Manasi Ganguli

Abstract

5.0  

Manasi Ganguli

Abstract

মুঠোয় দুনিয়া

মুঠোয় দুনিয়া

3 mins
593


 আজকের দুনিয়া প্রযুক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। উঠতে-বসতে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে অনেক সহজ করে তুলেছে। ব্যস্ত জীবনে যখন ছুটতে ছুটতে মানুষ ক্লান্ত,সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে তখনই হাতের মুঠোয় প্রযুক্তি,যার ব্যবহারে দৈনন্দিন জীবনে প্রায় বেশিরভাগ সমস্যার সমাধান হয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞানের নানা আবিষ্কারকে কাজে লাগিয়ে নতুন কিছু তৈরি করে আমাদের জীবনের মানকে উন্নত করে চলেছে প্রযুক্তি। বর্তমানে আমরা প্রত্যেকেই কম-বেশি প্রযুক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে চলেছি।

      প্রযুক্তির ব্যবহার বলতে প্রথমেই মনে পড়ে আমার হাতে হাতে ঘোরা মোবাইল ফোনের কথা। ছোট্ট মুঠোর মধ্যে যাতে ধরা পড়েছে বিরাট দুনিয়া। এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফেসবুক করে নিজের অবসর বিনোদন করি। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কথা,ছবি দূরে থাকা আত্মীয়-বন্ধুর সঙ্গে মুহুর্তে শেয়ার করতে পারি। ছেলে,মেয়ে বা স্বামী বাইরে কিছু কেনাকাটা করার সময় সঙ্গে আমি না থাকলে ছবি পাঠিয়ে আমার পছন্দ কিনা জেনে নেয় বা আমার পছন্দমতো জিনিস কিনে ফেলতে পারে। হাতের মুঠোয় দুনিয়া যখন মোবাইলের মাধ্যমে ছেলে-মেয়ের পরীক্ষার ফলাফল জেনেছি,প্রয়োজনে তাদের টাকা পাঠিয়েছি বা অন্য কোথাও টাকা পাঠাতে নেট ব্যাঙ্কিং করি বা গুগল পে অথবা পেটিএম এর মাধ্যমে। অনলাইন টিকেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে ঘরে বসেই ট্রেনের বা প্লেনের অগ্রিম টিকিট কেটে ফেলি নিমেষে। কোথাও বেড়াতে যাবার আগে হোটেল বুকিংও করে ফেলি। ইন্টারনেট থেকে প্রচুর বই পড়তে পারি। ফেসবুকেও প্রচুর ভালো ভালো লেখা আসে তা পড়ে থাকি। নিজে যেহেতু লেখালেখি করি,তাই নিজের লেখা সহজে পোস্ট করতে পারি। প্রয়োজনে ইমেইলের মাধ্যমে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখা পাঠাতে পারি,এছাড়া ইমেইলের মাধ্যমে চিঠিপত্র,ছবি ও তথ্য আদান-প্রদান করে থাকি। কখনও বা কোনো বিশেষ লেখালেখির প্লাটফর্ম থেকে প্রাপ্ত শংসাপত্র ডাউনলোড করে তার প্রিন্ট আউট বার করে নিতে পারি।

      মোবাইলের মাধ্যমে যখন তখন ছবি তুলতে পারি,তা নিজের হোক বা কোনও প্রিয়জন বা অপ্রিয়জন বা সুন্দর কোনও দৃশ্য। ইউটিউবে গান শুনি,গলা মেলাই, আবৃত্তি শুনি,শিখি,বাজনা শুনি,কখনও আবার সিনেমা বা নাটক দেখি। রান্নার ভিডিও দেখি,শিখি। কত রকমের হাতের কাজের ভিডিও আসে দেখি। রূপচর্চা তাও দেখি,প্রয়োজনমতো অ্যাপ্লাই করি। যা কিছু শিখতে আমি ভালবাসি,তাই এই প্রযুক্তিকে আমি আপন করে নিয়েছি। প্রতি মুহূর্তে প্রযুক্তি ব্যবহার করে চলি। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে আমি আমার বাড়ির দিকে নজর রাখতে পারি সে দিল্লি,মুম্বাই,কলকাতায় থাকি বা নিজের বাড়ির উপর তলাতেই থাকি।

        প্রয়োজনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে বাড়িতে খাবারের অর্ডার দিয়ে খাবার আনিয়ে থাকি। হঠাৎ কোনও গেস্ট এসে পড়লে বা নিজেরই হয়তো কিছু খেতে ইচ্ছে হলো তখনই হাতের কাছে হাজির তারা। অ্যাপ ডাউনলোড করে রেখেছি। প্রয়োজনে অনলাইনে জামা কাপড় কিনি, প্রচুর দেখা যায়,সেলসম্যানের বিরক্তি দেখতে হয় না,ঘরে বসে সময় বাঁচে। কোনও ওষুধ খাবার আগে তার সাইডএফেক্ট জেনে নিই। দূরে কোথাও ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট করতে হলে তাও করে নিই ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইমেইল করে। এছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নানা রকম টিপস থাকে যা পড়ে উপকৃত হই। ঘরে বসে প্রয়োজনে ওলা,উবেরের মাধ্যমে গাড়ি বুক করে নিই,রাস্তায় দাঁড়িয়ে অযথা সময় অপচয় করতে হয় না।

      একা একা চলাফেরা অভ্যস্ত না হওয়ায় রাস্তাঘাট আমি বিশেষ চিনি না,কিন্তু বর্তমানে অনেক সময় একা বেরোতে হচ্ছে। জিপিএস অন করে যে কোনও জায়গায় সহজেই পৌঁছে যাই,সে যত অজানা জায়গাই হোক। বারবার গাড়ি দাঁড় করিয়ে মানুষকে ডিরেকশন জিজ্ঞেস করতে হয় না বাড়ির মানুষরাও আমায় একা ছেড়ে নিশ্চিন্ত এখন। মজা হয়েছিল একবার সাউথ ইন্ডিয়া বেড়াতে গিয়ে। যে ড্রাইভার আমাদের নিয়ে ঘোরাবে সে তামিল ছাড়া কিছু বোঝেনা। প্রথমে একজন ইংরেজি জানা তামিল ভদ্রলোককে বলে তাকে দিয়ে ড্রাইভারকে বোঝানো হলো। যাত্রা শুরু হলো। কিন্তু আমাদের তো তার সঙ্গে কথাবার্তা দরকার। আমরা নানারকম ভাবে তাকে বোঝাবার চেষ্টা করি,সে কিছুই বুঝতে না পেরে হেসে ফেলে,আমরাও হেসে ফেলি,কিন্তু তাতে কাজ হবে না। হঠাৎ মাথায় খেলে গেল গুগল ট্রান্সলেটরের কথা। আমি বাংলায় লিখে তামিলে ট্রান্সলেট করে তাকে মোবাইল স্ক্রিনে দেখালেই সে বুঝতে পারছে দেখলাম। ভাগ্যি সে পড়তে পারত। এভাবে আমাদের পথচলার খুব সুবিধা হল। সেও খুশি আমরাও।

     ইন্টারনেট দুনিয়া এক সমুদ্র। এর মাধ্যমে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে যখন যা প্রয়োজন জানতে পারি মুঠো খুললেই।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract