নির্মাণ
নির্মাণ
নির্মাণ
আমার পড়ার জন্য একটা আলাদা ঘর তৈরি
হবে । কথাটা শোনার পর থেকে আমার মনে
আনন্দ আর ধরে না । আমাদের গ্রামে সব বাড়িই মাটির । গরীব কৃষক শ্রেণীর মানুষের বাস ।
আমি তখন ষষ্ঠ শ্রেণী তে পড়ি । বাড়ি তৈরির কাজটা প্রথম থেকে দেখবো বলে এক সকাল পড়ার ফাঁকে ফাঁকে আমি ঘরামি মিস্ত্রী ভক্ত কাকার
পাশে পাশে থাকতাম । ঘরটার এরিয়া 12 ফূট বাই 12 ফূট । বেশ বর্গাকার বলা যায় ।
ভক্ত কাকা লোকজন নিয়ে এসে সীমানা বরাবর দু
ফুট বাই দু ফুট গর্ত খুঁড়লো । পাশেই একটা খোলা জায়গায় জঙ্গল এরিয়া থেকে শক্ত মাটি তাতে কল্লাচ মিশিয়ে জল ঢেলে বেশ ভালো করে পাইল
করে নিলে । তারপর ঐ মিশ্রণ সেই গর্তে ভরাট করে
দিলে । চড়া রোদ ছিল । ভেজা মাটি শুকোতে বেশী
দিন সময় লাগলো না ।
তারপর ঠিক যে ভাবে পাকা বাড়ি তৈরি করে ইটের পরে ইট সাজিয়ে -- সেই ভাবে একটা নির্দিষ্ট
মাপের মাটির পাইলিং চার পাঁচ দিন অন্তর অন্তর
বসিয়ে চললো । এই মাটির পাইলিং টাকে বলে 'ছে' । এই ভাবে এক ফুট এক ফুট করে দশ ফুট ওঠার পর যখন দেওয়াল তৈরি হয়ে গেলো তখন
এলো -- মদুন , ভাগটান আর প্যালা । তারপর এলো বাঁশের সারি । ভাগটানের খাঁজে খাঁজে সেট
করে পুরো কাঠামোটা যখন সম্পুর্ণ হয়ে গেলো তখন এলো ভিজে খড় । অন্তত দুই কাহন । বাঁশের
বাতা দিয়ে চেপে চেপে ভিজে খড় গুলো কে আবার
সরু বাতা দিয়ে বেঁধে চেপে বসানো হলো । তারপর
এলো জানালা , দরজা । তারপর মাটি আর পাথর
দিয়ে দুরমুশ করে মেঝে তৈরি হলো । একদিন ঘর
নির্মাণ সম্পূর্ণ হলো । খড়ের ঘর খুব আরামদায়ক ।
গরম কালে ঠান্ডা আর শীত কালে গরম । পুরো A .C ।
.....................................................
আকাশ বাণী কলকাতা কর্তৃক প্রচারিত
