STORYMIRROR

NILAY CHATTERJEE

Abstract Others

3  

NILAY CHATTERJEE

Abstract Others

লাইন লাইন

লাইন লাইন

3 mins
5

লাইন


       -- জল নেবে গো জল ....!

         --জল !

কথাটা শুনেই রুনি দৌড়ে ঘর থেকে বাইরে গেলো ।

          -- কি জল ? কই দেখি ...।

          -- ও মা- অনেক রকম জল আছে আমার

                গাড়িতে । তুমি কোনটা নেবে ।

রুনি দরজা থেকে হাঁক পাড়লো । ....এদিকে এসো না...।

          -- লোকটা বললো যাই ....যাই ।

বিরাট বড়ো একটা গরুর গাড়িতে বিশাল বিশাল

ড্রামে করে জল নিয়ে এসেছে লোকটা । কোথায়

থাকে কে জানে ....। লোকটা কাছে আসতেই ওকে

জিজ্ঞাসা করলো রুনি , তুমি থাকো কোথায়?

         ---লোকটা উত্তর দিল , আমি কোথায় থাকি

              সেটা তোমার জানা দরকার না তোমার

                জল দরকার ?

         ---- রুনি বললো জল

          ---- তাহলে জিজ্ঞাসা করছো আমি কোথায়

                  থাকি ।

           ---- কেন জানতে নেই ?

             ---- জানতে নেই কেন , জানতেই পারো ।

                     আমি থাকি ঐ পাহাড় তলিতে ।

                    ওখানে ঝর্না আছে । আর আমাদের

                     বড় ইন্দারা আছে । ওর জল কখনও

                    শুকোয় না,এই ড্রাম টায় ঝর্নার জল ।

                  আর এইটা তে ইন্দারার জল । যেটা

             খুশি নাও ।

         ----- পাহাড় তলি ?

          ------হ্যা ।

            ------ সে তো অনেক দূর ।

            ---- ঐ জন্যই তো এতো দাম

             ---- ও তোমার জল দাম দিয়ে কিনতে হবে ?

             ---- তবে কি এমনি এমনি ? কতো গরম

                    বলতো । আমরা জল খেতে পাচ্ছি না। সেই জল বিক্রি করতে এসেছি ----- দাম নোব না ?

          ---- গরম তো অস্বাভাবিক ! তবে ঝর্নার জল -- তার স্বাদ আলাদা ! 

        --- কতো করে দাম শুনি ।

------এক লিটার বোতলে ঝর্নার জল

                 দাম একশো টাকা । আর ইন্দারার জল

                 নব্বই টাকা ।

       ....... কি বলছো ।

       ------ ঠিকই বলছি । এ জলের গুন আছে মা।

                 এ জল খেলে সমস্ত রোগ সেরে যাবে ।

কথা বলতে বলতে অনেকে জড়ো হয়ে গেলো ।

 এ বলে আমায় দু বোতল দাও । তো ও বলে আমায় তিন বোতল দাও । জল নিয়ে প্রায় কাড়াকাড়ি শুরু । রুনি পড়ল ফাপরে । কারণ ওর

মা তখন ঘরে নেই । মন্দিরে গেছে পুজো দিতে ।

এদিক ওদিক তাকাচ্ছে রুনি । এমন সময় ওর মা

কে দেখা গেলো আসছেন । রুনি হাত নেড়ে জানালো --তাড়াতাড়ি এসো মা । জলের তো খুব 

টান । কিন্তু দাম টা যে বড্ড বেশী ।

এদিকে সবাই জল নিয়ে ছুটছে । রুনি ও ঘর থেকে

দুটো দু লিটারের বোতল এনে দাঁড়িয়ে । ওর মা

আসতেই রুনি বললো , মা জল নেবো ?

ঠিক তখনই মা ওকে ঠেলা দিলেন -- কি বলছিস ?

জল কোথায়? বিছানায় শুয়ে শুয়ে জল ?

সত্যি এক ডিগ্রি এক ডিগ্রি করে তাপমাত্রা প্রতি

ব্ছর বেড়ে চলেছে । আর বর্ষাও ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে । শুধু বাড়ছে বজ্রপাত । জল মিশনের লাইন

ঘরে ঘরে । কিন্তু সুতোর মতো জল কখনও পড়ে

কখনও তাও পড়ে না । পুকুর ডোবা তো মাঘ মাসেই তলানিতে । যে টুকু আছে গরু বাছুর কে

দিতেই শেষ । জল জল করে সারা দিন মানুষের

চিন্তার শেষ নেই । তাই ঘুমের মধ্যেও স্বপ্ন দেখছিল

রুনি । মা ঠেলা দিতেই উঠে বসলো । চোখ রগড়ে

বললো, মা -- ভোর তো হয়েই গেছে । চাপা কলে লাইন টা দিয়ে দোব । জল এলেই তো কাড়াকাড়ি

আর ঠেলাঠেলি ......কাল তো মন্ডল পাড়ার বৌটা

মার খেলো । মা বললেন , বালতি নামিয়ে দিয়ে চলে

আসলে চলবে না । ওখানে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে ।

রুনি বললো -- হ্যা , তাই থাকবো ।

ঝটিতি বালতি নিয়ে কল তলায় আসতেই দেখতে

পেলো তখন একশো মতো লাইন পড়ে গেছে ।

রুনি বালতিটা লাইনে রেখে ঠায় দাড়িয়ে রইলে ।

কেউ চাপা কলের হাতলে চাবি দিয়ে রেখেছে ।

ছটা বেজে গেছে । এক্ষুণি চালু হবে কল । সবাই এক বালতি করে জল নেওয়ার পর আবার এক বালতি পেতে পারে । এই রকম রেশনিং চলছে।

কোনো রকম ঝগড়া ঝাটি নয় ।

...................................................................



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract