মরার আগে
মরার আগে


মাত্র দুই মাস আগের কথা দিদা তখন কোলকাতা তে আমাদের বাড়িতে।
কিছু দিন আগেই নতুন ফ্লাটে এসেছি।
আমি কাজের থেকে ফিরেই দিদার ঘরে গেলাম।দেখলাম দিদা মুখটা
কোলের কাছে গুজে বসেআছে। আমি জিঞ্জাসা করলাম “ দিদা শরীর কেমন আছে?
দিদা মুখ তুলে বল্ল” এই তো বাবা।আর ভাল থাকি?ভগবান এমন কঠিন রোগ
দিয়েছেন। “
কিছু ক্ষ্মণ চুপ থেকে দিদা বল্ল “ এই এলি কাজ থেকে?”
আমি বল্লাম “ হ্যাঁ।“
ঘদিদা বল্ল “যা হাত মুখ ধুয়ে আয়”।
আমি বল্লাম”আজকে খেয়েছো তো?”
দিদা কিছু বল্লেন না।
হঠাৎ আমার হাত টা চেপে ধরে বল্লেন “ সমু মা এর সাথে খারাপ ব্যবহার করিস না। তোর বাবা তো ঔ রকম জানিস।“
আমি বল্লাম “না না খারাপ ব্যবহার করার কি আছে?”
দিদা ” দেখছিস তো প্রদীপ কত করছে?
কত কষ্টের টাকা ভগবান এই ভাবে শেষ করে দিচ্ছেন।“
আমি বল্লাম” দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে।“
ইদানিং সত্যি আমি কেমন যেন হয়ে গেছি।
কথায় কথায় রেগে যাই।যা মুখে আসে বলে ফেলি। কেন ভাবিনা যে সেটা কতটা আঘাত করে সবাই কে। আজ অনেক বড় হয়েছি। ভাল কম্পানিতে চাকুরী করি।
ভালো সেলারি।আজ থেকে পাঁচ বছর আগে সেটা সপ্ন ছিল। আজ সব
কিছু আছে যতটা আশা করিনি।কিন্তু এর মাঝে কোথায় একটা বড় ফাঁক থেকে গেছে। সেটা সেই দিন বুঝতে পারলাম।
দিদা কোলকাতা তে থাকতে রোজ সকলকেই হাঁটতে যেতেন। সকালে এসে চা খেয়ে বাবা কে বলতেন “ কই আশোক বকুল এর বাবা কে এক বার ফোন টা কর দেখি।
বাবা তাই করত।
হাগো চা খেয়েছ দুবার?
দুখঃ এয়েছে কাজ করতে?
লালনের মা রান্না করতে এসেছে?
পাচুর বাবা কোথায় খাচ্ছে।
শরীরের ভেতরে একটা রোগ প্রতিনিয়ত মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
চিকিৎসা চলছে। নটা কেমো নেওয়া হয়ে গেছে। শরীরের আর কিছু নেই।এক মাত্র মনের জোরে।
আমি ছোট থেকে দিদার হাতে মানুষ। অনেক কথা অনেক স্মৃতি।
বর্ধমান জেলার ছোট্ট একটা গ্রমে জীবনের পঞ্চাশ বছর কাটানোর পর হঠাৎ………………………………
ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা সংসার।
ঠাকুর ঘর এর জীনিস গুলো সব অনেক পুরোনো খুব চেনা।