বন্ধুত্ব
বন্ধুত্ব
ছেলে বেলার একটা গল্প । তখন সিক্স কি সেভেন এই রকম একটা ক্লাস হবে যতদূর মনে
পড়ছে । হাফ ইয়ার্লি পরীক্ষা । আমি বাংলা পরীক্ষার কথা বলছি । রচনা এসেছিল 'বর্ষাকাল' ।
যে যতটা পারলো লিখলো । আমিও কিছু লিখলাম । আমার এক সহপাটি নাম টা উল্লেখ করলাম না ।
কারণ সে অনেক দিন আগেই আমাদের ছেড়ে চলে
গেছে । সেও ভালোই লিখেছে - পরীক্ষার পরে বলেছিল । আমরা সবাই জানি হাফ ইয়ার্লির খাতা
দেখানো হয় । এবং ফেরত ও দেওয়া হয় । সে রেওয়াজ এখনও আছে । এবং থাকবে ।
তা পরীক্ষার কিছুদিন পরে খাতা দেখানোর পালা ।
স্যার নাম ডেকে ডেকে খাতা দিচ্ছেন । সবাই টেবিলের সামনে গিয়ে খাতা নিয়েও আসছে ।
আমিও খাতা নিয়ে এলাম । আমার ঐ বন্ধুটি
উস খুস করছে । সবাই খাতা পেয়ে গেল । ওর নাম
টা কেন আসছে না ? এই সাত পাঁচ ভাবতেই দেখা
গেলো আর একটি মাত্র খাতা পড়ে আছে । আর সেটাই ওর । নাম ডাকতেই ও উঠে গেল । এরপর
স্যার বললেন এখানে দাঁড়াও । ও দাঁড়ালো ।
তারপর ওকে রচনা টা পড়ে শোনাতে বললেন ।
ও পড়া শুরু করলো । যেমন ভাবে রচনা শুরু হয়
প্রথম টা ঠিকই লিখেছে ।
বর্ষাকাল ঋতুচক্রের দ্বিতীয় ঋতু । এই সময় আকাশ কালো মেঘে ঢাকা থাকে । আষাঢ় শ্রাবণ
দুই মাস বর্ষাকাল । এই সময় প্রচুর বৃষ্টি হয় ।
পথ ঘাট জলে ভর্তি হয়ে যায় । পথে কাদা হয় ।
চাষিরা এই সময় মাঠে ব্যস্ত থাকে । জমি চাষ করে । ধানের বীজ রোপণ করে । ....................
শেষে লিখেছে , এই সময় কবি দের মন উতলা হয়ে
ওঠে । তাই কবিরা লিখেছেন --' আষাঢ় শ্রাবণ মানে
না কো মন । ঝরো ঝরো ঝরো ঝরো ঝরেছে ..
তোমাকে আমার মনে পড়েছে ....'
আর সবাই হো হো করে হেসে উঠলো ।হাসি আর থমেনা কিছুতেই।
স্যার তখন ক্লাস থামাতে ব্যস্ত ।
বন্ধুটি আমার খুব প্রিয় ছিল । আষাঢ়ের এই বৃষ্টির
দিনে তার কথাটা হঠাৎ মনে পড়ে গেলো ।
তাই দু কলম লিখলাম । মন টা একটু বিহ্বল
হয়ে উঠেছে ।
বন্ধুরে , তুই যেখানেই থাকিস তোর প্রতি বন্ধুত্ব
আমার এখনও অটুট আছে । ---------!
................................................................
