লকডাউন চতুর্থ পর্ব
লকডাউন চতুর্থ পর্ব


বেশ কয়েকদিন পর রাতে ভালো ঘুম হয়েছে । এক ঘুমে সকাল। আজ আবাসনে থমথমে পরিবেশ । লকডাউনের মধ্যে মৃত্যুর শীতল স্পর্শ জাগতিক সব বাঁধা অতিক্রম করে অসুস্থ আবাসিকার জীবনে পূর্ণচ্ছেদ টেনে দেবে কিনা কে জানে! বহুদিন মানুষটা থেকেও নেই। তবুও জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে বিস্তর ফারাক। বেলা বাড়ছে। রান্না –বান্না কাজকর্ম সবই চলছে। তার মধ্যেই মৃত্যুর খবর । আমাদের জীবন একটু থমকে দাঁড়ালো। ভদ্রমহিলার আত্মীয় পরিজন খবর পেয়েছেন। তাঁরা আসবেন। তবে লকডাউনের সময় এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়া খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাড়ির লোক এসে পৌঁছান। এর কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসেন ডাক্তারবাবু। ডেথ সার্টিফিকেট লিখে মৃত্যুকে নিশ্চিত করেন।
যে সব সংস্থা শববাহি গাড়ির পরিষেবা দেন ,তাদের অ্যাম্বুলেন্সের পরিষেবাও আছে। তাদের ফোন করেও শববাহি গাড়ির কোনোও ব্যবস্থা করা যাচ্ছিল না। আসলে লকডাউনে ড্রাইভার কাজে এসেছেন কম। অধিকাংশ ড্রাইভার অ্যাম্বুলেন্স চালাচ্ছেন। যাই হোক অনেক চেষ্টার পর গাড়ির ব্যবস্থা হল। এক অদ্ভুত শেষ যাত্রা । আবাসনের কমিটির সদস্যরা দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়ে আছেন। সবার মুখ মাস্কে ঢাকা । আত্মীয় পরিজনের মুখ মাস্কও গ্লাবসে ঢাকা। তাদের মধ্যে অক্ষেপ শোনা গেল শেষ যাত্রায় কোথাও ফুল পাওয়া গেল না।। কিছু কুচো ফুল আর চোখের জলে প্রিয়জনকে আত্মীয়রা বিদায় জানালো । শববাহি গাড়ি এগিয়ে চলল। আবাসনের ব্যালকনি থেকে আবাসিক ও আবাসিকারা সামাজিক দূরত্ব রেখে শেষ শ্রদ্ধাজ্ঞলি জানালেন। আবাসনের বহুদিনের সিকিউরিটি গার্ড সামন্তদা বললেন আজ থেকে আবাসনের একটা ফ্ল্যাট তালা বন্দী হয়ে গেল।