাশে আমাদেরকেই বেষ্টন করে আছে ছিল,আছে এবং চিরকাল খোদিত থেকে যাবে।আজ আকস্মিক ভাবে কুড়িয়ে পাওয়া সেরকমই কিছু বোবা আকুতি,কিছু হাড়হিম করা আর্তনাদ আমি আমার শব্দের মাঝে তুলে ধরার জন্য কলমের দ্বারস্হ হলাম।

বাসে করে পিকনিকের স্পট পর্যন্ত পৌছাতে আরো প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন ঘন্টা মতো সময় লাগবে।বাসের অনর্গল ঝাঁকুনি খেতে খেতে আমাদের প্রত্যেকের ব্রেকফাস্ট প্রায় হজম হয়ে আসার মুখে।ক্লান্তিতে আমরা সবাই যখন এ ওর গায়ে ঢলে এলিয়ে পড়ার পরিস্থিতিতে এমন সময় বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো উদয় হল এক নতুন ঝামেলা। বাসের একটি চাকার টায়ার পাংচার হয়ে গিয়েছে। আমাদের পাতা আনন্দের গালিচায় এইভাবে যে ছাইটা পড়বে তা আমরা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারিনি। আর অর্থনীতিতে মাস্টার্স করা আমার তো যানবাহনের খোলনলচের অ আ ক খ জ্ঞানটুকুও নেই।এই নতুন সমস্যাটির সমাধানে আমার হাত পা মাথা যেহেতু কোনো কাজেই আসবে না তাই আমি এইদিকে আর আগ্রহ না দেখিয়ে চারপাশটা একটু ঘোরাঘুরি করার দিকে মনোনিবেশ করলাম।

মন দিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলাম চারপাশটা।পাহাড়ী জায়গা।সবুজঘন পাথুরিয়া আবহের নেশায় মন বিভোর হয়ে যেতে থাকল।আমি এগোতে থাকলাম এক পা...দুই পা...তিন পা...পাঁচ পা...

সবাই এখন গাড়ির চাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। এখন আমায় নিয়ে ভাবার মতো ফুরসত কারোর নেই।অতএব এই সুন্দর নির্জনতায় সে কোনো বিঘ্নই ঘটবে না সে বিষয়ে আমার নিশ্চিন্ততা ষোলো আনাই ছিল।আমি অন্বেষণ আর অজানাকে আবিষ্কারের নেশার হাতছানিতে মন্ত্রমুগ্ধ অনুগামীর মতো শুধু এগিয়ে যেতে থাকলাম।চলতে চলতে হঠাৎ পায়ে একটা লোহার আংটার মতো একটা কিছু ঠেকল।নীচে তাকিয়ে দেখলাম,আংটাই বটে।একটা প্রকান্ড লোহার আংটা।একটা কৌতূহল আমার মনের ভিতরে উসখুস করতে শুরু করল।তক্ষুনি আমি মনঃস্হির করে নিলাম এই আংটা খুলে আমায় দেখতেই হবে ভিতরে কি আছে।আমি আংটার কাছে ঝুঁকে পড়লাম।দেখলাম,আংটাটি যেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধূলো আর বালুরাশি মেখে বার্ধক্যের ভারে ভগ্নপ্রায় হলেও তার আপন অস্তিত্বের জৌলুশ এবং রাজকীয়তায় কোনো কার্পণ্য নেই।আমি আংটার ভগ্নপ্রায় শরীর এবং চারপাশটা পরিষ্কার করতে লাগলাম আর ধীরে ধীরে উন্মুক্ত হতে থাকল একটি কুঠুরির দরজা।এবং এর গায়ে খোদিত কারুকার্যের মধ্যে যে রাজকীয়তা আছে তা যেন এক অব্যক্ত ইতিহাস উন্মোচন করার জন্য আমায় হাতছানি দিতে শুরু করেছে।আমি তখন ভুলে গেলাম পিকনিকের কথা।ভুলে গেলাম বাসে টায়ার পাংচার হওয়ার ঘটনা।ভুলে গেলাম বন্ধুদের,ভুলে গেলাম জগৎ সংসারকে।আমি আংটা দুটি শক্ত করে ধরে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে হ্যাঁচকা টান দিতে থাকলাম।আমার একার শক্তি দ্বারা এই দরজা খোলা সম্ভব নয়।আমি হতভম্ব হয়ে কুঠুরির পাশে ঘর্মাক্ত পরিশ্রান্ত অবস্হায় ধপ করে বসে পড়লাম,আর সঙ্গে সঙ্গে "উরিব্বাস" বলে যন্ত্রনায় লাফিয়ে উঠে পশ্চাদদেশে হাত বুলোতে শুরু করলাম।তারপর নীচের দিকে তাকিয়ে দেখি, কুঠুরির দরজার ঠিক নীচের দিকে একটু অনুচ্চ হাতলের মতো কি একটা ধূলোমাখা বস্তু উচু হয়ে আছে এবং তার উর্দ্ধাংশ সূঁচালো এবং তীক্ষ্ণ ফলার মতো উন্মুক্ত হয়ে আছে।আমি বিস্ময় সামলে উঠে হঠাৎ একটা জিনিস খেয়াল করলাম।কুঠুরির দরজাটা একটু ফাঁক হয়ে আছে। এবার আমি দুয়ে দুয়ে চার করে একটা কিছু আন্দাজ করে নিলাম।তৎক্ষণাৎ পাশে পড়ে থাকা একটা প্রস্তরখণ্ড নিয়ে শরীরের সর্বশক্তি প্রয়োগ করে ওই সূঁচালো অগ্রভাগটিকে ক্রমাগত চাপ দিতে থাকলাম।আর আমার এই বলপ্রয়োগের ফলস্রসূ যা অনির্বাচনীয় বিস্ময়কর ঘটনা আমার চোখের সামনে ঘটে চলেছিল তাতে আমার বুকের ভিতরে উত্তেজনার পারদ উত্তরোত্তর চড়তে থাকল।

আমি হাঁ হয়ে দেখতে থাকলাম,আমার বলপ্রয়োগের তীব্রতার সাথে সমান তালে তাল মিলিয়ে কুঠুরির দরজা যান্ত্রিক ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ সহকারে উন্মোচিত হচ্ছে।এইভাবে আমি কুঠুরির পুরো দরজাটাই খুলে ফেললাম। এবার আমি কুঠুরির ভিতর আমার অপ্রতিরোধ্য কৌতূহল নিয়ে দুচোখের দৃষ্টি যতটা দূরে যায় প্রসারিত করার চেষ্টা করলাম৷ কিন্তু হঠাৎ করে এইরকম একটা ঝটকা খাব এটা আমি সত্যিই দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি।একটা বীভৎস দুর্গন্ধ যেন আমায় মৃত্যুর ন্যায়ে শ্বাপদের মতো গিলতে এল যা আমার এই এক জন্মের কেন,গত সাত জন্মের আন্নপ্রাশনের ভাত আমার নাড়িভুড়ি টেনে ছিঁড়ে বার করে নেবে।কিন্তু আমিও নাছোড়বান্দা। এত ঝঞ্ঝাটের পর যখন সামনে এইরকম একটা রাজারাজড়ার আমলের রহস্যময় চোরাকুঠুরির খোলা দরজার সামনে দাঁড়িয়েও স্রেফ দুর্গন্ধের কারণে আমি বেমালুম সরে পড়ব এটা আমি কিছুতেই মন থেকে মানতে পারছিলাম না।মনটা একটু শক্ত করে...মনে জোর এনে পুনরায় আমি দৃষ্টি ফেললাম কুঠুরির উন্মুক্ত দরজাতে।

হঠাৎ রীতিমতো অপ্রত্যাশিতভাবে কুঠুরির উন্মুক্ত দরজা থেকে দুর্গন্ধের লেশটুকুও পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়ে সেখান থেকে দমকা হাওয়ার মতো নির্গত হতে শুরু করল পাগল করা নেশাতুর এক মিষ্টি সুবাস।আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুধু কুঠুরির ভিতরে ঢোকার রাস্তা খোঁজার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলাম।

মাথাটা একটু ঝোঁকাতে দেখলাম,সূর্যের আলো যেন সহস্র যুগ ও সহস্র অন্ধকার পার করে যেন জীবনের দিশা দেখানোর জন্য কুঠুরির দরজার ভিতরে আলগোছে প্রবেশ করেছে।ওই আলোতে আবছাভাবে প্রত্যক্ষ করলাম। একটা সিঁড়ির উপস্থিতি যা নীচের দিকে নেমে গিয়েছে।আমি কালবিলম্ব না করে ওই সিঁড়িতে পা দিয়ে নীচে নামার জন্য উদ্যত হলাম।মনের ভিতরে যাবতীয় সংকোচ,পিছুটান ধূলার ন্যায়ে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে আমি আস্তে আস্তে করে কুঠুরির দরজা ও সিঁড়ির রাস্তার ভারসাম্য ঠিক রেখে ধীরে ধীরে ভয়ে ভয়ে একধাপ একধাপ করে নীচে নামতে শুরু করলাম।বুকের ভিতর যেন কামার বসে বসে হাতুড়ি পিটছে।আমি মোবাইলের টর্চ জ্বেলে আস্তে আস্তে প্রবেশ করতে লাগলাম রহস্যের অতল প্রান্তরে।

অবশেষে পা দানির কোটা পূরণ করে আমি পা রাখলাম ভূগর্ভস্হ ভূমিতে।মোবাইলের আলো ফেলে যা দেখলাম তাতে আমার চক্ষু একেবারে চড়কগাছ।বিস্ময় তার চোরাস্রোতের একেবারে মোহনায় পৌঁছে তার এই সুতীব্র জলোচ্ছ্বাসের দ্বারা আমায় যে এইভাবে স্তব্ধ করে দেবে আমি তা কল্পনাতেও আনতে পারিনি।

আমি চারপাশে দেখলাম,প্রায় শ খানেক স্বর্ণমুদ্রাপূর্ণ ঘড়া।কিছুক্ষণ থমকে দাঁড়িয়ে রইলাম শুধু। কিয়ৎক্ষণ পর মস্তিষ্কের অজানা কন্ট্রোলরুমের চালিত রোবটের ন্যায়ে আমি দ্রুত মোহরের ঘোড়ার দিকে অগ্রসর হতে থাকলাম। হঠাৎ আমায় গায়ে তীব্র গতিতে কিছুটা তরলপদার্থ ছিটকে আসার মতো সুতীক্ষ্ণ একটা স্পর্শ অনুভব করলাম।টর্চের আলো ফেলতেই আমার চক্ষুস্হির!আমার কনুইএর কাছে লেগে আছে একফোঁটা টাটকা রক্ত।আমি চিৎকার করে উঠলাম। কে!কে!

উত্তরে পেলাম নৈঃশব্দ্যতার লেলিহান আস্ফালন।আর প্রায় সাথে সাথেই অনুভব করতে আরম্ভ করলাম,আমার সারা শরীরে পিচকিরির মতো তাল তাল রক্ত দিয়ে উন্মাদের ন্যায়ে কেউ স্নান করিয়ে দিতে উদ্যত হয়েছে। আমি তখন মোহরের মায়া ত্যাগ করে সেই অন্ধকূপ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলাম।পশ্চাতে ফিরে যেই বেরোনোর জন্য অগ্রসর হব তখন তাড়াহুড়োয় আমার মোবাইলটা কিসে যেন ধাক্কা লেগে ছিটকে পড়ে গেল।

আমি মোবাইলটা কুড়োতে যাব,এমন সময় শুনি ঘরের ঘরের শব্দ।কুঠুরির দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দ।আমি সমস্ত চেতনার উর্দ্ধে উঠে গিয়ে ঝরঝর করে কেঁদে ফেললাম।কি হচ্ছে...কেন হচ্ছে...এসব প্রশ্ন যে আসা বৃথা সে কথা নতুন করে বোঝার বাকি নেই।আমি আমার জীবনের এমনই এক ফায়ার ব্রিগেডের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছি যেখানে আমার ভাগ্য বিনা বিচারে নির্বিচারে আমার বুকে গুলি করে মৃত্যুদন্ড দেবে আর আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মরব।আমার সব চেতনা...সব বোধ যেন মহাশুন্যের সাথে মিলিয়ে যেতে থাকল।আমি ধপ করে বসে পড়লাম।হঠাৎ চারপাশে আরম্ভ হল বিরাট আর্তচিৎকার।মনে হল যেন ধরিত্রী জুড়ে কাটারির কোপে নিধনযজ্ঞ শুরু হয়েছে। চারপাশে পৈশাচিক কান্না আর আকুতি দিয়ে যেন নরকের দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে একটু একটু করে,আর চতুর্দিকে শুধু পিচকিরির হোলিখেলার ন্যায়ে ফোয়ারা ছুটছে।আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না।এখান থেকে পালাব যে,সে রাস্তাও বন্ধ।আমি দুইহাতের তালুতে মাথাটা ধরে টলতে শুরু করলাম।হঠাৎ দেখলাম,সামনে মোহরের ঘোড়ার চিহ্নমাত্র নেই।বরং চতুর্দিকে পড়ে আছে রক্ত ও মাংসপিন্ড লেগে থাকা অসংখ্য নরকঙ্কাল।আমি ধীরে ধীরে জ্ঞান হারাতে শুরু করলাম।

চোখ মেলতে আমি দেখতে পেলাম,আমি হাসপাতালের বিছানায় শায়িত আর আমার বেড ঘিরে রয়েছে বন্ধুরা।সকলের চোখেমুখে স্বস্তির নিঃশ্বাস। কৌশানি বলে উঠল,"তুই যে একটা গেছো বাঁদর তা আমরা সবাই জানি।কিন্তু তাই বলে গাছের মগডালে না উঠে সোজা মাটির তলায় ঢুকে গেলি গুপ্তধনের খোঁজে?আর তাও আমাদের কিচ্ছুটি না জানিয়ে!সবার দুশ্চিন্তা কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কোন রাজার ধন হাসিল করলি তুই নিজেই বুঝে দেখ"...

অভিমানী মুখটা কৌশানি ঘুরিয়ে নিল জানলার দিকে।বন্ধুরা আমাকে খুঁজতে খুঁজতে সংজ্ঞাহীন অবস্হায় ওই কুঠুরির বন্ধ দরজার পাশে আবিষ্কার করে।কিভাবে আমি কুঠুরির দরজার বাইরে এলাম তা সত্যিই রহস্য।ক্রমে আমি হাসপাতাল থেকে সুস্হ হয়ে চলে আসলাম আমাদের হোটেলে। পরে স্হানীয় মানুষের কাছে জানতে পারি সেই এলাকার ইতিহাস।প্রায় চারশো বছর আগে সেখানে এক অত্যাচারী রাজা ছিল।সাধারণ প্রজাদের নিষ্ঠুর শোষণ ও পাশবিক নির্যাতনেরই আরেক নাম ছিল রাজতন্ত্র। রাজকর তখন এতটাই অধিক ছিল যে মানুষ উপোস করে চিতায় গিয়ে উঠলেও সেই রাজকর নিয়মিত দেওয়া প্রজাদের পক্ষে অসম্ভব ছিল।উপযুক্ত কর প্রদানে যে প্রজারা ব্যর্থ হত তাদের জন্য রাজা নির্ধারণ করেন এক অভিনব শাস্তি।রাজপথের কিছুটা দূর অন্তর অন্তর মাটির তলায় একটা করে কুঠুরি খনন করা হয়েছিল। কুঠুরিতে করপ্রদানে ব্যর্থ প্রজা ও তার পরিবারকে ধরে এনে পোষা লেপার্ডদের দ্বারা জ্যান্ত ভক্ষণ করানো হত।

সব বন্ধুরা আমায় নিয়ে রসিকতায় মশগুল।আমি সেই হাসির মহলে কিছুক্ষণ নীরব থেকে শেষে আমিও হাসিতে যোগ দিলাম।হঠাৎ একটা জিনিস লক্ষ করে আমার বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল।শিড়দাঁড়া বেয়ে নেমে এল শীতল ঠান্ডা স্রোত।জ্যাকেটের ভিতরে ঢাকা পড়া টিশার্ট যেটি পরে আমি রওনা দিয়েছিলাম ট্যুরে সেই টিশার্টের একটা কোণায় এখনো যেন টাটকা হয়ে রয়েছে তীক্ষ্ণভাবে ছিটকে আসা রক্তের একটি দাগ।আমি ধীরে ধীরে বন্ধুদের মাঝখান থেকে সরে এলাম নির্জন নিরালায়। আমার এই শ্বাসরোধ করা কাহিনী যদি আমি ঘুণাক্ষরেও কাউকে বলি তাহলে হাসির পারদ যে আরও একধাপ উঠে যাবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

তাই খোলা খাতায় তুলে রাখলাম এই পাপস্খলনের শব্দ ও আকুতি।পৃথিবীর বুকে হয়তো এভাবেই এক একটি পাপ সংঘটিত হয় আর জলে পাথরে বা মাটি ফুঁড়ে এভাবেই হয়তো সেই পাপের অশ্রু আর রক্তের স্খলন হয় যুগের পর যুগ ধরে...

 

সমাপ্ত 


রশ্মিতা দাস


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror