প্রাক্তন
প্রাক্তন


এখন সকাল বেলা।গ্রামে বেরিয়ে পরলাম।মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। এখানে কত স্মৃতি সেই পুরোনো প্রেম বিচ্ছেদ,যন্তনা।
আবার ফিরে আসা।যেখান থেকে সব শুরু করেছিলাম।কাল কি হবে
যানিনা।একটা অজানা আতঙ্ক মনের মধ্যে আর মন খারাপ।
জীবনে কেবল লড়াই করে গেলাম।কি পেলাম জানিনা। কেন এরকম হয়? যাকে এক সময় সমস্থ কিছু দিয়ে ভালোবেসে ছিলাম। আজ সেই সব থেকে পর।
আজ সকালে হঠাৎ মুখমুখি। তার পর যা হবার তা হল মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে দুজন দুই দিকে।দুটো আলাদা রাস্তা সারাজীবন কোথায় শেষ?
কি পরিনাম হবে জানিনা। মন খারাপ হল আবার। চাকুরী করে যেতে হবে।শরীর ঠিক রাখা। আজকে 1.30 টার বাস।এক মন খারাপ করা দুপুর।সব কিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে মিলির বিয়ের পর ও শুখী হতে
পারবে না।অশান্তি হবে।কারন টা খুবই স্পষ্ট।
সাহেব রেলে চাকরি পেয়েছে। ও কি চাইবে একটা বাইক মেকানিক এর সাথে বোনের বিয়ে দিতে?
খুব কষ্ট হচ্ছে মিলির জন্যে। মাসির ছেলের সামনের মাসে বিয়ে।
ও কোলকাতা পুলিশ এ চাকরি করে। আমার খুব ইচ্ছা ছিল মিলিকে
বিয়ে করার।ওকে খুবই ভালবাসতাম। মনে মনে অনেক সপ্ন দেখেছিলাম।প্রায় মাস দুয়েক ওর সাথে নিয়মিত কথা হল।
ওর আবদার এ নানান জীনিস কিনে নিয়ে একদিন পৌছলাম ওদের বাড়ি। ওর মা বাবা কে বল্লাম আমাদের বিয়ের ব্যপারে।সবাই রাজি।কিন্তু মিলি বেঁকে বসল। অপুর্বর ব্যপারে তখনই জানতে পারলাম।বুকের ভেতরে প্রচণ্ড যন্ত্রণা।পলাশীর যুদ্ধে হেরে যাবার পরে
সিরাজদুল্লাহ তার ভাঙ্গা মন নিয়ে পলাশী থেকে পালিয়ে সন্ধ্যা বেলায় গঙ্গার ধারে অপেক্ষা করছিলো কেউ যদি পারকরে দেয়।তার মনের অবস্থা কিছুটা সেই দিন অনুমান করতে পেরেছিলাম।বিস্মাস ঘাতকতা কি দুঃখের। বুলটির সাথে আমার যে রিলেশন ছিল আমি মিলিকে বলেছিলাম।গত কাল হঠাৎ মিলির মার সাথে দেখা হল।
জিজ্ঞাসা করলাম “কেমন আছেন?”
উনি বল্লেন “হ্যাঁ ভেতরে আস?”
ভেতরে ঢুকে দেখলাম মিলি মুখে চাদর চাঁপা দিয়ে শুয়ে আছে।
নানান কথা বওা হল।
আজকে সকালে বাঁধের ধারে বেরাতে গেছি। লড়ি, লড়ি বালি নদী থেকে নিয়ে যাচ্ছে ট্রাক এ করে। আমার জীবন টা কেমন একটা অঙ্কের গ্রাফের মতন হয়ে গেছে।কোন ভালোবাসা নেই কোনো আবেগ নেই।মিলি এখন আর আমাকে ভাল বাসে না। ও অপুর্ব কে ভালোবাসে। ওর শরীর মন সব কিছুই ওর জন্য। তা হলে আমি কে?
ওই দুটো মাস আমার জীবন এর সব থেকে ভালো কেটেছে।
আজকে মিলির কাছে আমি এক টা অচেনা,অজানা সওা।
বুলটির কাছে ও তাই।বুলটিও ভাল সংসার করছে। এই কষ্ট সয্য করার হ্মমতা আমার নেই। এখন আমার কাছে এক একটা দিন বেঁচে থাকা টা বড় চেলেঞ্জ। মিলি ফেসবুক ও ফোনে আমাকে ব্লক করেদিয়েছে। কষ্ট টা আরও বেশি হল। আমি প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি ভাবলাম অপুর্ব মিলিকে ব্লাকমেল করছে। কিন্তু না।
এই গত ছয় মাসে মিলি আর অপুর্বর মধ্যে অনেক কিছু হয়েগেছে।
হয়ত মিলি আর অপুর্ব কে আগের মতো ভালোবাসে না। হয়
তো মিলি নিজের ভুলটা বুঝতে পেরেছে। ও আবার আমার জীবনে ফিরে আসতে চায়। কিন্তু কোথায় কি মিলির বিয়ের দিন ঠিক হয়ে গেছে। ফেব্রুয়ারি মাসের 12 তাড়িখ।মাস ছয় এর আগের কথা বাকলসা থেকে ফিরলাম মিলির মা বাবার সাথে কথা বলে আমাদের বিয়ের ব্যপারে।
মিলি আমার থেকে বার বছরের ছোট। আমার বন্ধু সাহেবের বোন। জাতে অনেক ছোট আমাদের থেকে।
আমি এখন একটি ঔষধের কম্পানিতে কাজ করি ভাল পোস্ট ।
মিলির সাথে অপূর্ব র রিলেশন এর ব্যপারে গ্রামে গিয়ে জানতে পেরেছি।
ভেবেছিলাম একটা মিথ্যা গুজব। কিন্তু কোলকাতাতে এসে যখন মিলিকে ফোন করলাম দেখলাম
আমার নাম্বারটা মিলি ব্লক করে দিয়েছে।
বুকের ভেতরে কেমন যন্ত্রণা অনুভব করলাম।
অন্য একটা নাম্বার থেকে মিলিকে ফোন করলাম।
মিলির মা ফোন ধরলেন
বল্লেন " ইন্দ্রনীল ভালো আছো?"
আমি বল্লাম" মিলি কোথায়?"
মিলির মা বল্লেন " ও ঘুমিয়ে পরেছে "।
বুঝতে পারলাম মিথ্যা কথা বলছেন উনি।
আমি বল্লাম "ঐ ছেলেটা কি খুব ডিসটার্ব করছে মিলিকে?"
উনি বল্লেন " কোন ছেলেটাগো?"
আমি বল্লাম " ঐ অপূর্ব ছেলেটা।একটা মোষ্ট বাজে ছেলে।"
উনি চুপ করে রইলেন।আমার আর ব্যপারটা বুঝতে বাকি রইল না। উনি সব কিছু জানতেন।
এমন কি মিলিকে নিয়েগিয়ে অপূর্ব দের মামার বাড়িতে থেকে ও এসেছেন একরাত।
আমি ফোন টা কেটে দিলাম। দুই চোখে জল নেমে এল। বুকে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হচ্ছে।
খুব ভালোবাসতাম মিলিকে। কিন্তু ও আমার নয়।
ওর মন, প্রাণ,দেহ সব অপূর্বর জন্য। সেই রাতে মিলিকে অন্ততপক্ষে চল্লিশ বার নানান নাম্বার থেকে ফোন করলাম।
সারা রাত মদ খেলাম।
কেন? কেন? কেন? এরকম করলে?
পরের দিন সকালে যখন ঘুম থেকে উঠলাম তখন সকাল আটটা বাজে।
গোটা ঘর কেমন নুংড়া।
মদের বোতলটা এখন ও টেবিলের উপরে রাখা।
গতকাল কখন ঘুমিয়ে পরেছিলাম মনে নেই।
বাথরুমে ঢুকেছি হঠাৎ আমার ফোন টা বেঁজে উঠল।দেখলাম মিলির নাম্বার। হুমরি খেয়ে পরলাম ফোনটার উপর।
মিলি চেঁচিয়ে বল্ল "কি বেপার তোমার? অতবার ফোন করছ কেন?
আমি বল্লাম " কেন ফোন করছি বুঝতে পারছ না? তোমাকে আমার ভাল করে চেনা হয়ে গেছে।"
মিলি বল্ল " তোমাকে ও আমার ভালকরে চেনা হয়ে গেছে। তুমি আমার দিদিকে ফোন করে বিরক্ত করতে।
আর সেটা নিয়ে অনেক অশান্তি হয়েছিল।"
আমি বল্লাম "মিলি তুমি কিন্তু অনেক বর ভুল করছ। বিরিয়ানী আর পান্তা ভাতের পার্থক্য টা বোঝার চেষ্টা কর।
অপূর্ব তোমার যোগ্য না। "
মিলি কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল " ওর সাথে আমার সেরকম কিছু........"
তার পর জোর গলায় বল্ল "হ্যাঁ আমার ওকে ভাল লাগে।আমি ওকে ভালবাসি।"
(মনেমনে ভাবলাম হায়রে ভালোবাসা তোর।কি বুঝিস তুই ভালোবাসার )
মিলি বল্ল " তুমি যখন আমাকে ফাইনাল জিজ্ঞেসা করেছিলে আমি তখনই তোমাকে বলেছিলাম
আমি তোমাকে ভালবাসি না।"
আমি বল্লাম " তা হলে কি জিনিস গুলো নেওয়ার জন্যে নাটক করছিলে?"
ও বল্ল" তোমার জিনিস গুলো তুমি নিয়ে যেতে পারো। আমি এখন ও হাত দিনি।"
আমি বল্লাম" মিলি........."
মিলি হঠাৎ বল্ল"তুমি অনেক ভালো মেয়ে পাবে। তুমি আমার শরীর পেতে মন পেতে না কোনো দিন।"
আমি ধমক দিয়ে বল্লাম "ভদ্র ভাবে কথা বল মিলি। তুমি অনেক ছোট আমার থেকে। "