অভিশপ্ত সিংহাসন
অভিশপ্ত সিংহাসন


সময় টা ছিল 1657সাল।
বাদশা সাহজাহান তখন অসুস্থ।
দিল্লী র সিংহাসনে কে বসবে?
দারা, সুজা, মুরাদ, ঔরঙ্গজেব?
সুজা তখন বাংলা র শাসক। বর একটা নৌকায় করে এক দিন নামলেন ঢাকার বন্দর এ।
সুজার চোখ তখন দিল্লী র মসনদে। আলিবর্দি তখন বন্দর এ দাঁড়িয়ে ছিলেন সুজা কে ম্বাগত জানান র জন্য।
(আলিবর্দি যখন বুঝতে পারেন যে সুজার আর বাদশা হবার কোনো সম্ভাবনা নেই তখনই তিনি পালিয়ে যাবার চেষ্টা
করেন কিন্তু ধরা পরে যান।এবং তার শিরচ্ছেদ করা হয়।)
পরের দিন সুজা এবং আলীবর্দী খান বেরিয়ে ছিলেন শিকার করতে।
আলীবর্দী খাঁ সুজার এখন খুব কাছের মানুষ। আনেক ভালো খারাপ সময় এর বন্দ্বু।
হঠাৎ সুজা বল্ল" আমার ঘোরা টাকে একটু পানি পিলাতে হবে।"
কিছু দুরে একটি জলাশয় চোখে পরল। একটি ছোকরা বসে মাছ ধরছে।
সুজা ছোকরা টিকে বল্ল" আমার ঘোরা টাকে একটু পানি পিলাতে হবে।
তুই কি পারবি?
ছেলে টি কোন উওর না দিয়ে নিজের মনে মাছ ধরতে লাগল।
সুজা খুব রেগে গিয়ে বল্ল" ওই বাঁদির বাচ্ছা। শুনতে পাচ্ছিস না।
ছেলে টি রেগে গিয়ে বল্ল"বাঁদির বাচ্ছা আমি না তুমি?
আলীবদি বল্ল" গুসতাখ তুই জানিস কার সঙ্গে কথা বলছিস?
ইনি হেলন হিন্দুস্থান এর হবু বাদশা।
ছেলেটা বল্ল "জানি।নিজের ছোট ভাইয়ের কাছে তরা খেয়ে এখানে এসেছে জোর দেখাতে।"
সুজা চিৎকার করে ঊঠল" গুসতাখ"।
কোমর থেকে তল য়ার বার করে কেটে ফেল্ল ছেলেটির গলাl
সুজা যে ছেলে টিকে নিসংস ভাবে হত্যা করল তার নাম ছিল মুবারক।
তার বাবা আমজাদ অলী খাঁ ছিলেন পাথরের শিপ্লী।
তিনি পাথর কেটে নানান ধরনের জিনিস বানাতেন।
সেই দিন সন্ধ্যায় তিনি বসে বসে নিজের মনে একটি পাথরের মুর্তি তৈরি করছিলেন।
হঠাৎ ঘোরার পায়ের শব্দ শুনে আবাক হয়ে গেলেন। কয়েক জন সেপাহী মুবারক এর মৃত দেহটি একটা পাথরের
উপর নিয়ে এসে রাখল। আলীবর্দি খাঁ ঘোরার পিঠের থেকে নেমে
আমজাদ অলী খাঁ এর কাছে এসে দাঁড়িয়ে বল্লেন " তোমার ছেলে শাহেজাদার সাথে বত্তমিজি করেছে।তাই শহেজাদা
ওকে কতল করেছে। তুমি যদি বাঁচতে চাও তোমাকে একটা ভাল সিংহাসন বানিয়ে দিতে হবে শহেজাদার জন্যে।
মুবারক এর মৃত দেহ টা একটা পাথরের উপর রাখা।
রত্ত্বে পাথর টা ভিঁজে লাল হয়ে গেছে।
আলীবর্দী খাঁ বল্লেন "শহেজাদা সুজাহাঙ্গির হিন্দুস্থান এর বাদশা হতে চলেছেন।
তোমার তৈরি সিংহাসন যদি শহেজাদার পছন্দ হয় তোমাকে যানবস্ক দেওয়া হবে।"
আলীবর্দী খাঁ চলে যাবার পরে মুবারক এর বাবা ছেলের মৃত দেহটিকে জরিয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন।
যে পাথর ছেলের রক্তে ভিজে লাল হয়ে গেছিল সেই পাথর ছুয়ে বল্লেন
"আল্লা যারা আমার মুবারক কের প্রান এইভাবে কেরে নিল তাদের গুনাহ তুমি মাফকরো না। আমি আমার ছেলের রক্তে ভেজা পাথর দিয়ে এই অভিশপ্ত সিংহাসন বানাবো। তাতে যে বসবে তাদের ও কতল হতে হবে আমার ছেলের মতন।
(এই অভিশাপ সত্যি হয়। সুজা যে দিন সিংহাসনে বসেন সেই দিনই খবর পান যে মীর জুমলা (ঔরঙ্গজেব এর প্রধান সেনাপতি) পঁচিশ হাজার সেনাবাহিনী নিয়ে ঢাকা তে আসছেন। এর পর সূজা আরাকান এ পালিয়ে যান সেখানে মগ রাজা তাকে শিরচ্ছেদ করেন। বহু বছরের পর সিরাজদুল্লা সেই সিংহাসনে বসেন।তার ও একইভাবে মৃত্যু হয়।
এর পর মীরজাফর এই সিংহাসনে বসেন তিনি ও রাজত্ব করতে পারলেন না। এর পর এই সিংহাসনে কেউ বসে নি।
এটি এখন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল এ আছে।এর নাম ছিল 'তক্ত-ই-মুবারক'।